ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

চরের যোগাযোগে ঘোড়ার গাড়ি বড় ভূমিকা রাখছে


মজিবর রহমান, গাইবান্ধা photo মজিবর রহমান, গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ৯-৫-২০২২ দুপুর ৪:২৭

ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ-নদী দ্বারা একবারে বিচ্ছিন্ন গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি, উড়িয়া ও গজারিয়া ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নের খাটিয়ামারি, জিগাবাড়ি, পেপুলিয়া, গাবগাছি, গলনা, জিয়াডাঙ্গা, সাতারকান্দি, রসূলপুর, খাটিয়ামারি, ফুলছড়ি, টেংরাকান্দি, চর উত্তর খোলাবাড়ি, বাজে ফুলছড়ি, চর কালাসোনাসহ প্রায় ৫০টি এলাকায় কোনো যানবাহন না চলার কারণে চরের মানুষজন বালুময় পথে মাইলের পর মাইল হেঁটে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত ও তাদের উৎপাদিত পণ্য নিজের ঘাড়ে কষ্ট করে আনা-নেয়া করত।

এখন চরাঞ্চলের মানুষের মালামালের বাহন হিসেবে ঘোড়ার গাড়িই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চরাঞ্চলের চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফসল জমি থেকে তুলে বাড়ি ও উপজেলা সদরে বিক্রি করার জন্য নদীর ঘাটে নিয়ে আসার একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি। রাস্তাঘাট না থাকায় চলাঞ্চলের অধিকাংশ ঘোড়ার গাড়ির চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ছুটে বেড়াচ্ছে এ চর থেকে ওই চরে। ফলে চরের উৎপাদিত কৃষিপণ্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রেও ঘোড়ার গাড়ি পরিবহনে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

নৌপথে সহজে এখন আর চরে যাওয়া যায় না। এক চরের পর কিছুটা পানি তারপর আবার চর। উৎপাদিত পণ্য বিপণনের জন্য হাট-বাজারে নিয়ে যেতে পোহাতে হয় দুর্ভোগ। অসুস্থ রোগী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। চরে গরুরগাড়ি সহজে চলে না। গরুর গাড়ি গ্রামের সড়কে যতটা সহজে চলতে পারে চরের বালির ওপর দিয়ে গরু সেভাবে টানতে পারে না। চরের ওপর দিয়ে এক ঘোড়া যতটা বোঝা বহন করতে পারে, এক জোড়া শক্তিশালী গরু তা পারে না। গরুর শক্তি ঘোড়ার চেয়ে কয়েক গুণ কম। যে জন্য চরের যোগাযোগে ঘোড়ার গাড়ি বড় ভূমিকা রাখছে।

চরের মানুষ এই যানের নাম দিয়েছে চরের ঘোড়া। তাতেই বুঝে নেয় ঘোড়ার গাড়ি। যাত্রী ও মালামাল টেনে ছুটিয়ে নিয়ে যায় বিশেষায়িত এক ধরনের গাড়ি, যা দেখতে অনেকটা গরুর গাড়ির মতো। তবে চরাঞ্চলে এই গাড়ি গরুর শক্তিতে সহজে চলতে পারে না। প্রয়োজন হয় অশ্বশক্তি। যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে চরের জাহাজ হয়েছে ঘোড়ায় চালিত বিশেষ গাড়ি। অস্তিত্ব রক্ষায় চরের মানুষ ঘোড়ায় চালিত এই গাড়ি উদ্ভাবন করেছে। ব্রহ্মপুত্রের চরে এমন গাড়ি যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ধরে রেখেছে। মানুষের দুর্ভোগ অনেক কমেছে। এখন আর তপ্ত বালির ওপর দিয়ে হেঁটে দীর্ঘ চর পাড়ি দিতে হয় না। চরের মানুষের হেঁটে দূরের হাটবাজারে পণ্য নিয়ে যাওয়ার কষ্ট দূর হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দিনে দিনে নদ নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রে শুকনো মৌসুমে চোখে পড়ে শুধুই বালুচর। গ্রীষ্মে এই চরের বালি যেমন আগুনে তপ্ত, শীতে এই বালি বরফের মতো ঠান্ডা। চরের মানুষ পায়ে ফোস্কা নিয়ে পাড়ি দেয় দূরের পথ।

গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্রের চরে ঘোড়ার গাড়ি চালান আইনুল। চারিদিকে ব্রহ্মপুত্রের ধু ধু বালুচর। একদৃষ্টে তাকিয়ে আছেন আইনুল মিয়া। চোখ জুড়ে তার যাত্রীর জন্য প্রতীক্ষা। বিস্তীর্ণ বালুচর পেরিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে যাত্রী ও মালামাল পৌঁছে দেবেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে। বাড়ি তার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া গ্রামে। গাড়ি চালিয়ে প্রতিদিন আয় করেন ৫শ’থেকে ৭শ’টাকা। ঘোড়ার খাওয়ার জন্য প্রতিদিন খরচ হয় ২শ’ টাকা। বাকি টাকা দিয়ে সংসার প্রতিপালন করেন। স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে তার। এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ডিসেম্বর মাস থেকে মে মাসের প্রথমার্ধ পর্যন্ত প্রমত্ত ব্রহ্মপুত্র শুকিয়ে গিয়ে বিশাল চর জেগে ওঠে। এসময় নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চর পেরুতে হয় ঘোড়ার গাড়ি বা ব্যাটারিচালিত অটোবাইকে। তখন চরের অধিবাসীদের কাছে এসব যানবাহন যাতায়াতের একমাত্র বাহন হয়ে ওঠে। শুকনো মৌসুমে আইনুল মিয়ার মতো আরও অনেকে ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে আসেন ব্রহ্মপুত্রের চরে যাত্রী বহনের জন্য। তিনি বলেন, ৪/৫ মাস চলে এই যাত্রী বহনের কাজ। মে মাসের মাঝামাঝি ব্রহ্মপুত্রে পানি এলে বন্ধ হয়ে যায় কাজ। তখন থেকে কালাম মিয়ারা আবার দিন গুণতে থাকেন ব্রহ্মপুত্র শুকিয়ে যাওয়ার।

ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। পানি কমে যাওয়ায় বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র এখন মরুভুমিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এতে উপজেলার সাতারকান্দি, রসূলপুর, খাটিয়ামারি, ফুলছড়ি, টেংরাকান্দি, বাজে ফুলছড়িসহ চরের প্রায় ৫০টি গ্রামবাসীর লোকজন যাতায়াত ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল ঘোড়ার গাড়িতে বহন করছে। এতে একদিকে যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হয়েছে, অন্যদিকে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতা এসেছে দুই শতাধিক পরিবারে।

এমএসএম / জামান

সাজিদা ট্রেডিংয়ের প্রোপাইটর মোঃ লিয়াকত হোসেন খোকনের বিরুদ্ধে মামলা

শান্তিগঞ্জে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন শীর্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

নাফনদীর মোহনায় ট্রলার ডুবি, ৭জেলে উদ্ধার

বালিয়াকান্দিতে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

বাউফলে চেয়ারম্যান পরিবহন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

আদমদীঘিতে সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

জয়পুরহাটে পৌর হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির কার্যক্রম স্থগিতের দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান

দৌলতপুরে মুখ বাঁধা অবস্থায় নারীর মরদেহ উদ্ধার

কমিউনিটি পুলিশিং সভা ও উদ্ধারকৃত মোবাইল-অর্থ হস্তান্তর: মেহেরপুর জেলা পুলিশের জনবান্ধব উদ্যোগ

ভূরুঙ্গামারীতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবজাতক শিশুদের জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করছে উপজেলা প্রশাসন

পাবনায় ট্রিপল মার্ডারের রায়ে একজনের মৃত্যুদন্ড

গলাচিপা সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে জামায়াতের এমপি পদ প্রার্থীর মত বিনিময় সভা

ত্রিশালে মসজিদে চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত