ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজে ধীরগতি


মজিবর রহমান, গাইবান্ধা photo মজিবর রহমান, গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ৯-৪-২০২৩ দুপুর ১২:২

ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার যমুনা নদীর স্থায়ী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ চলছে ধীর গতিতে। প্রায় ১০ কিলোমিটার প্রকল্পের অধিকাংশ পয়েন্টে বন্ধ রয়েছে কাজ। আর যেসব পয়েন্টে কাজ চলছে, তাও কচ্ছপ গতিতে। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে আকস্মিক বন্যায় ফসল ও আবাদি জমির ক্ষয়ক্ষতিসহ ব্যাপক ভাঙনের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

নদীভাঙনের স্থায়ী সমাধানের জন্য ফুলছড়ি উপজেলার কাতলামারি থেকে সাঘাটা উপজেলার গোবিন্দী ও হলদিয়া পর্যন্ত যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের জুলাই মাসে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য মতে, এ পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ।

প্রকল্পের ১০ কিলোমিটার অংশে ৩৮টি প্যাকেজে ৩৮টি পয়েন্টে ৭৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এসব পয়েন্টে পর্যায়ক্রমে কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজ শুরুর প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত হলেও কিছু পয়েন্টে ব্লক ও জিওব্যাগ ফেলা ছাড়া কাজের তেমন অগ্রগতি দেখাতে পারেননি ঠিকাদাররা।

বসতভিটা ও ফসলি জমি রক্ষায় দ্রুত প্রকল্পের কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ফুলছড়ির কাতলামারী গ্রামের জসিজল হক বলেন,অধিকাংশ পয়েন্টে বন্ধ রয়েছে কাজ বন্যায় ফসলের ক্ষতিসহ ভাঙনের আশঙ্কা আছে আমাদের।

অধিকাংশ পয়েন্টে শুধু জিওব্যাগ ফেলে ও খোঁড়াখুঁড়ি করে কাজ বন্ধ রেখেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। সেসব জিওব্যাগ এখন নদীতে ধসে পড়ছে। আর যে কয়টি পয়েন্টে ব্লকের কাজ চলছে তাও অত্যন্ত ধীর গতিতে।

গজারিয়া ইউনিয়নের কামারপাড়া এলাকার আলমগীর হোসেন জানান, স্থানীয় বালু ও নিম্নমানের পাথর দিয়ে তৈরি হচ্ছে এসব সিসি ব্লক। সেই সঙ্গে বাঁধের নিচ থেকে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটিও। বিশেষ করে হলদিয়া ইউনিয়নের ৬ কিলোমিটার অংশের অবস্থা বেশি নাজুক।

কবে নাগাদ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় বর্ষায় নদীভাঙন ও আকস্মিক বন্যার শঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। সাঘাটার হলদিয়া গ্রামের তাহের উদ্দিন বলেন, ব্যাপক এলাকা বন্যাকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করলে আবাদি জমি, ঘরবাড়িসহ বহু স্থাপনা নষ্ট হয়ে যাবে। একই গ্রামের আসমা বেগম বলেন, 'ওনারা যেভাবে বস্তা ফালাচ্ছে বা যেভাবে কাজ করতেছে এভাবে কাজ হবে না। আমরা চাই তাড়াতাড়ি বোল্ডার ফালাক। যদি কাজ করতে দেরি করে তাহলে এবারের বন্যায় বাড়িতে থাকতে পারব না। অন্যত্র চলে যেতে হবে।'

সাঘাটার হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম মণ্ডল জানান, বর্তমান গতিতে কাজ চলমান থাকলে এই ইউনিয়নে বসবাসরত পরিবারগুলো নদীভাঙনের মুখে পড়বে। দ্রুত গতিতে কাজ সম্পন্ন না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে এ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

গজারিয়া ইউপি চেয়ারম্যন খোরশেদ আলী খান খুশু আক্ষেপ করে বলেন, এ জনপদে একসময় থানা ছিল, রেলওয়ে স্টেশন ছিল, নদী বন্দর ছিল, ইংরেজ সাহেব বাবুদের হাট ছিল, পাবলিকদের হাট ছিল। অথচ কালের বিবর্তনে প্রমত্তা যমুনার দংশনে এ জনপদটি বিলীন হয়ে যায়। নিঃস্ব, অসহায় ও গৃহহীন হয়ে পড়নে এখানকার অর্ধ লক্ষাধিক পরিবার। তিনি আরো বলেন আমাদের মাননীয় এমপি মাহমুদ হাসান রিপন সাংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর থেকেই ফুলছড়ির -সাঘাটা বাসীর কথা চিন্তা করে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় চলিয়ে যাচ্ছেন।

মেসার্স ইউ এন ট্রেডিং  এ, আর সি কনস্ট্রাকসন কোম্পানি ও এসএস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বাধ নির্মাণ কাজ পেয়েছে। গত ৮ এপ্রিল সরেজমিনে সাঁড়া যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ নির্মাণ প্রকল্পে ঘুড়ে দেখা  গেছে,ফুলছড়ি উপজেলার কাতলামারি অংশ সহ প্রকল্প এলাকার সমস্ত বাধের কার্যক্রম চলছে ধীরগতিতে। কাতলামারি তেও বাধ নির্মাণ কাজের তেমন অগ্রগতি নেই। ব্লক নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ডাম্পিং ও ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। যে গতিতে কাজ চলছে তাতে চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে সম্পন্ন না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বছরও যদি বাধ নির্মাণ কাজ শেষ না হয় তবে হয়তবা আবারও ঘরের স্থান পরিবর্তন করতে হবে অনেকের।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সুপারভাইজার আকমল হোসেন বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের ৯ ও ১০ নম্বর সাইটে কাজ করছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাঁর প্রতিষ্ঠান নদীশাসনের কাজ সম্পন্ন করবে বলে তিনি আশাবাদী।

এদিকে কাজের ধীরগতির কারণে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে এবারের বর্ষা মৌসুমের আগে বাধ নির্মাণ কাজ শেষ করতে না পারলে নির্মানাধীন প্রকল্পটি হতে সুফল পাবেন না তারা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের হেয়ালিপনায় জনস্বার্থে সরকারের বৃহৎ প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বাধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়ে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হাফিজুল হক বলেন, কাজের মান ঠিক রাখতে ও গতি বাড়াতে ঠিকাদারদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আসন্ন বর্ষার আগেই ভাঙন মোকাবিলার কাজ করা হবে। তবে আমরা চেষ্টা করছি স্বচ্ছতা বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার।

এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়া বাজারে সরকারি সড়ক গিলে খাচ্ছে তিনতলা ভবন

জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন শেখ সাদী ?

যমুনা ব্যাংকের ঢাকা উত্তর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ম্যানেজারস’ মিটিং অনুষ্ঠিত

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মির্জাগঞ্জে মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত