ফুলছড়িতে বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী কুয়াগুলো

বর্তমানে সুপেয় পানি পানের জন্য আধুনিক বহুমূখি ব্যবস্থা থাকলেও এক সময় কুয়া বা ইদারাই ছিল পানযোগ্য পানি পাওয়ার একমাত্র ভরসা। গ্রামীণ ঐতিহ্যের এইসব কুয়া এখন প্রয়োজনহীন হয়ে পড়ায় তা এখন একেবারেই বিলুপ্তির পথে। অথচ এই কুয়া বা ইন্দীরাই এক সময় অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং পানি পানের কার্যকরি মাধ্যম ছিল গ্রামের সবার কাছে। কালের বিবর্তনে প্রায় হারিয়ে যাওয়া এই কুয়া বা ইন্দীরা নতুন প্রজন্মের কাছে এখন একেবারে অচেনা। গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নেই আশির দশকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চালে বসবাসকারী প্রায় সবাই সুপেয় পানি জন্য গ্রামের মানুষ চার থেকে পাঁচটি বা তার অধিক পরিবার মিলে একটি কুয়ার পানি ব্যবহার করতো ।
তবে গ্রামবাসী গভীর নলকূপ পেয়ে অনেক আগেই কুয়ার পানি ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ কুয়ার পানি উত্তোলন করতে অনেক কষ্ট ও ঝুঁকি রয়েছে। ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালি ইউনিয়নের কিছু কিছু বাড়িতে কুয়া দেখা গেছে যেগুলোয় পরিত্যক্ত অবস্থায়, অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে । কুয়ার পানি তারা আর এখন কেউ ব্যবহার করেনা।
দক্ষিণ বুড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুজোহা বাবলু বলেন, কুয়ার পানি এখনও আমাদের কাছে নিরাপদ। এ পানি সব সময়ের জন্য ভাল থাকে। কুয়ার পানিতে গোসল করা অনেকটা আরামদায়ক। কুয়ের পানিতে আর্সেনিক ও আয়রন নেই। ফুলছড়ি উপজেলার গ্রামে গ্রামে ও পাড়ায় মহল্লায় কুয়া ছিলো। আধুনিকতার ছোঁয়ায় কুয়াগুলো আজ বিলুপ্ত । উপজেলার কিছু স্থানে কুয়া টিকে থাকায় দিচ্ছে ঐতিহ্য জানান । তবে এখনও অনেকের বাড়িতে কুয়া রয়েছে। অনেক স্থানে কুয়ার রক্ষণাবেক্ষণ না করায় নষ্ট হয়ে ভরাট হয়েগেছে।
ফুলছড়ি উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম যাদু জানান, বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা অন্তর্জালে হাজারো রকম বিনোদনের ভিড়ে কখনো চোখেই দেখেনি দড়ি দিয়ে মাটির গভীর থেকে পানি টেনে তোলার অপরূপ দৃশ্য। আজকাল হয়তো আর কেউ সেসব গল্পও শোনেনা গ্রামের শ্যামল রমণীরা পানির জন্য কুয়ার পাশে কিভাবে লাইন ধরে দাড়িয়ে থাকতো। প্রয়োজন হারানোয় হাজার বছর ধরে মানুষের তৃষ্ণা মিটিয়ে আসা বাঙালী সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান এই কুয়া মানুষের স্মৃতি থেকেও আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় হালিমা বেগম ৭৫ এর সাথে। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে অতীতের নানা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘অন্তত ১০ থেকে ১৫ ফুট গোল গর্ত করে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ফুট গভীর মাটি খুড়ে বালু বের করে এইসব কুপ বা ইদারা তৈরি করা হত।’
পরিবেশ প্রেমী জাহাঙ্গীর কবির তনু বলেন, কুয়ার পানি সব সময় ঠান্ডা থাকে। কুয়ার মুখ ঢেকে রাখলে পানি নষ্ট হয় না।তবুও কেউ কেউ এখনো স্মৃতি হাতরে সেই আগের দিনের ধ্যান ধারণা আকরে ধরে শল্য চিকিৎসা অথবা অন্য কোন প্রয়োজনে খুজতে যান দূরের কোন গ্রামে কুয়োর পানি। কুয়া পাওয়া দুষ্কর হলেও এখনো পুরাতন মানুষেরা মনে করেন সবচেয়ে বিশুদ্ধ পানির আঁধার হলো কুয়া। হয়তো এরকম কিছু মানুষের প্রয়োজনেই কালের স্বাক্ষী হয়ে ফুলছড়ি উপজেলার কোথাও কোথাও গ্রামীণ ঐতিহ্যকে বুকের উপর উঁচু করে ধরে আছে কয়েকটি কুয়া। তবুও হাতে গোনা যে কয়টি কুয়া উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে চোখে পড়ে সেগুলোও অকেজো হয়ে আছে সংস্কারের অভাবে তথ্যমতে ফুলছড়ি উপজেলার দক্ষিণ বুড়াইল গ্রামে, আমজাদ মাষ্টারের বাড়ির পিছনে একটি ,খুলুপড়াগ্রামে ছবদুল মিয়ার বাড়ির পিছনে একটি কুয়া অকেজো হয়ে পড়ে আছে প্রায় তিন যুগ ধরে।এছাড়াও উত্তর বুড়াইল গ্রামে একটি, গজাড়িয়া ইউনিয়নের কাতলামাড়ি গ্রামে দুইটি, উড়িয়া ইউনিয়নে মধ্য উড়িয়া গ্রামে একটিসহ আরো অনেক স্থানে কুয়া কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে দীর্ঘ দিন ধরে।সংস্কার না করলে যে কয়টি কুয়া আছে এখনো সেগুলোও একদিন হারিয়ে যাবে।
এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়া বাজারে সরকারি সড়ক গিলে খাচ্ছে তিনতলা ভবন

জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন শেখ সাদী ?

যমুনা ব্যাংকের ঢাকা উত্তর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ম্যানেজারস’ মিটিং অনুষ্ঠিত

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
