বিএনপির গণসমাবেশ : মিছিল-স্লোগানে মুখর রংপুর

রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে ‘খেলা হবে’ স্লোগানেমুখর হয়ে উঠেছে নগর। মধ্যরাত থেকেই দলে দলে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলের দিকে আসছেন দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। কেউ হেঁটে, কেউবা ছোট ছোট যানবাহনে করে সমাবেশে যোগ দিতে রংপুর আসছেন। সমাবেশ শুরুর হওয়ার আগেই কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) ভোর থেকে রংপুর মহানগরীর প্রবেশমুখ মাহিগঞ্জ সাতমাথা, মেডিকেল মোড়, টার্মিনাল রোডসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মিছিল নিয়ে আসতে দেখা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রধান সড়কগুলোতে খণ্ড খণ্ড মিছিলের চাপ বাড়ছে, বাড়ছে স্লোগানের প্রতিধ্বনিও।
ভোর সোয়া ৬টার দিকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকে আসা প্রায় সহস্রাধিক লোকের একটি মিছিল নগরীর সাতমাথা এলাকা পার হয়ে রংপুর শহরে প্রবেশ করে। মোটর মালিক সমিতির ডাকা পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এসব লোকজন অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন ছোট যানে করে ভেঙে ভেঙে সমাবেশে যোগ দিতে রংপুরে এসেছেন।
লালমনিরহাটের বড়বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক অটোরিকশায় করে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি বিএনপির নেতা-কর্মী সকাল ৮টার দিকে রংপুর শহরে প্রবেশ করেন। তাদের মুখে বিভিন্ন স্লোগানের পাশাপাশি হাতে ছিল ধানের শীষ আর বাঁশের লাঠিতে বাঁধা জাতীয় পতাকা। সারিবদ্ধভাবে একে একে অটোরিকশাগুলো সাতমাথা অতিক্রম করে পার্কের মোড়ে গিয়ে জমায়েত হয়। পরে সেখান থেকে বিশাল একটি মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলের দিকে যান তারা।
বড়বাড়ী এলাকার এরশাদুল হক জানান, তারা ভোরে কয়েকশ অটোরিকশা নিয়ে রংপুরের উদ্দেশে বের হন। প্রতিটি অটোরিকশাতে ৮-১০ জন করে নেতা-কর্মী ছিল। তাদের কোথাও কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। তবে পরিবহন ধর্মঘট না থাকলে আরও হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থক সমাবেশে আসতেন বলে জানান এই বিএনপিকর্মী। তার দাবি, শুধু বড়বাড়ীসহ আশপাশের এলাকা থেকে বিএনপির ২০ হাজারের বেশি লোকজন রংপুর এসেছেন।
এদিকে সড়ক পথে প্রশাসনিক হয়রানির প্রতিবাদ ও তিন চাকার যানবাহনসহ মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন চলেছে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট চলবে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। বিএনপির গণসমাবেশের দুদিন আগে ডাকা পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে বন্ধ নেই তিন চাকার যানসহ কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল চলাচল। বরং আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে ছোট ছোট এসব যানবাহনের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। তবে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
ধর্মঘটের বিষয়টি চিন্তা করে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির শত শত নেতাকর্মী আসতে থাকে। শুক্রবার দিনভর মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, ট্রেন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে রংপুরে এসে পৌঁছানোর পর সমাবেশ মাঠে জড়ো হন তারা।
এদিকে বিএনপির নেতারা বলছেন, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার পর এবার রংপুরেও সরকারের পক্ষ থেকে বাধা সৃষ্টি করতে ধর্মঘট দেওয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ব্যাহত করতে এ ধরনের কার্যক্রম দিয়েছেন তারা। তবে ধর্মঘটসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশে লাখ লাখ নেতাকর্মী ও সমর্থক উপস্থিত হবেন বলে আশা তাদের।
নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন স্থানে গুলিতে দলের নেতা-কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদসহ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার রংপুরে তাদের চতুর্থ বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে।
গণসমাবেশের প্রস্তুতির বিষয়ে রংপুর বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন বাধা, ধর্মঘট উপেক্ষা করে সমাবেশস্থলে দলীয় নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। অনেকেই বুধবার রাত থেকেই রংপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন। বৃহস্পতিবার রাতেও অনেকে এসেছেন। আজ সকালের মধ্যে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে জনস্রোতে নেমেছে। আশা করছি কয়েক লাখ মানুষের জনসমাগমে সরকারের সকল বাধা ভেস্তে যাবে।
দুপুর ২টায় রংপুরের ঐতিহাসিক কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিএনপির গণসমাবেশ শুরু হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
এদিকে গণসমাবেশে যোগ দিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে ইতোমধ্যে রংপুরে এসে পৌঁছেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ, যুগ্ম মহাসচিব হারুন উর রশিদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব (দুলু), সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, কৃষক দলের মহাসচিব শহিদুল ইসলাম (বাবুল), ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনোকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ জুয়েল প্রমুখ।
জামান / জামান

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে আর কোনও সংশয় নেই

নিবন্ধন পেল লেবার পার্টি, প্রতীক আনারস

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে আরেকটি ফ্যাসিস্ট সরকার তৈরি হতে পারে

চাপে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দিতে সাহস পাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন

আগামী নির্বাচনে বিএনপিই রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবে : আমান উল্লাহ আমান

কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরছেন তারেক রহমান

কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারেক রহমান দেশে ফিরবেন: ডা. জাহিদ

মির্জা ফখরুল বিদেশি কোনো গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেননি : বিএনপি

তরুণদের উদ্বুদ্ধ করে রাজপথে নামিয়েছিলেন তারেক রহমান : রিজভী

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর গ্রেপ্তার

শাপলা প্রতীক পাচ্ছে না এনসিপি

বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে : রিজভী
