মান্দায় সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় দলিল লেখক সমিতির নেতারা কারাগারে
নওগাঁর মান্দায় প্রসাদপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে সাংবাদিক নির্যাতনের মামলায় এজাহারভুক্ত চার আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রোবাবার (১৩ জুন) বিকেলে ২নং আমলী আদালত নওগাঁর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার বসাক এ নির্দেশ দেন।
আসামীরা হলেন- প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এরশাদ আলী (৫০), সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার (৪৫), সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন রানা (৩০) ও খাদেমুল ইসলাম (৫৫)। আসামীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ এবং রাষ্ট্রপক্ষের ছিলেন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মামুনুর রশীদ। পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৯ আগস্ট।
গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের দাওইল গ্রামের তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতার দলিল লেখক সমিতির সদস্য মিজানুর রহমান নামে একজনকে আটক করে পুলিশ রোববার দুপুরে জেল হাজতে পাঠায়। বর্তমানে পাঁচ আসামি রয়েছে জেলহাজতে।
উল্লেখ্য, জেলার মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতি সাধারণ মানুষদের সাথে প্রতারণা করে দীর্ঘদিন থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় করে আসছে। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে হয়রানির শিকার ও জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ করে দেন সমিতির নেতারা। গত ৮ জুন দৈনিক যুগান্তর ও জাগোনিউজের জেলা প্রতিনিধি আব্বাস আলীর বড় ভাই আসাদ আলী তার পারিবারিক জমি রেজিস্ট্রি করতে প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতিতে যান। সেখানে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের বাবুল আক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে একটি দলিল ১২ লাখ টাকা মূল্যে করতে চান, যেখানে ১০ দশমিক ৫ টাকা হারে ১২ লাখ টাকার দলিলে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানানো হয়। যেখানে সরকারি মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত চাঁদা দাবি করা হয়।
বিষয়টি আসাদ আলী তার ছোট ভাই সাংবাদিক আব্বাস আলীকে জানালে তিনি সেখানে এসে সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তারের সঙ্গে দেখা করে খরচ কিছু কম করার অনুরোধ জানান। কোনো কম হবে না বলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন। দলিল রেজিস্ট্রিতে সরকারি খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা আব্বাস আলীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারমুখী আচরণ করে দলিল লেখক সমিতি চত্বর থেকে বের করে দেন। পরে তিনি বিষয়টি সাব-রেজিস্ট্রারের সঙ্গে আলোচনা করতে তার এজলাসকক্ষে যান। এ সময় দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন রানার নেতৃত্বে ১০-১২ জন এজলাসকক্ষ থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে বারান্দায় শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল-ঘুষি মেরে আহত করে কাছে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়, যার মধ্য জমি রেজিস্ট্রি বাবদ নগদ তিন লক্ষ টাকা, ভিডিও ক্যামেরা ও একটি ল্যাপটপ ছিল। পরে কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্বাস আলী বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এমএসএম / জামান