দোহারের প্রবেশপথ মৈনটঘাটে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে উপস্থিত দোহারের মৈনট ঘাটে। কেমন চলছে দোহারের প্রবেশপথে লকডাউন। দেশব্যাপী লকডাউন শুরুর পূর্বেই দোহার-নবাবগঞ্জের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দোহারের সাথে ফরিদপুরের সকল নৌরুট ও মানিকগঞ্জের সড়কপথ বন্ধ করে কার্যত ঢাকা থেকে দোহার-নবাবগঞ্জ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়ে ভার্চুয়াল মিটিং করেছিলেন স্থানীয় সাংসদ সালমান এফ রহমান।
অনেকের নিশ্চয়ই মনে আছে, কাজী নজরুল ইসলামের ‘খোকার সাধ’ কবিতায় পড়েছিলেন ‘সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে/হয়নি সকাল ঘুমো এখন মা বলবেন রেগে/......../হয়নি সকাল তাই বলে কি সকাল হবে না ক?’ তেমনি দোহারে প্রশাসন ঘুম ভেঙে জাগার আগেই জেগে যায় মৈনট ঘাট। জেগে যায় সিএনজিচালকরা। এদের সকাল ৬টা ৩০ মিনিটের পূর্বে অবস্থান মৈনটঘাট, কার্তিকপুর বাজারসহ ছড়িয়ে০ছিটিয়ে আশপাশে। ভোরবেলাতেই এসব চালকরা জেগে ওঠে। অপেক্ষায় থাকে যাত্রী পারাপারের।
মৈনট ঘাট দিয়ে মাছ ধরার ও পণ্য পরিবহনের ট্রলারে এসব যাত্রী পারাপার হন। তারা এসে নামেন ভাসমান রেস্তোরাঁর পূর্ব পাশে। ঘাটের পাশেই ঢাকা জেলা পুলিশের রয়েছে একটি জনশূন্য টহল বোট। আর ঘাটের আধাকিলোমিটার দূরেই মৈনট পুলিশ ফাঁড়ি। সবাই যখন ঘুমে বা সকালের কাজে ব্যস্ত, ঠিক তখনই সক্রিয় ট্রলার ও সিএনজিচালকরা। ইজারাদারদের সামনে এসব ঘটলেও তারা জানান তারা কিছুই জানেন না।
দেখা যায়, কিছুক্ষণ পরপর একটা করে মাছ ধরার নৌকা আসছে, আসছে বড় পণ্যবাহী ট্রলার। এসব মাছ আনা হয় মৈনটের আড়তে বিক্রির জন্য। তার সাথে আসছেন যাত্রী। ফরিদপুর থেকে এসব যাত্রী আসছেন দোহার হয়ে ঢাকা যাওয়ার জন্য।
মৈনটঘাট থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও কেরানীগঞ্জের কদমতলীর উদ্দেশে এসব যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে সিএনজিচালিত অটোরিকসা। মৈনট ঘাটে সিএনজিচালিত অটোরিকসার স্ট্যান্ডে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চালক যাত্রী ভেবে বলেন, প্রতিদিন অটোরিকসা নিয়ে রাজধানীতে তারা যাতায়াত করেন। তবে তারা রাজধানীর ভেতরে যান না। কেরানীগঞ্জের কদমতলী আর মোহাম্মদপুরের বছিলা পর্যন্ত তারা যাত্রী নিয়ে যান। সকালে যাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা হয় না। মাঝেমাঝে সমস্যা হলে ম্যানেজ করে নেন। কিভাবে ম্যানেজ করেন জানতে চাইলে বলেন, সিএনজি নিয়ে সরে পড়েন তিনি।
সরকারি বিধিনিষেধ না মেনে অটোরিকসা চালাচ্ছেন কেন- জানতে চাইলে পাশের চালক জানান, ‘আমরা পেটের দায়ে নামি। আমাদের কি দেখার কেউ আছে? বাড়িতে পোলাপান না খাইয়া থাকলে কি কোনো বাপ বইস্যা থাকতে পারে? আমাগো খাওন দেন, খরচ দেন, একদিনও বাইর হমু না। তাই প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে সিএনজি চালাই।‘ এই বলে তড়িঘড়ি করে অটোরিকসা নিয়ে সরে পড়েন তিনিও।
মৈনট ঘাট থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকসাচালকের সঙ্গে কদমতলী পর্যন্ত যেতে ভাড়া নিয়ে দরকষাকষি করেন যাত্রীরা। উচ্চভাড়ায় তারা চলে যান তাদের গন্তব্যে। তেমনিভাবে দেখা যায়, প্রায় প্রতি যাত্রীই পরিবারের ২-৩ জন সদস্য নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন। লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্য করে কেন ঢাকা যাচ্ছেন- জানতে চাইলে যাত্রীরা বলেন, ‘আমাদের সব ঢাকাতে। ঈদের ছুটিতে এসেছিলাম, এখন চলে যাচ্ছি। চাকরি করি, তাই ঢাকায় যাচ্ছি।’ এরপর একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকসায় জনপ্রতি ২০০ টাকা ভাড়ায় কেরানীগঞ্জের কদমতলীর উদ্দেশে রওনা।
এ ধরনের পারাপার ও যাতায়াতে দোহারে সংক্রমণ বাড়ছে বলেই আশংকা স্থানীয় জনসাধারণের। এদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন করোনা রোগী। দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলায় এখন রাস্তাঘাটে করোনা রোগী। জেনে বা না জেনে তারা ঘোরাঘুরি করছেন। ডাক্তার দেখাতে, ওষুধ কিনতে, অক্সিজেন সাপোর্ট নিতে, ঢাকায় উন্নত চিকিৎসা নিতে রাস্তায় রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহনে এদের ঘোরাঘুরি। পূর্বের মতো লকডাউন এখন এতটা কঠিনও নয়।
যদিও প্রতিদিনই সরকারি বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে প্রশাসনের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। প্রতিদিনই সকাল-সন্ধ্যা অভিযান চালান দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম ফিরোজ মাহমুদ নাঈম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র। সাথে দোহার থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোস্তফা কামাল। প্রতিদিনই তারা বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার জন্য বিভিন্নজনকে জরিমানা করছেন।
মৈনটের স্থানীয় ট্রলারচালক শেখ কাইমদ্দিন জানান, যারা মাছ ধরে আমরা তাদেরই নিয়ে আসি। মাছের সাথে যাত্রী কেন পারাপার করছেন- জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘এক-দুইজন মাছ বিক্রিতার সাথে আসে। সবারই তো জরুরি প্রয়োজন আছে। সরকার তো সব দিতে পারে না। মানুষেরও সুবিধা-অসুবিধা আছে। আর কেউ অনুরোধ করলে মানুষ হিসাবে তো সব ফালাইয়া দিবারও পারি না। আপনারা কি পারবেন? তবে এমনি কাউরে আনি না।’
এ বিষয়ে মৈনট ঘাট ইজারাদার বাসার মুন্সির সাথে কথা হলে তিনি জানান, মাছের অড়ত আর আমাদের ঘাট এক নয়। আমরা মাছের আড়ত এককভাবে নেয়ার জন্য চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সেটা পাইনি। মাছের আড়তের কোনো ইজারা আমাদের নেই।
তবে মৈনট ঘাট বা মাছের আড়ত কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে ইজারাদারদের থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। জেলে, নিলামকারী কারো মুখেই নেই মাস্ক। ক্রেতাদের কয়েকজনের আছে। আবার যাদের আছে তাদের মাস্ক মুখের উপরে, নাকের নিচে।
মৈনট ঘাট থেকে দোহার-নবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে মাছ বিক্রেতারা মাছ নিয়ে যান আর এভাবেই ব্যাপকভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে বলে আশংকা জনসাধারণের।
এমএসএম / জামান

নবীনগরে গণঅভ্যুত্থান দিবসে বিএনপির বিজয় মিছিল

বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন এখনো বাস্তবায়ন হয়নি- শহিদুল ইসলাম বাবুল

জয়দেবপুর জংশনে শহীদ মুগ্ধর স্মরণে ‘মুগ্ধ সুপেয় পানির কর্নার’ উদ্বোধন

ভূরুঙ্গামারীতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিজয় র্যালি

বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামীর বিশাল গণমিছিল

রেলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে উলিপুরে বিএনপির বিজয় র্যালী ও সমাবেশ

র্যাবের অভিযানে রায়পুরায় ২ হাজার ৯শত ৫০ পিস ইয়াবাসহ ১ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

জামালগঞ্জে আওয়ামীলীগ কর্মী এখন বিএনপির কমিটিতে

জেলা বিএনপির নির্দেশে বিজয় মিছিলে, দ্বন্দ ভুলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে কুমিল্লায় ছাত্রশিবিরের বর্ণাঢ্য র্যালী

তাড়াশে বিএনপির উদ্যোগে আনন্দ র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
Link Copied