শীতের আগমনে ব্যস্ততা বেড়েছে বারহাট্টার গাছিদের
ঋতুর বৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশে প্রকৃতির রূপ প্রতিনিয়তই বদলায়। ভোরের পাতায় শিশির বিন্দু, দিনের মিষ্টি রোদ আর হালকা কুয়াশা জানিয়ে দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। আর শীত মানেই খেজুর রসের মৌসুম। শীতের আমেজ শুরু হতেই নেত্রকোনার বারহাট্টায় খেজুর গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছ প্রস্তুত করা ও রস সংগ্রহে।
অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ থেকেই উপজেলা সদর ও প্রত্যন্ত এলাকার গাছিরা পুরোদমে খেজুরের গাছ পরিচর্যা ও রস সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সরেজমিন দেখা গেছে—ঠুঙ্গি, বাইলধারা, দড়ি ও দা হাতে গাছিরা বিকেলবেলা ছুটছেন গাছের দিকে। খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করে দুই সপ্তাহ বিশ্রাম দিয়ে তারপর শুরু হচ্ছে রস আহরণ।
গাছিরা সকালের সময়কে জানান—কার্তিকের শেষদিকে গাছ ছাঁটাই শেষ করে এখন হাঁড়ি বেঁধে রস সংগ্রহ করছেন। পুরোপুরি শীত না নামায় বর্তমানে রস কম পাওয়া যাচ্ছে, তবে শীত বাড়লেই রসের পরিমাণও বাড়বে। গাছির সংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক গাছ রস আহরণ ছাড়াই দাঁড়িয়ে থাকে। নতুন প্রজন্ম কৃষিকাজে আগ্রহী না হওয়ায় গাছির সংখ্যা আরও কমছে। তারপরও চার-পাঁচ মাস খেজুর রস বিক্রির আয় দিয়ে চলে তাদের সংসার।
তারা আরও জানান, শীত মৌসুমের এই সময়ে কাজের চাপে দম ফেলারও সময় থাকে না। উপজেলায় খেজুর রসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি গ্লাস রস ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খেজুর গাছের বুক চিরে পাইপ লাগিয়ে মাটির হাঁড়িতে রস সংগ্রহ করা হয় সকাল ও সন্ধ্যায়।
ভাঁটি অঞ্চল ধর্মপাশা থেকে গাছ পরিচর্যা করতে আসা গাছি হোসেন আলী বলেন, প্রতি বছর অগ্রহায়ণের শুরুতে ৪০–৫০টি গাছ ভাড়া নিয়ে রস সংগ্রহ করেন। রাতে বাদুড় ও পোকামাকড় যাতে হাঁড়িতে ঢুকতে না পারে—সে জন্য জাল পেঁচিয়ে রাখা হয়। প্রতিদিন গড়ে ২০–৩০ লিটার রস বিক্রি করতে পারেন তিনি। এবারও ভালো উপার্জনের আশা করছেন।
রায়পুর, সাহতা ও বাউসী এলাকার গাছিরাও জানালেন—আগের মতো বড় আকারের খেজুর গাছ আর নেই। শহরমুখী নতুন প্রজন্ম গাছ পরিচর্যার কাজ শিখতে চায় না, ফলে নিজেদের খাওয়ার মতো রসও পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। একসময় এই রস বিক্রি করে অনেক পরিবারের খরচ চলত।
গোপালপুর বাজারে রস খেতে আসা কলেজ ছাত্ররা জানান—খেজুর রসের স্বাদ শীতের সকালে আলাদা রকম। প্রতিদিনই এক গ্লাস করে খাবার পরিকল্পনা করছেন তারা। আবার ভোরে হাঁটতে বের হওয়া ক্রেতারা বলেন—টাটকা খেজুর রসের ঘ্রাণ শহরে বিরল; তাই নিজেদের জন্য যেমন খান, তেমনি বোতলভরে বাসায়ও নিয়ে যান।
এলাকার সচেতন মহল জানায়—একসময় বারহাট্টার বিভিন্ন অঞ্চলে অসংখ্য খেজুর গাছ ছিল। কিন্তু পরিবেশবান্ধব গাছগুলো ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের কারণে ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে। খেজুর গাছের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব রক্ষায় জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন।
স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রসঙ্গে ডা. আবু রায়হান বলেন—খেজুর রস সুস্বাদু হলেও ‘নিপাহ ভাইরাস’ ছড়ানোর বড় উৎস কাঁচা রস। অন্তত ৭০–৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটিয়ে খেলে ঝুঁকি অনেক কমে যায়। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে খেজুর ও তালের রস ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বারহাট্টার মাঠে-ঘাটে শীতের হাওয়া বইতে শুরু করলেই প্রকৃতি জানান দেয়—খেজুর রসের মৌসুম এসে গেছে, আর তার সাথে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন স্থানীয় গাছিরা।
এমএসএম / এমএসএম
নড়াইলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে সড়ক অবরোধ
জুড়ীতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্মৃতি কোয়াব ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
হাদি’র হত্যার প্রতিবাদে বেনাপোলে বিক্ষোভ মিছিল
শেরপুরে অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান: পাঁচ ভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ, জরিমানা ১৭ লাখ টাকা
চাঁদপুরে মাদকবিরোধী ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু
রাঙ্গামাটিতে বিএনপি প্রার্থী দীপেন দেওয়ানের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
ওসমান হাদির মৃত্যুতে গোবিপ্রবি উপাচার্যের শোক
রাণীশংকৈলে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ওসির মতবিনিময়
টিকটক ভিডিওকে কেন্দ্র করে গৃহবধূকে হত্যা, স্বামী আটক
হান্নান মাসউদের ৩ সমর্থককে কুপিয়ে জখম, মামলা দায়ের
সাতগাঁও হাইওয়ে থানা বাৎসরিক পরিদর্শন করেন সিলেট রিজিয়ন পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম
পটুয়াখালীর গলাচিপায় ভুয়া চিকিৎসক আটক