ঢাকা বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: সম্ভাবনার বাংলাদেশ ও প্রতারণার অদৃশ্য ঝুঁকি


ডেস্ক রিপোর্ট  photo ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১৭-১২-২০২৫ বিকাল ৫:২০

ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI এখন অন্যতম প্রধান প্রযুক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যখাত, ব্যাংকিং, কৃষি এবং শিল্পখাতে AI ব্যবহার শুরু করেছে। তবে প্রযুক্তির অপব্যবহারও নতুন ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, সঠিক নিয়ন্ত্রণ ও জনসচেতনতা না থাকলে AI-এর সম্ভাবনা বিপদে পরিণত হতে পারে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মে AI ব্যবহার করছে। শিক্ষার্থীর দুর্বলতা শনাক্ত করে শিক্ষণ পদ্ধতি পার্সোনালাইজ করা হচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় মূল্যায়ন ব্যবস্থা শিক্ষকদের সময় বাঁচাচ্ছে এবং শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে। AI ব্যবহার করে শিক্ষার্থীর শেখার ফলাফল বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎ শিক্ষার পরিকল্পনাও তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, AI-ভিত্তিক শিক্ষা তরুণ সমাজকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার জন্য আরও দক্ষ করে তুলবে।
বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো AI ব্যবহার করে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান ও এমআরআই বিশ্লেষণ করছে। গ্রামীণ মানুষের জন্য টেলিমেডিসিন এবং স্বাস্থ্য চ্যাটবট কার্যকরভাবে ব্যবহার হচ্ছে। ভবিষ্যতে AI-নির্ভর রোবটিক সার্জারি, ব্যক্তিভিত্তিক চিকিৎসা এবং রোগ শনাক্তকরণে আরও উন্নতি আশা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা খাতে AI ব্যবহার রোগীর জীবন রক্ষা ও চিকিৎসার মান উন্নত করছে।
কৃষি খাতে AI আবহাওয়া পূর্বাভাস, মাটির গুণমান বিশ্লেষণ, ফসলের রোগ শনাক্তকরণ এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করছে। শিল্পখাতে অটোমেশন ও AI ব্যবহার উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, AI কৃষিখাতে আরও ব্যবহৃত হলে খাদ্য নিরাপত্তা শক্তিশালী হবে এবং কৃষকদের আয় বাড়বে।
ব্যাংক ও মোবাইল ফিনটেক প্রতিষ্ঠানগুলো AI ব্যবহার করে প্রতারণা শনাক্তকরণ, ঋণ ঝুঁকি বিশ্লেষণ এবং গ্রাহক সাপোর্ট উন্নত করছে। চ্যাটবটের মাধ্যমে গ্রাহকরা ২৪ ঘণ্টা সেবা পাচ্ছেন। এতে গ্রাহকের সুবিধা যেমন বেড়েছে, তেমনি আর্থিক লেনদেনের নিরাপত্তাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্মার্ট বাংলাদেশ প্রকল্পে AI ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, নাগরিক সেবা ডিজিটালাইজেশন, নিরাপত্তা নজরদারি এবং নাগরিক অভিযোগ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে AI-নির্ভর স্মার্ট সিটি নাগরিক জীবনকে সহজ করবে, প্রশাসনিক খরচ কমাবে এবং সেবা প্রদান আরও দক্ষ হবে।
AI-এর অপব্যবহার দেশের ডিজিটাল পরিমণ্ডলে নতুন ধরনের প্রতারণা বাড়াচ্ছে। ডিপফেক ভিডিও, নকল ভয়েস কল, ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন, লটারি বার্তা এবং নকল আর্থিক লিংকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে গ্রামীণ ও বয়স্ক জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
প্রতারণা থেকে বাঁচার জন্য মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। যাচাই ছাড়া তথ্য বিশ্বাস করা উচিত নয়, অচেনা লিংকে ক্লিক করা যাবে না, OTP, পাসওয়ার্ড এবং NID কারও সঙ্গে শেয়ার করা উচিত নয়, দুই ধাপের নিরাপত্তা চালু রাখা আবশ্যক। সন্দেহজনক কনটেন্ট রিপোর্ট করা এবং পরিবার ও সমাজকে সচেতন করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, AI-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে। তবে শক্তিশালী আইন, তথ্য সুরক্ষা নীতি ও নৈতিক নির্দেশনার সঙ্গে AI ব্যবহারের মাধ্যমে তার সুফল নিশ্চিত করা সম্ভব। শিক্ষাব্যবস্থায় AI-সচেতনতা অন্তর্ভুক্ত করা, জনগণকে প্রযুক্তি সচেতন করা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।
AI বাংলাদেশের উন্নয়নের শক্তিশালী হাতিয়ার। তবে এর অপব্যবহার রোধে সতর্কতা, আইন ও নৈতিক দায়িত্বের সমন্বয় অপরিহার্য। সচেতন ব্যবহার ও শক্তিশালী নীতিমালার মাধ্যমে AI হতে পারে দেশের উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। অন্যথায়, এই সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিই ভবিষ্যতে বড় ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
এই প্রযুক্তি কেবল প্রযুক্তি নয়, বরং দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক জীবনকে পুনর্গঠনের সম্ভাবনাময় হাতিয়ার। সচেতনতা, নিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্বশীল ব্যবহারের মাধ্যমে AI-এর সুফল সর্বাধিক করা সম্ভব।

 

এমএসএম / এমএসএম

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: সম্ভাবনার বাংলাদেশ ও প্রতারণার অদৃশ্য ঝুঁকি

ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ হচ্ছে গুগলের ‘ডার্ক ওয়েব রিপোর্ট’ ফিচার

ফেসবুকে আসছে ইনস্টাগ্রামের ফিচার

বিশ্বের সবচেয়ে স্লিম ফাইভজি ফোন এখন বাংলাদেশে

বাংলাদেশে আইফোন ১৭ কেনার আগে যা আপনাকে জানতেই হবে

স্ক্রিন মিরর যেভাবে ঝুঁকি তৈরি করছে

গুগল ক্রোম বিক্রি করতে হবে না!

সবচেয়ে বড় ডিসপ্লের স্মার্টফোন!

অ্যাপ ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট করবেন যেভাবে

মঙ্গলের হিমবাহের ৮০ শতাংশই বিশুদ্ধ পানির বরফ: গবেষণা

জিমেইল ব্যবহারকারীদের জন্য জরুরি সতর্কবার্তা

হোয়াটসঅ্যাপের নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী বিটচ্যাট, চলবে ইন্টারনেট ছাড়াই

বাইকের ব্যাটারির যত্ন ও চার্জ ধরে রাখবেন যেভাবে