ঢাকা-সিলেট যানজট-ভোগান্তি শেষ হবে কবে?

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেন প্রকল্পের উন্নীতকরণের কাজ চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। যার কারণে সিলেট বিভাগের চারটি জেলার মানুষ তীব্র বেশ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর, সরাইল বিশ্বরোড এবং শাহবাজপুর এলাকায় ভয়াবহ যানজট তৈরি হয়েছে প্রতিদিন। প্রায় ৩০ কিলোমিটার বেহাল সড়কে খানাখন্দ থাকায় এই পথ পাড়ি দিতে লেগে যাচ্ছে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা। মহাসড়কের নির্মাণ কাজের ধীরগতি ও ট্রাফিক ব্যবস্থার দুর্বলতায় ঢাকা-সিলেট সড়কপথে যাত্রী দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। অপর দিকে কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে নির্মাণাধীন রাস্তায় জনদুর্ভোগ আরো বেড়েছে কয়েক ভাগ। ফলে ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকছে যানবাহন। এ কারণে ঢাকা থেকে সিলেটে আসতে এখন ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা সময় লাগছে। রাত ১১টায় মহাখালী থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাস সিলেট পৌঁছতে সময় লাগছে ১৮ থেকে ১৫ ঘন্টা। আর সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে আসা বাসের সিলেট আসতে সময় লাগছে ১৮ থেকে ২০ঘন্টা পর্যন্ত। সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ থেকে ঢাকায় সড়ক পথে যাতায়াত এখন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অপর দিকে ট্রেনের টিকিট সংকটে সড়কপথ ব্যবহারকারীদের জন্য মহাসড়কটি এখন 'মৃত্যুফাঁদে' পরিণত হয়েছে। যাত্রীরা বলছেন, আগে যে পথ পাড়ি দিতে চার-পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগতো, এখন লাগছে ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা লাগছে। বিগত "কয়েক মাস যাবত ঢাকা-মৌলভীবাজার, সিলেট শহরে আসা-যাওয়ার সময় চার-পাঁচ ঘণ্টা লাগতো, এখন ১৮-২০ ঘণ্টা লাগে।" চালকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন সড়কের কাজ না হওয়ায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, যা চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী। বিশেষ করে বিশ্বরোড থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত কোনো কোনো দিন ১৮-২০ ঘণ্টা, এমনকি ২৪ ঘণ্টাও সময় লেগে যাচ্ছে। তারা বলছেন, পাঁচ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগছে। এক বাসচালক বলেন, "রাস্তার এমন দশা! আট-নয় ঘণ্টা শুধু জ্যামে লাগে। যাত্রীর কষ্ট, আমাদের গাড়ির কষ্ট সবচেয়ে বেশি হচ্ছে।" রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে শুধু যাত্রীরাই ভোগেন না, পরিবহন খাতও মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গর্তে পড়ার ফলে গাড়ির যন্ত্রাংশ যেমন সাসপেনশন, পেছনের বডি ও সাইডের মাডগার্ড ভেঙে যাচ্ছে। এতে পরিবহন সংস্থার খরচ বাড়ছে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়েছে। পরিবহন সংস্থার সংশ্লিষ্টরা জানান, যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ায় গাড়ির আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এ নিয়ে যেনো ভাবার বা দেখার কেউ নেই?
প্রশাসন বলছে, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ কাজের হবিগঞ্জের বাহুবল অংশে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এদিকে ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে মহাসড় এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে সিলেট বিভাগের মানুষের কাছে। বিশেষ করেই হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে ভৈরব ব্রিজ পর্যন্ত অংশে দীর্ঘ যানঝট এখন যাত্রীদের গলার কাঁঠা হয়ে দাড়িয়েছে। আগে যে পথ চার-পাঁচ ঘণ্টায় পাড়ি দেওয়া যেত যানজটের কারণে এখন সেখানে লাগছে প্রায় ২৪ ঘণ্টা। সাথে আছে জন ভোগান্তি। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। সঠিক সময়ে পণ্য না পৌঁছানোয় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। এরমধ্যে বৃষ্টি হলে প্রকট আকার ধারণ করে যানজট। সড়কের খানাখন্দে পড়ে নষ্ট হচ্ছে যানবাহন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ‘নরক’ যন্ত্রণায় ভোগেন যানবাহনের পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। যাত্রীরা ক্ষোভের সাথে বলেন, এভাবে আর চলবে কতকাল?
সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, ভারত ও বাংলাদেশের আন্তঃবাণিজ্য গতিশীল করার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৫ সালে একনেকে এই প্রকল্প অনুমোদন পায়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। পরে ২০১৭ সালে কাজটি শুরু করে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। তিনটি প্যাকেজে (আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের খাটিহাতা মোড় পর্যন্ত প্যাকেজ-১, খাটিহাতা মোড় থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক তন্তর পর্যন্ত প্যাকেজ-২ এবং তন্তর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত প্যাকেজ-৩) ভাগ করে এই চার লেন মহাসড়কের কাজ শুরু করা হয়। তবে প্যাকেজ-১ ও প্যাকেজ-২ এর কাজ প্রকল্প চালুর পরপর শুরু করা গেলেও জমি অধিগ্রহণসহ নানান জটিলতায় প্যাকেজ-৩ এর কাজ এগিয়ে নেওয়া যায়নি। এরমধ্যে অন্তর্র্বতী সরকার প্যাকেজ-৩ এর কাজ ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের বেড়তলা থেকে খাঁটিহাতা মোড় পর্যন্ত পরিদর্শনে দেখা যায়, ছোটবড় অর্ধশতাধিক গর্ত। এসব গর্তের খানাখন্দ ভরাটের কাজ করছেন শ্রমিকরা। খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড়ে খানাখন্দের রাস্তা মেশিন দিয়ে উপড়ে ফেলা হচ্ছে। পরে রোলার করে সমান করা হচ্ছে। এর ওপর ইট বিছানো হচ্ছে। খাঁটিহাতা বিশ্বরোড গোল চত্বর অংশে ১২ মিটার প্রস্থ ও ১৮৫ মিটার দৈর্ঘ্য, আর গোল চত্বর থেকে সিলেটমুখী সরাইল কুট্টাপাড়া খেলার মাঠ পর্যন্ত ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থে তিন স্তরে ইট ও বালু বিছানো হচ্ছে। বৃষ্টিতে খানাখন্দে পানি জমে মহাসড়ক বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। লেগে যায় সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট। গাড়ি চলে ধীরগতিতে।
তবে যানবাহন চালকরা বলেন, সড়ক ও সেতুু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এই সড়ক পরিদর্শনে আসতে পারেন, বলে শোনা যাচ্ছে। তাই দ্রুত জোড়া তালি দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে। কিন্তু এগুলো টিকবে না কারণ এই রাস্তায় ইট বালু দিয়ে সংস্কার কোন টেকসই সমাধান নয়। শিল্পপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই মহাসড়ক দিয়ে পণ্য পরিবহনে ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহনগুলো। আয় থেকে ব্যয় বাড়ছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। সঠিক সময়ে মালামাল কারখানায় না পৌঁছানোয় ব্যাহত হচ্ছে কলকারখানার উৎপাদন। বিশেষ করে এই মহাসড়ক দিয়ে হবিগঞ্জে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়ার শিল্পপ্রতিষ্ঠান গুলোর মালামাল পরিবহন করা হয়। পাঁচ ঘণ্টার পথে যানজট পাড়ি দিতে সময় লাগছে ২৪ ঘণ্টার বেশি। ফলে গাড়িতে থাকা কাঁচামাল পচে নষ্ট হচ্ছে। বাতিল হচ্ছে পণ্য রপ্তানির শিপমেন্ট। এ নিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন শিল্পপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দীর্ঘ যানজট ও বেহাল অবস্থার কারণে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে শিল্প প্রতিষ্টান গুলো।’ হবিগঞ্জ প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের চিফ প্ল্যান্ট অফিসার দীপক কুমার দেব বলেন, ‘ঢাকা থেকে হবিগঞ্জে পণ্য পরিবহন করা যেত চার-পাঁচ ঘণ্টায়। কিন্তু মহাসড়কের বেহাল অবস্থা ও যানজটের কারণে এখন লাগছে ১০-১২ ঘণ্টা। আমরা যেহেতু পণ্য রপ্তানি করি, তা অনেক সময় পিছিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরে সঠিক সময়ে না পৌঁছানোর কারণে। এতে পণ্য পরিবহনে আমাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমরা পচনশীল পণ্য উৎপাদন করি। এক্ষেত্রে কিছু পণ্যের কাঁচামাল ৬-৭ ঘণ্টা পর ফ্রিজিং করতে হয়। অনেক সময় দেখা যায়, এসব পণ্য পরিবহনে রাস্তায়ই ১২-১৩ ঘণ্টা লেগে যায়, ফলে এগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সড়কে খানাখন্দের কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। পণ্য পরিবহনেও বেড়েছে অনেক খরচ।’ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এ সমস্যার কারণে বেকায়দায় পড়েছে অন্যান্য যানবাহনসহ ব্যক্তিগত গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স। যেতে পারছে না সঠিক সময়ে। হাসপাতালে সময় মতো না পৌঁছাতে পেরে সড়কে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর নিরাপত্তা ঝুঁকির অজুহাতে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের কর্মকর্তারা কাজ ফেলে দেশে ফিরে যান। ফলে অসমাপ্ত কাজে মহাসড়কে দেখা দেয় খানাখন্দ। বাড়ে দুর্ভোগ। চলে যাওয়ার তিন মাস পর ভারতীয় ঠিকাদারি কোম্পানির ৭০-৭৫ জন শ্রমিক বাংলাদেশে ফিরে এসে আবার কাজ শুরু করেন। কিন্তু কাজ শুরু করলেও গতি তেমন পায়নি, চলছে মন্থর গতিতে। আশুগঞ্জ টু আখাউড়া স্থলবন্দর চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, আশুগঞ্জ থেকে খাঁটিহাতা মোড় পর্যন্ত মহাসড়কে আমাদের কিছুটা জটিলতা ছিল। মাঝে কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। পরে ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে। ফলে বরাদ্দ কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এখন সমস্যা সমাধান হয়েছে। দু-তিনদিনের মধ্যেই প্রকল্পের স্থায়ী কাজ শুরু হবে। আমাদের কাজ করতে কোনো বাধা নেই। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি চোখে পড়বে আশা করছি। তিনি বলেন, ভারতীয় অনেক শ্রমিক নিজ দেশে চলে গেছেন। তারা আগে প্রায় তিনশ জনের মতো ছিলেন। তাদের একটি অংশ ফিরে এসে এরইমধ্যে কাজে যোগদান করেছে। আশুগঞ্জ থেকে সরাইল অংশে পুরোদমে কাজ শুরু হলে আরও শ্রমিক এসে কাজে যোগ দেবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট রুটে বিমানের টিকিট মূল্য অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় টিকিট মূল্য বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন এয়ারলাইন্স কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। ঢাকা-সিলেট আকাশ পথে বাংলাদেশ বিমান ছাড়াও ইউএস বাংলা, নভোএয়ার, এয়ার এস্ট্রো ফ্লাইট পরিচালনা করে। কিন্তু প্রতিটি ফ্লাইটের টিকিট মূল্য এখন বেশি। এ নিয়ে বিরক্ত সিলেটের যাত্রীগণ। সড়ক পথে যানজট বেড়ে যাওয়ায় ঢাকা-সিলেট রুটের ফ্লাইটে এখন যাত্রী চাপ অনেক বেড়েছে। ফলে শেষ সময়ে এসে যারা টিকিট কিনেন তারা উচ্চমূল্যে টিকিট কিনেন। তবে- আগে টিকিট কিনলে সেই মূল্য অনেক বেশি কমে আসবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এটি কেবল সিলেটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। গোটা বিশ্বেই মৌসুমে টিকিটের দাম বেড়ে যায়। তবে কয়েকদিন আগে টিকিট ক্রয় করে রাখলে যাত্রীদের শেষ সময়ে এসে বেশি অর্থ দিয়ে টিকিট কেনার ভোগান্তি কমে আসবে।
এদিকে সড়ক পথে যানজটের কারণে যাত্রী চাপ বেড়ে যাওয়ায় সিলেটের ট্রেনের টিকিট এখন সোনার হরিণ। অনলাইনে টিকিট বিক্রি হয়ে থাকে। যাত্রীরা অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ে অনলাইলে টিকিট মিলেনি। ওই সময়ে সার্ভার ডাউন থাকে। এতে করে টিকিট কেনা সম্ভব হয় না। কাউন্টারে গেলেও টিকিট মিলে না। তবে ট্রেনের কালোবাজারিরা আগের মতোই সক্রিয় রয়েছে। তাদের কাছে দ্বিগুণ, তিনগুণ দামে টিকিট মিলে। ট্রেনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কালোবাজারিদের সংযোগ রয়েছে। বেশির ভাগ টিকিটই কালোবাজারিরা অনলাইনে বুকিং করে রাখে। পরে সেগুলো বেশি দামে বিক্রি করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হানিফ মিয়া বলেন, ‘এই মহাসড়কের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। গত দু-তিন মাস ধরে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। ঢাকা থেকে যদি বাস একবার ছেড়ে আসে, খাঁটিহাতা মোড় পার হতে হতে দিন শেষ। ফিরে আর যেতে পারছে না। এছাড়া বাসের যন্ত্রাংশ ভেঙে যাচ্ছে খানাখন্দে পড়ে। পরিবহন ব্যবসায়ীরা অধৈর্য হয়ে গেছেন, আর ক্ষতি সামলাতে পারছেন না।’ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ট্রাক মিনিট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মেরাজ ইসলাম বলেন, ‘ট্রাকের ব্যবসা একেবারে শেষ বললেই চলে। এই ভাঙা রাস্তার কারণে ট্রাকের এক্সেল ভেঙে পড়ে থাকছে। যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। ১০ হাজার টাকায় কোনো জায়গায় গেলে, সড়কেই ট্রাকের ক্ষতি হচ্ছে ৩০ হাজার টাকার। বিশেষ করে এই মহাসড়ক দিয়ে সিলেট থেকে পাথর, বালু ও পণ্য পরিবহন করতে গিয়ে যেখানে দিনে আসা-যাওয়া করা যেত, তা দু-তিন দিন লেগে যাচ্ছে। ফলে বাড়ছে পরিবহন ব্যয়ও। ট্রাক মালিকরাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।’
সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিম বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট নিরসনে আমরা পরিবহন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু কার্যত কোন ফলাফল মিলেনি। শীঘ্রই আমরা আবারো ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করবো।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মাওলানা লোকমান আহমদ বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। একইতো ৬ লেনের কাজে ধীরগতি এর উপর বৃষ্টির কারণে নির্মাণাধীন সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে রাস্তা সংক্ষুচিত হচ্ছে। ট্রাফিকিং ব্যবস্থা জোরদার না থাকায় সড়কে শৃঙ্খলা নেই। সিলেটের কদমতলী টার্মিনাল থেকে শুরু করে চালক ও পরিবহন শ্রমিকরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় লোক নিয়োগের মাধ্যমে ট্রাফিক ব্যবস্থা সচল রাখছে। এভাবে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়। মহাসড়কের ৬ লেনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই ভোগান্তি কমার সম্ভাবনা নেই। তবে ট্রাফিকিং সিস্টেম ভালো থাকলে দুর্ভোগ কিছুটা কমবে।
Aminur / Aminur

রায়গঞ্জে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালিত

ঢাকা-সিলেট যানজট-ভোগান্তি শেষ হবে কবে?

চাঁপাইনবাবগঞ্জে নয় মাসে ১২৮টি ভ্রাম্যমাণ অভিযান: জরিমানা আদায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা

ফুলছড়িতে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস উদযাপন

টাঙ্গাইলে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে বিভাগীয় ক্যাডেট এসআইদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত

রাজশাহীতে ১২ অক্টোবর থেকে টায়ফয়েড টিকাদান শুরু

সাংবাদিক মাসুদ রেজা হাই’ র মৃত্যুতে ‘দৈনিক সকালের সময়’ সম্পাদকের শোক

জামাই-শাশুড়ির অবৈধ সম্পর্কে কপাল পুড়লো মেয়ের

তানোরে দি পদ্মা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু, থানায় অভিযোগ

বাসের ধাক্কায় হেফাজত নেতার মৃত্যু, চট্টগ্রামে মহাসড়ক অবরোধ

কুয়াকাটায় পরিচ্ছন্নতা ও পর্যটকবান্ধব সেবা নিশ্চিতকরণে রেস্তোরাঁ কর্মীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

রামুর বাঁকখালী নদীতে ভাসলো ঐতিহ্যবাহী কল্পজাহাজ
