ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫

বগুড়ার শেরপুরে জীবনযুদ্ধে জয়ী একজন রেশমার গল্প


শেরপুর প্রতিনিধি   photo শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২২-১-২০২২ দুপুর ৪:৫২

জীবন মানেই যুদ্ধ। আর তাই তো একে বলা হয় জীবনযুদ্ধ। প্রত্যেকের জীবনেই বিভিন্ন রূপে আসে এই যুদ্ধ। মূলত মানবজীবনের প্রতিটি স্তরেই টিকে থাকার জন্য সর্বক্ষণ চলে এক সংগ্রাম অর্থাৎ যুদ্ধ। এই সংগ্রাম কখনো ভালোবাসা জয় করতে, কখনো অর্থসম্পদ জয় করতে, কখনো সমাজে সম্মান জয় করতে, কখনো কর্মক্ষেত্রে অথবা রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে, আবার কখনোবা অসুস্থতার সঙ্গে যুদ্ধ করে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন ফিরে পেতে।

এসব যুদ্ধে কেউ কেউ জয়ী হয়, আবার কেউবা হাল ছেড়ে দিয়ে পরাজয় স্বীকার করে নেয়। মানুষ যেদিন প্রথম এই পৃথিবীতে আসে, সেদিন থেকেই শুরু হয়ে যায় তার জীবনযুদ্ধ। যেকোনো প্রাণীর চেয়ে মানবশিশু সবচেয়ে অসহায় হয়ে এই পৃথিবীতে আসে। আর তাই সে তার প্রয়োজনের কথা, অর্থাৎ যখনই তার খিদে পায় অথবা অন্য কোনো অসুবিধা হয়, তখন সে শুধু কান্নার মধেই তা প্রকাশ করে। এভাবেই সে যুদ্ধ করে কেড়ে নেয় তার বেঁচে থাকার অধিকার। তবে আজ বলছি একজন নারীর জীবনযুদ্ধে জয়ের গল্প।

বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ  ইউনিয়নের বোংগা গ্রামের এমনি জীবন যুদ্ধে জয়ী এক নারী সুরাইয়া ফারহানা রেশমা। মা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী হুসনেয়ারা বেগম। কেঁচো নাড়াচারা করেই যিনি স্বাবলম্বী হওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। পাশাপাশি এখন কৃষিকাজ করেও সফল হয়েছেন তিনি। সুপাড়ি, পেপে ও সবজির আবাদ ছাড়াও শুধু কেঁচো কম্পোস্ট থেকেই প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করছেন তিনি।     

রেশমার সাথে কথা বলে জানা যায় তার সংগ্রামী জীবনের কথা। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা রেশমা। বাবা মায়ের মধ্যে সম্পর্কটাও ভাল ছিল না। রেশমার যখন ২ মাস বয়স তখন তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ৫ বছর বয়সী রেশমাকে নিয়ে তার মা বাবার বাড়ি চলে আসেন। সংসার পরিচালনার তাগিদে রেশমার মা হুসনেয়ারা বেগম পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে ১৫০০ টাকা বেতনে মাঠকর্মী হিসেবে যোগদান করেন। তার বাবা তাদের কোন খবর রাখতেন না। এমনকি রেশমার কোন দায়িত্বও নেয়নি তিনি। তাই মায়ের কাছেই বেড়ে উঠে সে। অভাবের সংসারে অনেক কষ্ট করে অস্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর ১৫ বছর বয়সের তার বিয়ে হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে তার স্বামী হয় মাদকসেবী ও জুয়াড়ু। জুয়া খেলার টাকার জন্য অমানসিক নির্যাতন চালাতো রেশমার উপর। বাধ্য হয়েই স্বামীকে তালাক দিয়ে মায়ের কাছে চলে আসে সে। এরপর থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় রেশমার সংগ্রামী জীবন শুরু হয়। ধৈর্য এবং সততার সঙ্গে নিজের কর্ম প্রচেষ্টায় এখন সেই দিন পাল্টে গেছে তার।

বাড়িতে কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি করে বিক্রির মাধ্যমে রেশমা নিজেই নিজের সংসার গড়েছেন। শখের বশে ২০১৬ সালে দুটি গরু পালন করেন তিনি। ওই গরুর গোবর কিভাবে কাজে লাগানো যায় সে চিন্তায় মগ্ন থাকেন রেশমা। পরে ২০১৭ সালে মাত্র একটি সিমেন্টের চাকে কেঁচো দিয়ে শুরু করেন জীবনযুদ্ধের পথচলা। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন তার ১৩৫টি চাক ও ৩০টি ক্যারেটে কেঁচো রয়েছে। সেখান থেকে উৎপাদিত সার ও কেঁচো বিক্রি করে মাসে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা আয় করেন রেশমা। ওই টাকা ছাড়াও সুপারি, পেঁপেসহ বিভিন্ন সবজির চাষ ও গরু লালন-পালন করে এখন ভালোই চলছে তার সংসার।

উদ্যোক্তা সুরাইয়া ফারহানা রেশমা জানান, বাবার অভাবের সংসার থেকে স্বামীর সংসার পর্যন্ত কখনও অভাব পিছু ছাড়েনি। স্বামীর সাথে বিচ্ছেদের পরে ভাবলাম নিজেই উদ্যোক্তা উন্নয়নের কোনো কাজ করবো। যা দিয়ে নিজের গতি ফেরানো যাবে। এ ভাবনা অনুসারেই সুযোগ পেয়ে কেঁচো সার তৈরির প্রশিক্ষণ নিই। এরপর নিজ বাড়িতেই শুরু করি কম্পোস্ট সার তৈরির কাজ। আমি যুব উন্নয়ন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমী থেকে প্রশিক্ষন গ্রহন করে প্রাকৃতিকভাবে কেঁচো সার তৈরী করে বিক্রি করছি। এই সারের ফসল আমি নিজেও খাচ্ছি এবং অন্যদেরও খাওয়ানের চেষ্টা করছি। এই কাজে আমি সরকারের পাশাপাশি সর্ব সাধারণের সহযোগিতা কামনা করছি। শেরপুর উপজেলা মহিলা বিষযক কর্মকর্তা সুবির কুমার পাল জানান, আমি সুরাইয়া ফারহানা রেশমার কৃষি ও কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন পদ্ধতি নিজে দেখেছি। একজন সংগ্রামী মেয়ের চেষ্টায় শূন্য থেকে সফলতা অর্জন দেশের কৃষক ও কৃষাণীদের জন্য অনুকরণীয়। যখন দেশের অগণিত কৃষক কৃষি কাজে মাত্রা অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করে জমির উর্বরতা নষ্ট করছে তখন রেশমা জৈব সার তৈরী এবং জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ সবাইকে চমকে দিয়েছে।

জামান / জামান

ভূঞাপুরে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন সভা

রাণীশংকৈলে পুলিশের ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত

সবুজে ঢেকে যাক কালকিনি: পরিবেশ রক্ষায় আনসার-ভিডিপি’র অঙ্গীকার

অভয়নগরে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা

শ্রীমঙ্গলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত -১

তানোরে ব্যাক ডেট ও জালিয়াতি নিয়োগের তদন্তে হাজির হননি ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে স্কুল শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন

চট্টগ্রামে নেক্সাস ফেস্ট-২০২৫ সম্পন্ন

পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে: জামায়াতের অধ্যাপক মজিবুর রহমান

শ্রীপুরে পরিবেশ বিপর্যয় রোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা

অনার্সের খাতা দেখেন কলেজ হোস্টেলের গার্ড !

মানিকগঞ্জে ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারী আটক

কাপাসিয়া 'ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় হাইলজোরে' অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত