সুসময়ে অবহেলিত আ.লীগের দুঃসময়ের ত্যাগীরা

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে দলকে ভালোবেসে, জীবন বাজি রেখে যারা দলের হয়ে কাজ করেছেন, তারাই আজ বেশি অবহেলিত। স্বৈরাচার পতন আন্দোলন, ৮০ দশক, ৯১-৯৬ তে বিএনপি-জামাতকে প্রতিহত ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি-জামাতকে প্রতিহত করেছেন এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন অনেকেই নিজেকে নিস্ক্রিয় রেখেছেন দলীয় কর্মকান্ড থেকে।
দীর্ঘ ১৫ বছর দলের ক্ষমতার স্বাদে ত্যাগীদের অবমুল্যায়নের ফলে আজ নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন অনেকেই। আবার দলে ভীরে ক্ষমতার মসনদ দখল করা অনেকেই সহ্য করতে পারছেন না সেই ত্যাগীদের। যার ফলে নিজেদের আওয়ামী লীগের নেতা বলতেও সাহস করছেননা অনেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক ত্যাগী নেতারা জানিয়েছেন এমন ক্ষোভের কথা।
রাজনৈতিক হতাশা থেকেও কেউ কেউ হারিয়ে গেছেন, আবার কেউ হারিয়েছেন জীবিকার তাগিদে, জীবনের তাড়নায়। কারণ রাজনীতিকে হাতিয়ার বা অবলম্বন করে উপার্জনের সুযোগ ওই সময়কার ছাত্ররাজনীতিতে ছিল না। যে কারণে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে লালন করেও পিছুটানের কারণে রাজনীতিতে টিকতে পারেননি অনেকেই।
জানা যায় মফিজুর রহমান ও আব্দুর রহিম কমিটির ছাত্র লীগের সাবেক সহ-সভাপতি, ওমরগণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও সাবেক কাউন্সিলর মামুনুর রশীদ মামুন, ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সাবেক পাঠাগার সম্পাদক শওকত হোসেন জগলু, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, বাহাদুর বেপারী ও অজয় কর খোকন, ছাত্রলীগ কমিটির সাবেক উপপ্রচার সম্পাদক এবং লেয়াকত সিকদার ও নজরুল ইসলাম বাবু কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত তালুকদার, সরকারি সিটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মীর্জা আজম যুবলীগ কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য দিদারুল আলম মাসুম, ওমরগণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মো. ইউনুছ, ওমরগণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মফিজুর রহমান দুলু, সুনীল দে, আবদুল মান্নান, সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মাসুদ করিম টিটুসহ অনেক ত্যাগী ছাত্রলীগ নেতারা আজ অবহেলিত।
১৯৯৪-৯৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন মাঈনুউদ্দিন হাসান চৌধুরী। তিনি ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিক নিয়ে সাতকানিয়া-লোহাগড়া সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের কোন কমিটির কোন পদেই নেই তিনি। ১৯৭৯-৮০ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্র লীগের ভিপি ছিলেন এম এ জাফর প্রকাশ সিটি জাফর, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতিও ছিলেন তিনি।
বর্তমান নগর আওয়ামী লীগের বা জেলা আওয়ামী লীগের কোন পদে নেই। ১৯৯১-৯৩ সালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মো. শহিদুল আলম শহীদ। ১৯৯৮-২০০৩ পর্যন্ত ছিলেন দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সদস্য। বর্তমানে আইনজীবী পেশায় আছেন তবে আওয়ামী লীগের কোন পদবীতে নেই। চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের দুই মেয়াদে ১৯৮৬-৮৯ সভাপতি ছিলেন লেয়াকত আলী খান। পাঁচ বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর পা কেটে ফেলতে হয়।
কৃত্রিম পায়ে এখন চলা ফেরা করেন তিনি। বর্তমানে আওয়ামী লীগের কোন পদে নেই। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মো. আরদুর রহিম। তৎকালীন সভাপতি মো. মফিজুর রহমান বর্তমানে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ কিন্তু আবদুর রহিম আওয়ামী লীগের কোন পদে নেই। ১৯৮৯-৯১ চট্টগ্রাম সিটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (জাতীয় ছাত্রলীগের) ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন সাদেক হোসেন পাপ্পু। ৯০ এর গণ আন্দোলন ও স্বৈরাচার এরশাদ পতন আন্দোলনে ছিলেন সক্রিয়।
সে সময়ে পাপ্পু ও ইফতেখার উদ্দিন ইফতুর নেতৃত্বে নিউ মার্কেট এরিয়া থাকত সিটি কলেজের নিয়ন্ত্রনে। এরশাদ
পতনের পর ইফতু অষ্ট্রেলিয়া পাড়ি জমিয়ে সেখানে স্থায়ী হলেও বর্তমান আওয়ামী লীগের কোন কমিটির কোন পদে
নেই এই সাদেক হোসেন পাপ্পু। ১৯৯৪-৯৬ রাউজান উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ছিলেন এম. জমির উদ্দিন। ২০০৩ সালে উত্তর জেলা যুবলীগের সদস্য ছিলেন, বর্তমানে দলীয় কোন পদে নেই।
এরকম আরো অনেক সাবেক নেতাই এখন নিখোজের মতো হয়ে আছেন। নিজের দলের লোকের কাছেই হয়ে আছেন কোনঠাঁসা। দল আজ তাদের ত্যাগের মূল্যায়ন করছে না। আজ দলের কাছে এই সকল ছাত্রনেতাদের কোন মূল্য নেই।
এব্যপারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট সুনীল সরকার বলেন, আমরা
অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করিনা। কর্মের সঠিক মুল্যায়ন করিনা।
বর্তমানকে নিয়েই ব্যস্ত থাকি। তাই আমাদের দলে অনেক সুবিধাবাদীর দাপটের কাছে হারিয়ে যাচ্ছে দুঃসময়ের ত্যাগীরা। দলের হাই কমান্ডকে বুঝতে হবে, আমরা যদি ত্যাগীদের মুল্যায়ন না করি তাহলে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবেনা। মেধাবীরা রাজনীতিতে আসার আগ্রহ হারাবে। এখন যারা সুবিধা নেওয়ার জন্যে দলে এসেছে, আমাদের দুঃসময়ে তারা আমাদের পাশে থাকবেনা। বরং নিজেদের স্বার্থে দলকে বিক্রি করবে সস্তা দামে।
এতে দলের লাভ বা ক্ষতি হলে তাদেরতো আর কিছু আসে যায় না। তাই এখনই সময় সুবিধাবাদীদের চিহ্নিত করে বিদায় করে, ত্যাগীদের মুল্যায়ন করা। নাহলে একসময়ে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব সংকটে ভুগতে হবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের।
এ ব্যপারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি। দলের দুঃসময়েও ছিলাম, এখনো আছি এবং সামনেও থাকব। পদ-পদবী বা ক্ষমতার লোভ কখনো ছিলনা, এখনো নেই। তবু দল যদি আমাদের কর্মের মুল্যায়ন করে, আমাকে প্রয়োজন মনে করে কোন পদ দেওয়া হয়, তবে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব, আমার দায়িত্ব পালন করার জন্য।
এব্যপারে লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম বলেন ছাত্রলীগ থেকেই আমার রাজনীতির হাতেখরি। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলীয় প্রতিটি কর্মসুচীতে আমার অগ্রণী ভুমিকা ছিল। ২০১৪ সালেও আমি আমার রাজনৈতিক কর্মীদের সহায়তায় হেফজতের জ্বালাও- পোড়াও কর্মসূচী নস্যাৎ করে দিয়েছিলাম, সেদিন আমরা না থাকলে হয়তো চট্টগ্রাম শহরেও ভূজপুরের মতো একটি ট্রাজেডির জন্ম হতো।
যা সকলেরই জানা আছে। কিন্তু রহস্যজনক কারনে আওয়ামী লীগের সরকারের আমলেও আমি কোনঠাঁসা হয়ে আছি। আমার লাইসেন্স করা যে অস্ত্র দিয়ে হেফাজত দমন করেছিলাম, অন্যায়ভাবে সেই অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। আমরা যারা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে মাঠে সরব ছিলাম তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছেনা। নির্বাচনের দিনে আমাদের পুলিশের কাছে গিয়ে বসে থাকতে হয়েছে।
এব্যপারে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এব্যপারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি ফৌজুল মুবিন চৌধুরী বলেন আমি ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত, আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবু, বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দীন আহমেদ এমপি, নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে রাজনীতি করেছি।
আওয়ামী লীগের কঠিন দুঃসময়েও ছিলাম, এখনো থাকার চেষ্টা করছি। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আমি প্রায় পঙ্গু হয়ে যাই, দীর্ঘ আড়াই বছরের চিকিৎসায় বর্তমানে একটু সুস্থ হয়েছি। ১৯৮৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সকল কর্মকান্ডে ছিলাম অগ্রভাগে। এবারও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলাম, কিন্তু আমি অসুস্থ থাকায় মানবিক যুবলীগ আমার সিভিটাও গ্রহন করেনি।
যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমার ৩৭ বছরের রাজনৈতিক জীবনে মজিদ খানের শিক্ষা নীতি, ১৯৮৮ সালে ২৪ জানুয়ারী লালদিঘী সমাবেশ (গণহত্যা, নব্বই-এর স্বৈরাচার এরশাদ পতন আন্দোলন, লালাদিঘীতে গোলাম আজমের সমাবেশ প্রতিরোধ, ১৯৯৬ এর ১৫ই ফেব্রুয়ারী বিএনপির একতরফা নির্বাচন প্রতিহত, ১৯৯৬ সালের অসহযোগ আন্দোলন, ২০০১-২০০৮ পর্যন্ত বিএনপি জোট বিরোধী অন্দোলন, ১/১১- এ অনুভূতির আওয়ামী লীগের চরম দুঃসময়ে বাঘা বাঘা নেতারা যখন ঘর থেকে বের হননি, সেদিন (জননেত্রী শেখ হাসিনা আপা গ্রেফতারের পর সকালে) মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে, আমরাই প্রথম চট্টগ্রাম উত্তর ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগ যৌথভাবে চট্টগ্রাম ষ্টেশন রোডে নেত্রীর মুক্তি দাবীতে পুলিশি বাঁধা অতিক্রম করে প্রতিবাদ মিছিল করি। নেত্রী মুক্তি অন্দোলন, নানক ভাইয়ের মামলা প্রত্যাহার ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম ভাইসহ সকল নেতার মুক্তি অন্দোলনে ছিলাম রাজপথে।
প্রীতি / প্রীতি

ভোলাহাটে বিএনপি'র ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ

আন্তর্জাতিক স্বর্ণপদকজয়ী জিহাদের পাশে বিএনপি পরিবার’

ধামইরহাটে তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে বিএনপির উঠান বৈঠক

মোরেলগঞ্জে মহিলা দলের নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

সলঙ্গায় নারী গ্রাম পুলিশের লাশ উদ্ধার

আত্রাইয়ে জামায়াতে ইসলামীর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

নবীনগরে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন

চৌগাছার কাকুড়িয়া গ্রামের মহাকালি মন্দির চৌত্রিশ বছরেও লাগেনি উন্নয়নের

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৬ আসনে মোহনকে সমর্থন দিলো দেলদুয়ার উপজেলা বিএনপি

মেহেরপুরে জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে মৃত শ্রমিকদের মৃত ভাতা প্রদান

ভূরুঙ্গামারীতে নদীর বাঁধ নির্মাণের দাবীতে মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে

নরসিংদীতে সম্মানজনক বেতন ও এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষকদের বিক্ষোভ
