কনকনে শীতে জমে উঠেছে নগরীর শীতবস্ত্র বাজার

শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথেই নগরীর মার্কেটগুলোতে শীতের পোশাক বিক্রি বেড়েছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ফুটপাতে ভাসমান দোকান থেকে শুরু করে নগরীর ছোট-বড় মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। গত চার-পাঁচদিন ধরে খুলনায় কুয়াশাছন্ন আবহাওয়া, হিমেল বাতাস ও শীত একটু বেশি অনুভূত হওয়ায় নগরবাসী শীত মোকাবিলার জন্য গরম পোশাক কিনছেন। এক সপ্তাহ আগে গরম কাপড়ের দাম কম থাকলেও শীতের প্রকোপ বৃদ্ধিও সাথে সাথে বিক্রেতারাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।তবে বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় খুচরা বাজারেও দাম বেড়েছে।
নগরীর ডাকবাংলা রেলওয়ে মার্কেট,শপিং কমপ্লেক্স, নিউ মার্কেটের বিপণি-বিতানগুলোতে শীতের পোশাক কিনতে ভিড় করেছেন ক্রেতারা। কম্বলের দোকানেও ভিড় করেছেন ক্রেতারা। ক্রেতাদের পছন্দের ওপর ভিত্তি করে বিক্রেতারা সাজিয়েছেন হরেক রকমের শীতকালিন সোয়েটার, চাঁদর, জ্যাকেট, ব্লেজার, মাফলার, টুপি,হাতমোজা। সব ধরনের শীতবস্ত্র মিলছে বাজারে। শীতবস্ত্র বিক্রিও চলছে বিরামহীনভাবে। দোকানিরা জানান, ডিসেম্বরের প্রথম থেকেই শীতবস্ত্রের কেনাবেচা শুরু হলেও এক সপ্তাহ ধরে জমে উঠেছে খুচরা বিক্রির বাজার। পূর্বের তুলনায় প্রতিদিনই বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যা। ক্রেতাদের কেউ একা আবার কেউবা পরিবার-পরিজন নিয়ে মার্কেটে এসেছেন। তারা ঘুরে-ফিরে দেখেশুনে পছন্দসই বিভিন্ন ধরনের সোয়েটার, জ্যাকেট, কার্ডিগান, শালচাদর, ব্লেজার, কম্বল, কানটুপি, হাতমোজা, পামোজা, হ্যান্ডগ্লাভস কিনেছেন। ছোটদের থেকে শুরু করে সব বয়সের ক্রেতাদের মাঝে পোষাক কেনার ব্যস্ততা দেখা গেছে।
রেলওয়ে মার্কেটের একটি দোকানে সোয়েটার নিয়ে বিক্রেতার সাথে দর কষাকষি করতে দেখা যায় আসমা বেগমকে। তিনি বলেন, আমার ছেলের স্কুলের ইউনিফর্মের সঙ্গে মানানসই একটি সোয়েটার দরকার ছিল। সেই অনুযায়ী সোয়েটার পছন্দ করে কিনেছি।
রেলওয়ে মার্কেটের একটি দোকানে ব্লেজার কিনতে আসা শিক্ষার্থী রাফসান রাশেদ বলেন, ভালো মানের ব্লেজার কিনতে এসেছি। কিন্তু কিছুদিন আগে যে দাম ছিল তার থেকে দুশত থেকে তিনশত দাম বেড়েছে।
রেলওয়ে মার্কেটের একটি সোয়েটার দোকানের মালিক আহমেদ বলেন, গ্রাহকরা ভালো মানের পণ্য কিনতে চাইলে একটু বেশি মূল্য দিতে হবে। কিন্তু কিছু গ্রাহক ভালো মানের পণ্য চাইলেও উপযুক্ত মূল্য দিতে নারাজ। তিনি বলেন শ্রেনির লোকেরা এখন এই বাজারে আসেন, কারণ তারা এখানে তুলনায় কম দামে মানসম্পন্ন পণ্য পান।
রেলওয়ে মার্কেটের অন্য একটি জ্যাকেটের দোকানে কথা বললে বিক্রেতা জানান,তার দোকানে বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেট ১,২০০ টাকা থেকে ৪,৫০০ টাকায় এবং সোয়েটার ৬০০ টাকা থেকে ১,৮০০ টাকায় বিক্রি হয়। তিনি বলেন, মূলত তরুণরাই তার দোকানের ক্রেতা।
খুলনার ডাকবাংলা মোড়ের ফুটপাতে শীতবস্ত্র বিক্রেতা সাইদুল হক বলেন, শীত আসার আগে ফুটপাতে শার্ট-প্যান্ট ও টি-শার্ট বিক্রি করতেন। কিন্তু শীতের সময় তিনি গরম কাপড় বিক্রি শুরু করেন। নতুনের পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে পুরোনো শীতের কাপড়ও। দামে সস্তা হওয়ায় নিম্নবিত্তের ক্রেতাদের কাছে এই কাপড়ের চাহিদা বেশি। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় শীতবস্ত্র বিক্রি অনেক বেড়েছে।
নগরীর টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ সুলতানা বেগম তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য ডাকবাংলা সংলগ্ন শপিং কমপ্লেক্স মার্কেটে এসেছেন। তিনি ছেলের জন্য সোয়েটার এবং জ্যাকেট ক্রয়ের জন্য একটি গরম কাপড়ের দোকানে গরম কাপড় দেখছিলেন। গৃহবধূর দামাদামির জবাবে দোকানি বলেন, আর একটু বেশি শীত পড়লে দাম আরো বেড়ে যাবে। চাহিদা এখন অনেক বেশি। তাই যাদের কাছ থেকে মাল কিনে আনি তারাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
ডাকবাংলা মার্কেট রোড ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতে ভ্যানের উপর বেশিরভাগ পোশাক এক দামে বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাতের সোয়েটার বিক্রেতা কবির বলেন, বড় বড় দোকানিরা বেশি দাম চাইলেও কাস্টমার তেমন দামাদামি করেন না। কিন্তু ফুটপাত থেকে কিনতে আসলে দাম যা চাওয়া হয় তার অর্ধেক দাম বলেন। এ কারণে একদামে বিক্রি করলে দামাদামি করতে পারে না কাস্টমাররা। একদামে কারও মন চাইলে কিনবেন আর মন না চাইলে কিনবেন না।
নগরীর শিববাড়ী মোড়ের একটি ব্র্যান্ডের দোকান থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় একটি ব্লেজার কিনেছেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা খালিশপুরের বাসিন্দা আকরাম খান। তিনি বলেন, গত দু’দিন বেশ শীত পড়েছে। তাই আজ অফিস শেষে ব্লেজারটি কিনতে আসলাম। শীত পড়েছে বিধায় দাম পূর্বের তুলনায় একটু বেশি মনে হলো বলে তিনি জানান।
শিববাড়ি মোড়ের ব্রান্ডের শোরুমগুলো ঘুরে দেখা যায়, ব্লেজার, সোয়েটার, কার্ডিগান, চামড়ার জ্যাকেট, গ্যাবার্ডিন জ্যাকেট, মাফলার, গ্লাভস ও উলেন ক্যাপসহ বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় বিক্রি হচ্ছে। ব্লেজার ২২০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা, জ্যাকেট ২০০০ টাকা থেকে ৪৫০০ টাকা এবং মাফলার, উলেন ক্যাপ ও গ্লাভসের প্যাকেজ মূল্য ৭০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকার মধ্যে বলে জানান বিক্রয়কর্মীরা।
নিউ মার্কেটের একটি লেডিস আইটেমের দোকানের মালিক তানভীর হোসেন বলেন, তার দোকানে নারীদের শীতের পোশাক তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি গৃহিণী ও চাকরিজীবীরা তাদের পছন্দের পোশাক কিনতে তার দোকানে আসেন।
নিউমার্কেট এলাকার হকার আব্দুল কাদের বলেন, এবারের শীত মৌসুমে তিনি অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তিনি বলেন, তার কাছে উলের ক্যাপ, স্কার্ফ, গ্লাভসসহ আট প্রকারের পণ্য রয়েছে এবং মানভেদে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে সোয়েটার বিক্রি করছি। তিনি আরো বলেন, আমাদের মতো মধ্যম আয়ের লোকেরা এখানে আসে। তুলনামূলক কম দামে মানসম্পন্ন জিনিস পাওয়া যায় বলে তিনি জানান।
ব্যবসায়ীরা জানান, শীত মৌসুমকে ঘিরে কমবেশি সব কাপড় ব্যবসায়ীদেরই বড় ধরনের একটি ইনভেস্ট থাকে। তবে গতবারের তুলনায় কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে। কারণ বিদেশ থেকে আমদানি করা সব পণ্যেরই দাম বেড়েছে। বিশ্ববাজারেও অস্থিরতা বেড়েছে। সেই প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়েছে। তবুও এ বছর ভালো ব্যবসা হবে বলে ব্যবসায়ীরা আশা ব্যক্ত করেন।
এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়া বাজারে সরকারি সড়ক গিলে খাচ্ছে তিনতলা ভবন

জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন শেখ সাদী ?

যমুনা ব্যাংকের ঢাকা উত্তর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ম্যানেজারস’ মিটিং অনুষ্ঠিত

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
