উপজেলা পরিষদের চেয়ার ছেড়ে মোতালেব যেতে চায় সংসদে

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে নৌকার হাল ধরতে চান ক্লিন ইমেইজের রাজনীতিবীদ, শিল্পপতি ও সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান  এম এ মোতালেব সিআইপি।

দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে দলীয় সভা-সমাবেশ ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। এমএ মোতালেব এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ করে সরকারের উন্নয়ন সাফল্য ভোটারদের মাঝে তুলে ধরে নিজের প্রার্থিতার কথা জানান দিচ্ছেন।

আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী মোতালেব। এছাড়া নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের একাধিক স্থানে বিল বোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার দিয়ে ভোটারদের মাঝে সাড়া ফেলেছেন। এই আসনটি সাতকানিয়ার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও লোহাগাড়ার ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এটি জামায়াতের দুর্গ হিসাবে পরিচিত হলে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জয় লাভ করে।

স্থানীয় কয়েকজন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় সমাজসেবায় জনগণ ও তৃণমূলের জনপ্রিয়তার মধ্যে  রয়েছেন এম এ মোতালেব সিআইপি।

তিনি ইতিমধ্যে জনগণের কাছে গিয়ে সরকারের উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন, বিভিন্ন উৎসবে অসহায় মানুষের সহায়তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুদান, মসজিদ-মাদ্রাসায় অনুদানসহ দিয়ে যাচ্ছেন সরকারের উন্নয়নের বার্তা।

নির্বাচনী এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বিল বোর্ডগুলাতে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, জয় ও নৌকা প্রতীকের ছবিসহ সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্যের চিত্র। গ্রামেগঞ্জের অলিগলি, বাসাবাড়ির দেয়ালে শোভা পাচ্ছে মোতালেবের পোস্টার ও ফেস্টুন। ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসাবে উঠে এসেছেন। এছাড়া ২০১৩/১৪ সালের দিকে নির্বাচনী এলাকার একাধিক স্থানে জামায়াত-শিবিরের নাশকতা প্রতিরোধে দলের কর্মীদের নিয়ে সড়কে পাহারা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

২০১৪ সাল থেকে সুনামের সহিত সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। সেই সুবাদে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূলের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন এম এ মোতালেব।

এই আসনের প্রতিটি ইউনিয়ন, গ্রামে তার বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মকান্ড আর বিচক্ষণ নেতৃত্বগুণে ইতোমধ্যে এলাকাবাসীর ভালোবাসা অর্জন ও ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের জন্য নিজের নামে সদর ইউনিয়নের চিব্বাড়িতে গড়ে তুলেছেন একটি কলেজ। তার কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিনামূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পেয়ে থাকেন।  বনফুল কিষোয়ান গ্রুপের এই চেয়ারম্যান এলাকায় বেকারত্ব দূর করতে দু’উপজেলার চার হাজারেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন তার প্রতিষ্ঠানে। প্রায় শতকের বেশি ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও পুর্ননির্মাণে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।

এম এ মোতালেব দৈনিক সকালের সময়ের সাথে একান্ত-আলাপকালে  বলেন, ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। দলের দুঃসময়ে মাঠে থেকে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। দলের কর্মসূচীর পাশাপাশি এলাকায় উন্নয়নমূলক ও শিক্ষা বিস্তারে কাজ করেছি। সেই সুবাদে এই আসনের সব মানুষের সাথে আমার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। দল যদি আমাকে মূল্যায়ন করে তাহলে চট্টগ্রাম-১৫ আসনটি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেব ইনশাআল্লাহ।

আমি ২০১৪সালের চরম কঠিন মুহূর্তে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক ছিলাম এবং ২০০৮সালে আমাদের প্রয়াতনেতা এডভোকেট আ ক ম সিরাজ ভাইয়ের নির্বাচনেও আমি সমন্বয়ক ছিলাম ২০১৮সালেও ছিলাম সমন্বয়ক।

মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে জিতে আসা আমার জন্য কোন বিষয় হবেনা , যেহেতু আমি দলীয় মনোনয়নে উপজেলা চেয়ারম্যান সেহেতু আমার রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘদিনের অর্জন এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সব মিলিয়ে আমি পারব সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে আশাকরি নেত্রী আমাকে মূল্যায়ন করে মনোনয়ন দিয়ে তৃণমূলের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে মূল্যায়িত করবেন।

তিনি আরও বলেন, আমি যদি মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারি, তাহলে সাতকানিয়া-লোহাগাড়াকে একটি শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তুলবো। কারণ সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সংসদীয় আসনের পাশেই মহেশখালীর মাতারবাড়িতে দেশের বৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎ ও এলএনজি টার্মিনাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই গ্যাস ও বিদ্যুতকে কাজে লাগিয়ে এই এলাকার টিলা, পরিত্যক্ত ও অনাবাদি জায়গায় শিল্প-কারখানা স্থাপন করে এলাকার চেহারা বদলে দিতে চাই।

ব্যবসায়ী হয়েও তিনি কিভাবে রাজনীতিতে সফলভাবে সক্রিয় আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে এমএ মোতালেব বলেন, আমি ব্যবসা করি সচ্ছল থাকার জন্য। নিজেই ক্ষুধার্ত হয়ে তো, আর অন্যের ক্ষুধা মিটাতে পারবো না। ব্যবসাকে আমি একটা সিস্টেমের মধ্যে রেখেছি।

রাজনীতি আর মানুষের সেবার কাজটা আমি নিজেই করি। আমরা সাতকানিয়ায় যারা আওয়ামী লীগ করে আসছি, তারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। সারাদেশের কোনো উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন কষ্ট করতে হয়নি। তাদেরকে নিয়ে আমি রাজনীতি করছি। তাদের জন্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইবো। যাতে দ্বিতীয়বার সাতকানিয়ায় স্বাধীনতার চর্চা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের চর্চা করতে গিয়ে নির্যাতিত হতে না হয়।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে এবং সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের পদেই তো আছেন তারপরেও কেন সংসদ সদস্য পদে লড়তে যাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে এম এ মোতালেব সিআইপি বলেন,দেখপন আমি আজন্মকাল মানুষের কল্যানের তরে কাজ করে যাচ্ছি, ব্যবসায়ি এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে মানুষের জন্য  কাজ করতে গিয়ে দেখেছি আরো বৃহৎ আকারে কাজ করতে গেলে সংসদ সদস্য হওয়ার বিকল্প নেই ।

আপনারা ভাল করেই জানেন যে, একটি আসনে সর্বোঁচ্চ কাজ শুধু একজন সাংসদই পারেন এর বাইরে কেউ পারেনা ।