কুবিতে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিচারকের স্বজনপ্রীতির চেষ্টা, বাধা দেয়ায় দুর্ব্যবহার

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় স্বজনপ্রীতির চেষ্টা, প্রতিযোগিতায় বাবার বিচারক হওয়া ও স্বজনপ্রীতি মেনে না নেয়ায় এক বিচারকের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে অপর দুই বিচারকের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) প্রতিযোগিতার ভেন্যু ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় ব্যাডমিন্টন কোর্টে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের (প্লে-তৃতীয় শ্রেণী) ক গ্রুপ এবং (চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণী) খ গ্রুপ এই দুটি দলে ভাগ করা হয়। যার বিচারক ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মোর্শেদ রায়হান, একই বিভাগের শিক্ষক মুহাম্মদ মশিউর রহমান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক কাজী এম আনিছুল ইসলামসহ প্রায় ৭ জন।
প্রতিযোগিতায় প্রতি গ্রুপে সেরা ৩ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার ও ১০ জন শিক্ষার্থীকে সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাছাইপর্বে গিয়ে দেখা যায় তাদের মধ্য থেকে ক গ্রুপের এমন একজনকে সান্ত্বনা পুরস্কারের জন্য নির্বাচন করা হচ্ছে যে কিনা কোনো স্কুলে পড়ে না এবং চিত্রকর্মটি মানের দিক থেকে পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য নয় বরং তারচেয়েও ভালো বেশকিছু চিত্রকর্ম বাদ দেয়া হয়েছে। তা দেখে বিচারক কাজী এম আনিছুল ইসলাম দ্বিমত পোষণ করলে বিচারক মোর্শেদ রায়হান এবং মশিউর রহমান ঐ শিক্ষার্থীর চিত্রকর্মের পক্ষ নিয়ে জোরালোভাবে কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে মশিউর রহমান কাজী আনিছুল ইসলামের উপর উত্তপ্ত হয়ে দুর্ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে জানা যায় মশিউর রহমান ও মোর্শেদ রায়হান যে চিত্রকর্মটির পক্ষে কথা বলছিলেন সেটি মোর্শেদ রায়হানের মেয়ের চিত্রকর্ম।
এরপর চিত্রকর্মটি সবাই দেখে পুরস্কার না দেয়ার ব্যাপারেই মত দেন। তবে বিচারকদের কেউ কেউ বলেন, শিক্ষকের মেয়ে হিসেবে দেয়া যেতে পারে। তখন বিচারক মুর্শেদ রায়হান এতে রাজি হননি। সবশেষে প্রধান বিচারক ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষক মো. এনামুল হকের হস্তক্ষেপে চিত্রকর্মটি বাদ দেয়া হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে কাজী আনিছের সাথে মশিউর রহমানকে উচ্চবাচ্য করতে শোনা যায়।
বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিচারক বলেন, যেহেতু মেয়েটি কোনো স্কুলে পড়ে না তাহলে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় কীভাবে? নিয়ম না মানা হলে নিয়মের কী দরকার? আর মেয়ে যদি প্রতিযোগী হয় সেখানে বাবার বিচারক হওয়া অনুচিত। আর চিত্রকর্মটি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য না কিন্তু পুরস্কার দিতে হবে এমন ইচ্ছা পোষণ করা উচিত হয়নি। প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ দেয়া উচিত ছিল।
এ বিষয়ে কাজী এম আনিছুল ইসলাম বলেন, বিষয়টা দেখার পর আমি এতে দ্বিমত পোষণ করি। কারণ একটা বাচ্চা সে আরোও ভালো করতে হবে এই সেন্সটা তার ভিতর আনতে হবে। কিন্তু একটা প্রতিযোগিতায় যাকে আমি নিতে পারছি না সে আমার ছেলে/মেয়ে বলে তাকে আমি পুরস্কার দিচ্ছি এটার মানে তার প্রতিভাটা নষ্ট করে দেওয়া। একটা বাচ্চাকে মিথ্যে অনুপ্রেরণা দেয়াকে আমি সমর্থন করতে পারি না। আলটিমেটলি আমি ঐ শিশুর ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে এবং আরেকজন শিশু যাতে বঞ্চিত না হয় এই দুই জনের কথা চিন্তা করে আমি একজন বিচারক হিসেবে এমন জাজমেন্ট দিয়েছিলাম। পরে জানতে পেরে আমি অবাক হই, ঐ বাচ্চাটি একজন বিচারকের মেয়ে। যেখানে একজন মেয়ে প্রতিযোগী সেখানে বাবা বিচারক থাকলেন কীভাবে? আমি পরবর্তীতে আহবায়ক মো. সাদেকুজ্জামান স্যারকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিচারক প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মোর্শেদ রায়হান বলেন, প্রথমেই আমি বলে দিয়েছিলাম এখানে আমি কোনো মন্তব্য করবো না যেহেতু আমার কন্যা এখানে অংশগ্রহণ করেছে। পরে এটা অন্য বিচারকরা বাছাই করলেন, তখন একজন শিক্ষক বললেন ছবিটা মিনিংলেস, এভাবে কি বলা যায়? পরিশেষে আমি শিশুটির বাবা তবুও মতামত দিয়েছি ছবিটা না নেয়ার জন্য। বলা যায় তার প্রতি বাবা বলে আমি ইনজাস্টিস করেছি। একটা ভাল চিত্রকর্ম বাদ দিয়েছি।
এ বিষয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আরেকজন বিচারক প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, একজন বিচারক যখন চিত্রকর্মটি বাদ দেয়ার মত প্রকাশ করলেন তখন আমরা সেটাকে বাদ দিয়ে দেই। পরবর্তীতে উনি বিষয়টা বারবার বললে উনাকে বলি আমরা এটা বাদ দিয়েছি এটা নিয়ে আর কথা না বাড়াই। আর মেয়েটি কোনো স্কুলে পড়ে না, এটা বিচারক মণ্ডলী জেনে তখনই বাদ দেয়া হয়েছে। আর চিত্রকর্মটিও এতো ভাল হয়নি।
অনুষ্ঠানটির আহ্বায়ক প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মো. সাদেকুজ্জামান বলেন, কোন শিক্ষকের মেয়ে বলেই পুরস্কৃত করতে হবে এমন সুযোগ নেই। আর বিচারকদের মাঝে ধরেন আমি এক মতামত দিব, আরেকজন আরেক মতামত দিবে। সেখানে তর্ক-বিতর্ক হতেই পারে। ফাইনালি কি সিদ্ধান্ত হলো সেটাই তো চূড়ান্ত বিষয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, এরকম ঘটনা ঘটে গিয়েছে এটার বিষয়ে তো আমি অবগত ছিলাম না। আমি খুঁজ-খবর নিয়ে দেখি আগে, এরপর ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, বিষয়টা আমার জানা নেই। আমি জেনে নেই এরপর মন্তব্য করতে পারবো।
এমএসএম / জামান

আইএফপিআরআই ও সার্ক কৃষি কেন্দ্রের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি'তে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন BIM 2025

চাকসু নির্বাচনে ব্যালট নম্বর প্রকাশ, আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু

গঠনতন্ত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সংযোজন করে ইকসু'র দাবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টার পুনঃনিয়োগ

পাস্ট ডিবেটিং সোসাইটির নতুন সভাপতি রউফ, সম্পাদক তন্নি

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় পবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থী

রাবিতে শাটডাউন প্রত্যাহার, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের

পিছানো হল চাকসু নির্বাচন

রাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

১৬ অক্টোবর রাকসু নির্বাচন

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় বাকৃবির ১২ গবেষক

বিশ্বের শীর্ষ দুই শতাংশ গবেষকদের তালিকায় ইবির দুই অধ্যাপক
Link Copied