বরিশালে একদিনে আরো ১৮ জনের মৃত্যু : খুলনার ৫ হাসপাতালে ১৩
বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬১১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। যা নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৩৮৯ জনে। মোট আক্রান্ত ২৭ হাজার ৩৮৯ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৭ হাজার ২৮৯ জন। পাশাপাশি একই সময়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসাপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ১২ জন এবং করোনা ওয়ার্ডে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গেল ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে পটুয়াখালীতে ২ জন, ভোলায় একজন, পিরোজপুরে একজন এবং বরগুনায় ২ জনসহ মোট ৬ জন করোনা রোগীর মৃত্যু শনাক্ত হয়েছে। যা নিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩৯৩ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস।
আক্রান্ত সংখ্যায় বরিশাল জেলায় নতুন সর্বোচ্চ ২৬৩ জন নিয়ে মোট ১১ হাজার ৬৫৭ জন, পটুয়াখালী জেলায় নতুন ৬৩ জন নিয়ে মোট ৩ হাজার ৩৯২ জন, ভোলা জেলায় নতুন ৬৪ জনসহ মোট ২ হাজার ৭১২ জন, পিরোজপুর জেলায় নতুন ৬৩ জনসহ মোট ৩ হাজার ৭৬৭ জন, বরগুনা জেলায় নতুন ৭৯ জন নিয়ে মোট আক্রান্ত ২ হাজার ৩৭১ জন এবং ঝালকাঠি জেলায় নতুন ৭৯ জন শনাক্ত নিয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৯০ জন।
এদিকে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ১২ জনের এবং করোনা ওয়ার্ডে একজনের মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে শুধু শেবাচিম হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডেই উপসর্গ নিয়ে ৬৮০ জন এবং করোনা ওয়ার্ডে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা ৬৮০ জনের মধ্যে ৪৩ জনের কোভিড টেস্টের রিপোর্ট এখনো হাতে পাওয়া যায়নি।
ওই হাসপাতাল পরিচালক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার) সকাল পর্যন্ত শেবাচিমের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২২ জন ও করোনা ওয়ার্ডে ২৪ জন ভর্তি হয়েছেন। করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে এখন ৩০৫ জন চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে ১১৫ জন করোনা ওয়ার্ডে এবং ১৯০ জন আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১৮৯ জন করোনা পরীক্ষা করান। এর মধ্যে ৩৫.৯৭ শতাংশ পজিটিভ শনাক্তের হার।
খুলনার ৫ হাসপাতালে মৃত্যু আরো ১৩
এদিকে, খুলনার পাঁচটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরো ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় তাদের মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া ১৩ জনের মধ্যে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে পাঁচজন, জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একজন, বেসরকারি গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একজন, বেসরকারি সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনজন ও শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে তিনজন রয়েছেন।
এর আগে সোমবার (১৯ জুলাই) খুলনায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়। শুক্রবার (৯ জুলাই) ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যা ছিল এ পর্যন্ত খুলনার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
করোনা হাসপাতালের ফোকালপার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় চারজন ও উপসর্গ নিয়ে একজন মিলে মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন- খুলনার আব্দুর রশিদ (৬৭), খালিশপুরের মুক্তার শেখ (৯০), মিয়াপাড়ার এ টি এম আনিসুজ্জামান ও রূপসার শুশান্ত দত্ত (৫৫)।
জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে বাগেরহাটের কচুয়ার ফারজানা (৪৮) নামে এক রোগী মারা গেছেন।
বেসরকারি গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মালিক ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুলনার দৌলতপুরের পাবলা বণিকপাড়ার রঞ্জন কুমার (৬০) নামে এক রোগী মারা গেছেন।
সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন- খুলনার রূপসার সামন্তসেনা এলাকার শাজান ফকির (৬২), বটিয়াঘাটার বিন্দু প্রকাশ গোলদার (৭০) ও পিরোজপুরের পশ্চিম শেখপুরের প্রিয়াঙ্কা (২৫)।
শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের ফোকালপার্সন ডা. প্রকাশ দেবনাথ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে খুলনার রূপসার আইচগাতীর জাহানারা (৬০), বড়বাজার এলাকার অলোক রায় (৫৪) ও নড়াইল কালিয়ার কামাল মোস্তফা (৭২) নামে তিন রোগী মারা গেছেন।
জামান / জামান