ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষে খরচ কম এবং আয় বেশি হওয়ায় স্বাবলম্বী কৃষক

গাইবান্ধায় পানিতে ডুবে থাকা বিভিন্ন বিলে ভাসমান সবজি চাষের বিপুল সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। জেলা সদর, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে চলা যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর তীরবর্তী উপজেলার এসব এলাকার বিল-ঝিলের জমি সাধারণত বছরের অর্ধেক সময় ধরে পানিতে ডুবে থাকে। সেসব এলাকর মধ্যে সাঘাটায় উপজেলায় ভাসমান বেডে পানিতে কচুরিপানার ওপর মাটি ছাড়াই চাষ করা হচ্ছে সবজি। ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষে খরচ কম কিন্তু আয় বেশি হওয়ায় স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষকরা।
মেলোনাইস সেন্ট্রাল কমিটি বাংলাদেশে (এমসিসিবি) সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ’উদয়ন স্বাবলম্বী সংস্থা’-এর ফুড সিকিউরিটি প্রজেক্টের আওতায় ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে সফল হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষাণ-কৃষাণীরা। ভাসমান বেডে সবজি চাষ পদ্ধতি গাইবান্ধার মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে উন্নয়ন সংস্থাটি।
বর্তমানে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ঘুড়িদহ ইউনিয়নের ঝাড়াবর্ষা বিলে ভাসমান বেডে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রথম দিকে চাষিরা সন্দিহান থাকলেও পরীক্ষামূলক চাষে সফলতা আসায় ভাসমান বেডে সবজি চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন এলাকার মানুষ।
সরেজমিন সাঘাটা উপজেলায় দেখা যায়, রাস্তার পাশেই ঝাড়াবর্ষা বিল। এই বিলে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করা হয়েছে। পরপর ভাসমান ৮টি বেড। তাতে কলমি শাক, লালশাক, পুঁইশাকসহ বিভিন্ন রকমের সবজি। কলাগাছের ওপর কচুরিপানা পচিয়ে বেড তৈরি কার হয়েছে। প্রতিটি বেডে বিজ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেয়ায় সবজির লতাপাতা ছড়িয়ে ঝাড় হয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সাঘাটা উপজেলার নদী তীরবর্তি বিল গুলোত বর্ষাকাল শেষেও অনেক সময় ধরে পানিতে ডুবে থাকে। ভাসমান বেডে শীতকালিন শাক-সবজি চাষ করা সম্ভব। এবছর সাঘাটার তিনটি পয়েন্টে পরিক্ষামূলক এই চাষ করা হয়েছে।
কথা হয় ভাসমান সবজি চাষি বিলকিস বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, উদয়ন এনজিও থেকে মমতা আপা এসে ডোবার মধ্যে ভাসমান বেডে তাদের সবজি চাষ করতে বলেন। পরে আপার র্নিদেশনায় আমরা বেড তৈরি করি। নাছিমা বেগম, শরিফা বেগম, তহমিনা বেগম মিলে ডোবায় ছয়টি বেডে সবজি চাষ করি। একটিতে কলমিশাক, একটিতে লালশাক একটিতে পুইশাক ও একটিতে ডাটাশাক আবাদ করি। এমন সবজি চাষের অভিজ্ঞতা নতুন তবে যে আবাদ হয়ে তাতে নিজে খেয়েও সপ্তহে তিন থেকে চার’শ টাকা বিক্রি করতে পারছি আমরা।
সবজি চাষি তহমিনা বেগম বলেন, কলমিশাক আবাদ করেছি। একদিন পরপর শাক তুলি। কিছু খাই, কিছু বিক্রি করি। ভালোই হয়েছে খাওয়াও যায় বেচাও যায়। পরের বার আরও বেশি করি আবাদ করমো।
লালশাক বেডে পরির্চযা করতে আসা শরিফা বেগম বলেন, হামার ঘরে সবজি চাষ দেখিয়া গ্রামের সবাই করবের চাবার নাগছে। হামরা খুব খুশি। এমাসে হাজার বারোশ টাকার শাক বেঁচচি।
ওই এলাকার কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, উদয়নের সহযোগিতায় আমি ও আমার স্ত্রী নাছিমা বেগম মিলে ভাসমান বেডে পরিচর্যা করে নিজে খেয়েও এমাসে তের’শ টাকার শাক বিক্রি করেছি। আমাদের দেখে অনেকেই এই ভাসমান সবজি চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তবে এলাকায় ভাসমান সবজি চাষ ভালো সাড়া ফেলেছে। তবে কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণসহ সহযোগীতা পেলে আমরা আরও বড় পরিসরে চাষাবাদ করতে পারবো।
উদয়ন স্বাবলম্বী সংস্থার ফিল্ড অর্গানাইজার মমতা খাতুন বলেন, গাইবান্ধা সাঘাটাসহ উত্তরের ১১টি জেলায় এই পদ্ধতিতে পরিক্ষামূলক ভাসমান বেডে সবজি চাষের উদ্দ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখান থেকে একটি পরিবার নিজের চাহিদা পূরণ করেও সপ্তাহে তিন’শ থেকে চার’শ টাকা আয় করছে।
এমন উদ্দ্যোগ কেন নেয়া হয়েছে জবাবে তিনি জানান,জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে দেখা যায় অসময়ের বৃষ্টি ও বন্যার কারণে খাল-বিল নিচু জমি তলিয়ে যায়। সেসমস্ত জমির সবজি নষ্ট হয়ে যায়। ক্ষতির থকে রক্ষা পেতে সাঘাটা উপজেলার ঝাড়াবর্ষা বিল, বিষ পুকুর বিল ও গলাকাটা বিলে পরিক্ষামূলক ভাবে ভাসমান সবজি চাষ চালু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একটি বেডে তিন থেকে চারবার লাল শাক, একবার পুঁই শাক, ডাটাশাক চাষ করা যায়। এক বেডে একবারে এক ফসল থেকে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার আয় কার যায়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ হতে পারে ২৫-৩০ ফুট (ছোট-বড় হতে পারে)। প্রস্থ চার-পাঁচ ফুট। বেড দুইটি স্তরে তৈরি করা হয়। এরমধ্যে নিচের স্তরে কলাগাছ দিয়ে একটি বেড তৈরি করা হয়। উপরের স্তরের কচুরিপানা দেওয়া হয়। কচুরি পানা পঁচে গেলে উপরে বিজ ছিটিয়ে দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, সাঘাটার এসব বিল এলাকার লোকজনকে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে আগ্রহী চাষিদের প্রাথমিকভাবে বিনামূল্যে বেড তৈরি করে দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ঝাড়াবর্ষা বিলসহ এই এলাকার পৃথক তিনটি স্থানে ২৪টি বেড করা হয়েছে।
এব্যপারে গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বেলাল উদ্দিন বলেন, ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদ হাওরাঞ্চলে বেশি হয়। গাইবান্ধার একটি উন্নয়ন সংস্থা ভাসমান বেডে সবজি চাষের উদ্দ্যোগ নিয়েছে। সংস্থাটি সাঘাটা উপজেলার তিনটি স্থানে প্রাথমিক ভাবে সবজি চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছে। আমরা জনেতে পেরেছি তাদের ভাসমান সবজি চাষে ওই সমস্ত এলাকার কৃষকার উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। ভাসমান সবজি চাষে কৃষাণ-কৃষাণীদের প্রশিক্ষণসহ সকল ধরনের সহযোগীতা করা হবে। ইতিমধ্যে আমাদের উপসহকারী কৃষি অফিসাররা তদারকি করছেন।
প্রীতি / জামান

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মির্জাগঞ্জে মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত

বগুড়ার শেরপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা, হাসপাতালে ভর্তি

বোয়ালমারীতে প্রাণি সম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে হাঁস বিতরণ কর্মসূচি পালন
