ঘরের মেঝে কাঁপে, এই ভয়ে আসে না স্বাস্থ্যকর্মী

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার যমুনা নদীর একটি চরের নাম দেলুয়াবাড়ী। উপজেলা শহর থেকে চরের দূরত্ব মাত্র ১০ থেকে ১১ কিলোমিটার হলেও ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় চরটি অনেক দুর্গম।
পূর্ব দেলুয়াবাড়ী, মধ্য দেলুয়াবাড়ী, পশ্চিম দেলুয়াবাড়ী, জামিরা, ঘর ভাঙ্গা, বাগবাড়ীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম মিলে এই চরে প্রায় ১০-১১ হাজার মানুষের বাস। সরকার ২০১৬ সালে এই চরে একটি পাকা কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করলেও নেই কোনো স্বাস্থ্যকর্মী (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার)। যে কারণে সামান্য চিকিৎসা নিতে এখানকার বাসিন্দাদের দুর্গম চর পাড়ি দিয়ে যেতে হয় উপজেলা বা জেলা সদরে।
দীর্ঘদিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিকটি অব্যবহৃত পড়ে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে ভেতরের আসবাবপত্র। জঙ্গলে ভরে গেছে ক্লিনিক প্রাঙ্গণ। গ্রামবাসীরা দিনের বেলাও সেখানে উঁকি দিতে ভয় পান। তারা ক্লিনিকটির নাম দিয়েছেন 'ভুতের বাড়ি'।এই গ্রামের বাসিন্দা জাবেদা বেগম (৬৫) বলেন, 'ক্লিনিকটি যখন নির্মাণ করা হয়, তখন একজন স্বাস্থ্যকর্মী এসেছিলেন এখানে। ঘরের মেঝে নাকি কাঁপে, এই ভয়ে তিনি আর আসেননি। এরপর থেকেই ক্লিনিকটি ভুতের বাড়ি নাম পরিচিতি পায়। ক্লিনিকটি রাস্তার সঙ্গে হলেও দিনের বেলায় কেউ আর উঁকি দেয় না।'
ওমর আলী দীর্ঘ ৩৫ বছর এই গ্রামের ইউপি সদস্য (৯ নম্বর ওয়ার্ড, ফুলছড়ি ইউনিয়ন) হিসেবে টানা কয়েক বার নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তিনি সকালের সময় কে বলেন, 'দেলুয়াবাড়ী চরের বয়স প্রায় ৪০ বছর। শুরু থেকেই ক্লিনিকটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। ফলে এই গ্রামের সাড়ে ৩ হাজার ভোটার এবং ১০ হাজার মানুষ প্রাথমিক চিকিৎসাও ঠিকঠাক পাচ্ছে না। চিকিৎসার জন্য দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে আমাদের শহরে যেতে হয়।'
'এই চরের কোনো অন্তঃস্বত্ত্বা নারীকে হাসপাতালে নিতে হলে খুব বিপদে পড়তে হয় আমাদের এলাকার মানুষের। শুকনো মৌসুমে রাস্তা-ঘাট এবং যানবাহন না থাকায় প্রথমে জলচৌকিতে করে ৩ কিলোমিটার হেঁটে, নৌকায় ঘাটে নিয়ে নদী পার হয়ে তারপর অন্য কোনো যানবাহনে হাসপাতালে নিতে হয়। এতে অনেকের মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়,' বলেন ওমর আলী।
'ধান, গম, আলু, ভুট্টা, সরিষা, পাট, বেগুন, মরিচ ও নানা ধরনের শাক-সবজিসহ প্রায় ২০ ধরনের ফসল এখানে হয়। চরে আমাদের কারো অর্থনৈতিক অভাব নেই। গ্রামের অনেক পুরুষ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। হাইস্কুল না থাকলেও আছে ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যুৎও এসেছে দুবছর আগে। নেই শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থা ও চিকিৎসা সেবা।
এই গ্রামে কোনো স্বাস্থ্যকর্মী আসেন না। শুধু মাসে একবার স্বাস্থ্য সহকারীরা আসেন বাচ্চাদের টিকা দিতে, জানান এই ইউপি সদস্য।সম্প্রতি গ্রামটি ঘুরে অধিকাংশ বাড়িতে দেখা যায়, কিশোরী বয়সে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। তাদের ঘরে ৩ থেকে ৫টি পর্যন্ত সন্তান রয়েছে।স্থায়ী বাসিন্দা সিমা বেগমের বয়স এখন ২১ বছর। সিমা জানান, বিয়ের পরে তিনি এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছেন। সিমা এখন ২ সন্তানের জননী। প্রথম কন্যার বয়স সাড়ে ৩ বছর এবং দ্বিতীয় কন্যার বয়স এখন দেড় বছর।
সিমা বলেন, 'স্বামীর ইচ্ছা একটি ছেলে সন্তান নেবেন।' তাই আরও এক সন্তানের প্রত্যাশা করছেন তারা।আজিনা বেগমের বয়স এখন ২৬ বছর। এই বয়সে তিনি ৩ সন্তানের জননী। প্রথম কন্যার বয়স ১১ বছর, দ্বিতীয় কন্যার বয়স ৮ বছর ও তৃতীয় কন্যার বয়স ৪ বছর। আজিনার বিয়ে হয়েছিল মাত্র ১৪ বছর বয়সে। ছেলে সন্তানের জন্য আরও সন্তান আশা করছে তার পরিবার।কমিউনিটি ক্লিনিকের বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. রফিকুজ্জামান সকালের সময় কে বলেন, 'আমার জানা মতে দেলুয়াবাড়ী ক্লিনিকটি ২০১৬ সালে নির্মিত হয়েছে। ক্লিনিকটিতে বর্তমানে কোনো স্বাস্থ্যকর্মী (সিএইচসিপি) নেই। ২০১৭ সালে একজন স্বাস্থ্যকর্মী সেখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। অন্য একটি চাকরি পেয়ে তিনি আমাদের চাকরি ছেড়ে দেন।'দেলুয়াবাড়ী ক্লিনিকটি ভেঙে পুনর্নির্মাণ করা হবে।
এমএসএম / এমএসএম

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মির্জাগঞ্জে মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত

বগুড়ার শেরপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা, হাসপাতালে ভর্তি

বোয়ালমারীতে প্রাণি সম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে হাঁস বিতরণ কর্মসূচি পালন
