খুলনায় ডাক্তার ও ভূক্তোভূগির পাল্টা-পাল্টি মামলা

শ্লীলতাহানি ও শিশুর অঙ্গহানীর অভিযোগে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বুধবার দুপুরে নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী নুসরাত আরা ময়না। এতে ডাঃ নিশাত আব্দুল্লাহ ও হক নার্সিং হোমের মালিক ডাঃ নুরুল হক ফকিরকে আসামি করা হয়। অন্যদিকে হামলার অভিযোগে গত মঙ্গলবার শহিদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিশাত আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে নুসরাত আরা ময়নার স্বামী পুলিশের এএসআই নাইম শেখের বিরুদ্ধে একই থানায় মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী নুসরাত আরা ময়না উল্লেখ করেন: তার স্বামীর কর্মস্থল সাতক্ষীরাতে হওয়ার কারনে তিনি সেখানেই অবস্থান করেন। তার মেয়ের চিকিৎসার জন্য শহিদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ডাঃ নিশাত আব্দুল্লাহকে দেখালে তিনি মেয়ের হাতের আঙুলের অপারেশন করানোর কথা বলেন এবং তিনি বলেন আবু নাসের হাসপাতালে অপারেশন না করিয়ে ময়লাপোতা হক নার্সিং হোম থেকে অপারেশন করালে ভালো হবে ।
কারণ তিনি হক নার্সিং হোমে রোগী দেখেন ও অপারেশন করেন। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী গত ১৭ই জানুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে ভুক্তোভগি তার মেয়েকে অপারেশন করানোর জন্য নগরীর শেখপাড়ার হক নার্সিং হোমে ভর্তি করান। ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ডাঃ নিশাত তার মেয়ের হাতের আঙুল অপারেশন করেন। অপারেশন করার পর থেকে দিন দিন তার মেয়ের হাতের আঙুল কালো হতে থাকে।
এ বিষয়ে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বললে তিনি তার মেয়ের আঙুলের ছবি হোয়াটসঅ্যাপে দিতে বলেন। আমি তার কথা অনুযায়ী সরল বিশ্বাসে তার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মেয়ের আঙুলের ছবি পাঠাই। পরবর্তীতে সে তার মেয়ের চিকিৎসার সুযোগ নিয়ে আমার সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য তার ব্যবহৃত মোবাইলে নম্বরে বিভিন্ন সময় তার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে কল করে। তার মোবাইল নম্বরে তার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে গত ১১ই ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ৩২ মিনিটে ‘ঘুম?’ রাত ১২টা ৩৪ মিনিটে ‘রাগ?’ রাত ১২টা ৩৮ মিনিটে ‘কথা বলা যাবে?’সহ বিভিন্ন সময় আপত্তিকর বার্তা প্রেরণ করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় ফোন করে তাকে একা দেখা করতে বলেন। তার মেয়ের সু-চিকিৎসার কথা চিন্তা করে চিকিৎসকের মোবাইলের কল ও ম্যাসেজের বিষয়ে কাউকে কিছু জানাননি তিনি।তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারী তার মেয়েকে নিয়ে শেখপাড়া হক নার্সিং হোমের চেম্বারে ড্রেসিং করানোর জন্য যেতে বলেন। সন্ধ্যায় সেখানে গেলেও তাকে প্রায় দেড় ঘণ্টা বসিয়ে রাখেন। রাত সাড়ে ৮টায় তার মেয়েকে নিয়ে অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে গেলে নিশাত আবদুল্লাহ তাকে বিভিন্ন প্রকার আপত্তিকর কথাবার্তা বলার একপর্যায়ে ভুক্তোভূগির হাত ধরে টেনে তার কাছে নেয়ার চেষ্টা করেন।
তার কুমতলব বুঝতে পেরে মেয়েকে নিয়ে ভূক্তোভূগি অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে আসেন। বিষয়টি ক্লিনিক মালিককে জানালে তিনি ডাঃ নিশাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাকে কাউকে কিছু না বলার জন্য শাসান। এজাহারে বলা হয়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আবু নাসের হাসপাতালে ওই ডাক্তারের কাছে গেলে তার নির্দেশে হাসপাতালে থাকা ফিজিও থেরাপিস্ট লিপি নামে একজন আমার মেয়ের হাতের আঙুল ড্রেসিং করে দেন। পরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমার মেয়ের হাতের আঙুল ব্যান্ডেজসহ খুলে পড়ে গেলে ডাক্তার নিশাতকে তিনি ফোনে জানান ও হক নাসিং হোমে যান। সেখানে তার মেয়ের চিকিৎসা করতে অনীহা প্রকাশ করেন ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন রকম কথাবার্তা বলেন। তখন তিনি ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানালে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে তার মেয়ে আঙুল ব্যান্ডেজ করে দেন। ভূক্তোভূগির ওপর অসৎ উদ্দেশ্যে চরিতার্থ করতে না পেরে অন্য আসামিদের পরস্পর যোগসাজসে তার মেয়ে অথৈয়ের (৬) বাম হাতের আঙুলে গুরুতর আঘাত দিয়ে আঙুল স্থায়ীভাবে বিকলাঙ্গ করে অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন বলে তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন।
ডাঃ শেখ নিশাতের মামলা : গত মঙ্গলবার ডাঃ শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন,গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর শেখপাড়ার হক নার্সিং হোমে একজন রোগীর সার্জারি কাজে তিনি ব্যস্ত ছিলেন। জটিল অপারেশন বিধায় দীর্ঘ সময় অপারেশন চলছিল। রাত ১০টায় সাতক্ষীরা পুলিশ বিভাগে কর্মরত এএসআই নাঈম ও তার স্ত্রী ৪/৫ জন লোক নিয়ে আমার অপারেশন থিয়েটারের দরজায় লাথি মারা শুরু করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলেন,তার মেয়ে অথৈকে এক মাস আগে আঙুল অপারেশন করেছিলি, আমার মেয়ের আঙুল ভালো হয়নি। এর জন্য তুই দায়ী। এখনই ১০ লাখ টাকা আমার মেয়ের আঙ্গুলের জন্য ক্ষতিপূরণ দিবি। এরপর এএসআই নাঈম তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কিল ঘুষি লাথি মারতে থাকেন। এ সময় তার স্ত্রী ও সঙ্গীরা ডাক্তারকে ঘিরে রাখেন। এক পর্যায়ে এএসআই নাঈম গলা টিপে ধরে তার শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করতে থাকেন। এ সময় তার স্ত্রী তার দু’হাত চেপে ধরেন এবং অন্য অজ্ঞাতনামারা ডাক্তারকে মারপিট করতে থাকেন, তারা ক্লিনিকের ওটিতে ভাঙচুরও চালান বলে এজাহারে উল্লেখ করেন। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা নার্সসহ অন্য সহযোগীরা এবং ক্লিনিকের মালিক ডাঃ নুরুল হক ফকির দৌড়ে এসে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করেন। ডা: নিশাত আব্দুল্লাহ শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে দাবি করেন।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মমতাজুল হক জানান, উভয়পক্ষ থানায় মামলা করেছে। বুধবার ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে শ্লীলতাহানী ও শিশুর অঙ্গহানীর অভিযোগ তুলে ডাঃ নিশাত আব্দুল্লাহ ও হক নার্সিং হোমের মালিক ডাঃ নুরুল হক ফকিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার ডাঃ নিশাত আব্দুল্লাাহ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। দু’টি মামলার আসামিকেই গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে। পাশাপাশি এ ঘটনার তদন্ত সুক্ষ্মভাবে করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়ায় সরকারি রাস্তা দখল, ঘরবন্দি শিরিনা খাতুন

সান্তাহারে ইয়াবা ট্যাবলেট ও প্রাইভেট কারসহ দুইজন গ্রেপ্তার

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে গরুর গাড়ি মার্কা প্রার্থীর সমর্থনে সভা

কাউনিয়ায় এইচএসসি ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা নেওয়ার অভিযোগে

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে গাজীপুরে গাছের চারা বিতরণ

দুই সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালিত

পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জন করে চটের ব্যাগ ব্যবহার করুন- কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সোনাগাজীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গরু চোরসহ গ্রেফতার-০৪, চোরাই গরু উদ্ধার

সীমান্তে বিপুল পরিমান অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

ভূরুঙ্গামারীতে বিএনপির নেতাদের নামে অপপ্রচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এভাবেই নষ্ট হচ্ছে পৌরসভার অর্ধ কোটি টাকার সম্পদ

টাকার বিনিময়ে সনদ বিক্রি, শিক্ষার্থী নেই তবুও চলছে এমপিওভুক্ত কলেজ
