একটি সেতুর অভাবে তিন গ্রামের সাত হাজার মানুষ

শুধু একটি ব্রিজের অভাবে অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে ফজলুপুর-ফুলছড়ি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। দু‘ইউনিয়ন ও উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কাজির গ্রাম খালের উপর দীর্ঘ ৫০ বছরেও পাঁকা সেতু নির্মিত না হওয়ায় এলাকার মানুষ যাতায়াত ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ও ফুলছড়ি ইউনিয়নের খাটিয়ামারি, কাজির গ্রাম, ফজলুপুর, পশ্চিম কালুরপাড়া গ্রাম এবং কালুরপাড়া চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরখাটিয়ামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ খাটিয়ামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টেংরাকান্দি এমএ সবুর দাখিল মাদ্রাসা ও স্থানীয় চারটি বাজারের প্রায় ৭ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ হচ্ছে কাজির গ্রাম খালের উপর কাঠের ঝুঁকিপুর্ণ সেতুটি।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ২০১৯ সালে ওই খালের উপর একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করলেও ২০২১ সালের বন্যায় সেটি ভেঙ্গে যাওয়ায় চলাচলের ক্ষেত্রে অযোগ্য হয়ে পড়ে। ফলে এসব গ্রাম, স্কুল ও বাজারের লোকজনকে বাঁশের সাঁকো অথবা অন্য বিকল্প পথ ব্যবহার করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। এ অঞ্চলের মানুষ শুকনো মৌসুমে শত কষ্ট স্বীকার করে চলাচল করলেও বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। শুধু দুর্ভোগই নয়, এ সময় অনেক ছাত্র-ছাত্রীর স্কুল ও মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তখন এলাকাবাসীর যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায় নৌকা।
বিশেষ করে উৎপাদিত পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। এই সেতুর অভাবে এলাকার মানুষ শিক্ষা,চিকিৎসাসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দীর্ঘ পথ হেঁটে কিংবা মুমূর্ষু রোগীদের কাঁধে করে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হচ্ছে তাদের। বর্ষাকালে এ দুর্ভোগ আরও চরম আকার ধারণ করে। সেতু নির্মাণে কয়েক দফা উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তা নানা জটিলতায় আটকে গেছে।
ফুলছড়ির কালুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ফেরদৌস মন্ডল ফেদু বলেন, সেতুর অভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় উপজেলায় যেতে অনেক কষ্ট হয়। বন্যায় যাতায়াতে ভোগান্তি বেড়ে যায় আরও বেশি। অথচ একটি সেতুটি নির্মাণ হলে এই দুর্ভোগ থেকে আমরা রেহাই পাব।
একই এলাকার বাসিন্দা আলিম মিয়া বলেন, বর্ষাকালে নৌকায় পারাপার হতে হয়। এতে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়। আমাদের এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য নিতে পাইকাররা এলাকায় আসে না রাস্তাঘাট বা যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে। ফলে আমরা উৎপাদিত কৃষি পণ্যের সঠিক দামটা পাইনা। প্রতিনিয়তই জনপ্রতিনিধিরা এ খালের উপর সেতু নির্মাণের কথা বললেও ভোটের পর তাদের আর দেখা মেলে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
খাটিয়ামারি গ্রামের বাসিন্দা ও কালুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে এই গ্রামে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অনেক লোক খালের পশ্চিম পারে জনবসতি গড়ে তুলেছেন। তাদের জরুরী স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত ও কৃষি পণ্য পরিবহনে এখানে একটি সেতু নির্মাণ অতীব জরুরী। অনেক জনপ্রতিনিধিদের বলেও আমাদের এ দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে এ গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে একটি সেতুর কারণে।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল কাদের জানান, এই ঘাটে একটি সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে আমাদের। এখানে পাঁকা সেতু নির্মাণ আমাদের প্রাণের দাবি। সেতুটি নির্মাণ করার জন্য জনপ্রতিনিধি ও সরকারের কাছে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। স্থানীয় মোতালেব কাজী বলেন, কালুপাড়া চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরখাটিয়ামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ খাটিয়ামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টেংরাকান্দি এমএ সবুর দাখিল মাদ্রাসাসহ চারটি প্রাইমারি স্কুল ও একটি মাদ্রাসার প্রায় ৩০০-৪০০ ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ পথে যাতায়াত করে। একটি সেতু হলে এই শিার্থীরা প্রতিদিন স্কুল ও মাদরাসায় উপস্থিত হতে পারবে। ফলে শিার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দুর্দশা লাগব হবে। তাই অতিদ্রুত সরকারের কাছে সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
ফজলুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হানিফ প্রামানিক বলেন, দু‘ইউনিয়নের বহুদিনের সমস্যা এ কাঠের সেতু। এই সেতুটি কয়েক বছর আগে কাঠ দিয়ে তৈরি করে জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করা হয়েছিল কিন্তু বর্তমানে একজন মানুষও কাঠের সেতুর উপর দিয়ে হেঁটে যেতে পারে না। এখানে একটি সেতু দরকার। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলের ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সাথে আমার কথা হয়েছে তারা আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন খুব তাড়াতাড়ি সাত-আট হাজার মানুষের চলাচলের এই সেতুটি নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
ফুলছড়ি উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, শুনেছি ফজলুপুর ইউনিয়নে কাজির গ্রাম খালের উপর কাঠের যে সেতু ছিল দীর্ঘদিন থেকে সেতুটি নাকি ভেঙ্গে আছে। আমরা সরেজমিনে দেখে এডিবি প্রকল্পের মাধ্যমে সেতুটি নির্মাণ করার চেষ্টা করব।
এবিষয়ে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, আমি সবেমাত্র ফুলছড়িতে যোগদান করেছি। ফজলুপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গা সেতুটি পরিদর্শন করার পর দেখি কোন ডিপার্টমেন্টের কাজ তাদের সাথে কথা বলে সেতুটি নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ বলেন, সেতু না থাকার কারণে ফজলুপুর ও ফুলছড়ি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। উপজেলার নিজস্ব তহবিল থেকে সেতুটি নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আশ্বস্ত করেন তিনি জানান, ফজলুপুর ও ফুলছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানে সাহেব দের সাথে আমার কথা হয়েছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেতুটি নির্মাণ করা হবে।
এমএসএম / এমএসএম

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মির্জাগঞ্জে মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত

বগুড়ার শেরপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা, হাসপাতালে ভর্তি

বোয়ালমারীতে প্রাণি সম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে হাঁস বিতরণ কর্মসূচি পালন
