খাস জমিতে লবণ চাষে শক্তিশালী সিন্ডিকেটঃ গিলে খাচ্ছে বেড়িবাঁধ রক্ষার বন প্রকল্প

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ রক্ষায় সরকারি ভাবে গড়েতোলা বনায়ন প্রকল্পের গাছ কেটে লবণমাঠ তৈরি করে উঝাড় করা হয়েছে দ্বীপ রক্ষার সেই ম্যানগ্রুোভ ফরেস্ট৷ বনবিভাগের অবহেলার কারণে একটু আধটু যা আছে তাও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
এতে ঝুঁকিতে পড়েছে দ্বিপ রক্ষা বেড়িবাঁধ, জীব বৈচিত্র এবং উপজেলার দেড় লক্ষ মানুষের জীবন ও জীবিকা৷ লিজের নামে সরকারি খাস জমি দখলে নিয়ে কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। নিজেদের ফায়দা লুটতে দ্বীপের অস্তিত্বকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে তারা৷ এভাবে চলতে থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যে কুতুবদিয়া সমুদ্রগর্ভে বিলীন হতে পারে বলে মন্তব্য বিশিষ্টজনদের।নকিন্তু উক্ত বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা প্রশাসনের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা।
জানা যায়, কুতুবদিয়া বেড়িবাঁধের ভিতরে-বাহিরে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ৮৫৪ একর লবণ মাঠ উপযোগী ভূমি রয়েছে। জমিসমূহ বিগত ২০১৬ খ্রীঃ থেকে একসনা লিজ দেয়া বন্ধ রয়েছে। উপকূলীয় বনবিভাগ বেড়িবাঁধের বাহিরে কিছু জমিতে গাছ রোপনের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু নানা কারনে সফল হতে পারেনি কোনবার। ফলে এসব জমিতে থাকা বনায়নের গাছ কেটে লবণ মাঠসহ মাছের ঘের তৈরি করে স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তারকারী কয়েকটি সিন্ডিকেট।
স্থানীয়রা জানান, প্রভাবশালী এসব সিন্ডিকেটের সাথে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। তাদের সাথে আঁতাত করে সরকারি এই জমিগুলোতে প্রতিবছর কোটি টাকার ব্যবসা করে এই সিন্ডিকেটগুলো। সেখান থেকে লাভের একটি অংশ চলে যায় কর্মকর্তাদের পকেটে। ফলে সরকার প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
সরেজমিন বড়ঘোপ ইস্টিমার ঘাট ও আকবর বলির ঘাট এলাকায় সরকারি জমিতে লবণ উৎপাদনকালে জড়িতদের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের।
লবণ উৎপাদনকারীরা জানান, তারা প্রকৃত লবণ চাষি। কিন্তু তাদের কোন জমি নেই। সরকার থেকেও কোন একসনা দাখিলা নেই। তৃতীয় একটি সিন্ডিকেটের নিকট থেকে ৩০/৪০ হাজার টাকা দরে প্রতিভাগ লবণ মাঠ বর্গা নেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই চাষি জানান, স্টিমার ঘাট এলাকায় প্রায় দেড়শত ভাগ লবণ মাঠ রয়েছে। প্রতিভাগে ৪০/৬০ শতক জমি থাকে। লবণ উৎপাদনে মাঠে নেমেই বাঁধার সম্মুখীন হন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করার কথা বলে বড়ঘোপ মিয়ার পড়ার খোকন নামের বিদেশ ফেরত এক চাষি তাদের কাছ থেকে প্রতিভাগে ৩ হাজার টাকা করে নিয়েছেন।
অনুসন্ধানের সূত্র ধরে খোকন নামের ওই ব্যক্তির সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। জানতে চাইলে তিনি টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে তিনি ওই টাকা ইউএনও কে দেননি বলে জানান।
তিনি জানান, নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেওয়ার জন্য চাষীদের কাছ থেকে টাকা তুলেছেন ঠিকই। কিন্তু ওই টাকা তিনি ইউএনওকে দেননি।
দিয়েছেন ছাবের কোম্পানি নামের স্থানীয় এক নেতার নিয়োগকৃত ফারুক নামের ব্যক্তিকে।
সেই সূত্র ধরে কথা হয় ছাবের কোম্পানির সাথে। তিনি জানান, তিনি কারও কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেননি। তিনি নিজের লবণ মাঠের পাশাপাশি অন্যান্যদের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে লবণ উৎপাদন করছেন। অন্যান্যদের মধ্যে কয়েকজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকও আছেন বলে জানান।
এদিকে, উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের আকবর বলির ঘাটের উত্তর পাশে থাকা বনবিভাগের সৃজিত প্যারাবন বনের গাছ কেটে করা হয়েছে লবণ মাঠ ও মাছের ঘের। এখানকার স্থানীয় প্রভাবশালীরা সরকারি এসব জমি জবরদখল করে রেখেছেন বলে জানান স্থানীয়রা। অনুসন্ধানে দেখা যায় এলাকার সাবেক মেম্বার মোঃ ফারুক ও তার ভাইয়েরা এইসব অপকর্মের সাথে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগসহ থানায় মামলা রয়েছে। দুদকের অভিযানে প্যারাবন কেটে লবণ মাট ও মাছের ঘের তৈরি করার সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে বিহিত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়। কিন্তু অলৌকিকভাবে তাদের কিছু হয় না। এখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে।
স্থানীয়দের দেয়া নামের সূত্র ধরে কথা হয় স্থানীয় সাবেক মেম্বার ফারুকের সাথে। তিনি প্রথম দিকে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। পরে একাধিকবার যোগাযোগ করে কিছু শর্তে তিনি কথা বলতে রাজি হন। তিনি জানান, উপকূলীয় বনবিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রায় ৪০ একর খাস জমিতে লবণ মাঠ করছেন তারা। এসব জমিতে লবণ মাঠ তৈরি করতে প্রচুর টাকা খরচ হয়েছে তাদের। তবে সরকারি জমিতে লবণ মাঠ তৈরি করতে কাকে কত টাকা দিয়েছেন তা জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
কুতুবদিয়ায় বনবিভাগের পতিত সরকারি জমিতে প্যারাবন কেটে লবণ মাঠ তৈরির বিষয়ে
কুতুবদিয়া উপকূলীয় বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শামীম রেজা জানান, বনবিভাগের কোন জমিতে লবণ চাষ হচ্ছে না। লবণ চাষিদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রিদুয়ানুল মোস্তফা জানান, কুতুবদিয়ায় মোট ৮শ ৫৪ একর লবণ মাঠ উপযোগী সরকারি খাসজমি রয়েছে।সেখানে একসনা বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে ৫শ ৬৩ একর। ২০১৬ সালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সকল প্রকার বন্দোবস্ত বাতিল করেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জর্জ মিত্র চাকমা জানান, সরকারি খাস জমিতে লবণ মাঠ তৈরি করে সরকারি খাজনা ফাঁকি দেয়ার বিষয়টি অবগত নন। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চজ্ঞ্যা জানান, বিষয়টি সঠিকভাবে জেনে জেলা সমন্বয় সভায় অবহিত করা হবে।
এমএসএম / এমএসএম

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মির্জাগঞ্জে মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত

বগুড়ার শেরপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা, হাসপাতালে ভর্তি

বোয়ালমারীতে প্রাণি সম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে হাঁস বিতরণ কর্মসূচি পালন
