ঢাকা বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

ডাক্তারের ভুল অপারেশনে শিশুর জীবন সংকটাপন্ন


মনিরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার  photo মনিরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ১৮-৯-২০২৩ দুপুর ৩:৪৪

ডাক্তারের ভুল অপারেশনে বয়স ৪ বছর ৬ মাস বয়সী আমাতুল বারী নাফিসা নামে এক শিশুর জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে গত ৯ জুন থেকে ভারতের খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজ ভেলোরে শিশুটির উন্নত চিকিৎসা চলছে। শিশুটির বাবা মা চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মৌলভীবাজার সিভিল সার্জনসহ একাধিক জায়গায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিতভাবে পাঠিয়েছেন।

নাফিসার বাবা মো. নুরুল ইসলাম পূবালী ব্যাংক মৌলভীবাজার প্রধান কার্যালয়ে জুনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত এবং মা শারমিন আক্তার মৌলভীবাজার কচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা। দম্পতির অভিযোগ ঢাকায় আনোয়ার খাঁন মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হসপিটালের চিকিৎসক ডা. এহসানুল বারী রাহাতের ভুল চিকিৎসায় তাদের মেয়ের জীবন সংকটাপন্ন। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাফিসার মাথার পিছনে একটি বরণ হয়। পরে চলতি বছরের ১০ মার্চ মৌলভীবাজার শহরের বেরিরপারস্থ রয়েল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডা. এহসানুল বারী রাহাতের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এক সপ্তাহের ওষুধে বরণটি না কমায় ঢাকা আনোয়ার খাঁন মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন করার সিদ্ধান্ত দেন ডা. এহসানুল বারী রাহাত।নাফিসার অভিভাবকরা অপারেশন সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. রাহাত বলেন, এটি সামান্য অপারেশন। ৪ থেকে ৫ ঘন্টার মধ্যে অপারেশন শেষ করে বাসায় নেওয়া যাবে এবং খরচ হবে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। ডাক্তারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৮ মার্চ নাফিসাকে ঢাকা আনোয়ার খাঁন মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন ওই দম্পতি। ওইদিন সন্ধ্যার পর অপারেশন করার জন্য নাফিসাকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর ডা. এহসানুল বারী রাহাত নাফিসার বাবাকে ডেকে বলেন আপনার বাচ্চার টিউমার ফেটে রক্ত ও ময়লা রক্তনালীর বিভিন্ন দিকে প্রবেশ করেছে। নাফিসা কেমন আছে তার বাবা জানতে চাইলে ডা. বলেন, বাচ্চার অনেক রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ৮ থেকে ১০ ব্যাগ রক্ত লাগবে। চিকিৎসার জন্য নাফিসাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে এবং টাকাপয়সাও লাগবে। 

নাফিসার বাবা বলেন, তিনি ডাক্তারের কথা বুঝতে না পেরে কর্তব্যরত ডাক্তার ও আরও দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন, নাফিসার ভুল অপারেশন হয়েছে। তাকে এখন সিটিস্ক্যান করা হবে এবং হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হবে। পরে ১৯ মার্চ সকালে সিটিস্ক্যানের রিপোর্ট দেখে পরবর্তী চিকিৎসা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা সারারাত নাফিসাকে হাসপাতালের আইসিইউতে রেখে বাহিরে অপেক্ষা করি। পরদিন সকালে জানতে পারি নাফিসার বরণটি হচ্ছে রক্তনালীর টিউমার। যাকে হেমানজিওমা বলা হয়। যা অপারেশন করার কোনো প্রয়োজন ছিল না। পরবর্তীতে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের ডাক্তারদের নিয়ে চিকিৎসা বোর্ড গঠন করা হয়। পরে বোর্ডের দায়িত্বশীলরা ডেকে বলে অপারেশনের সময় নাফিসার রক্তক্ষরণ হয়েছে। অধিক পরিমাণ রক্তক্ষরণের কারণে নাফিসার বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। 

পরবর্তীতে চিকিৎসা বোর্ডের নিউরো সার্জারী বিভাগের সিনিয়র ডাক্তার নাফিসার পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দিয়ে অপারেশনের কাজ শুরু করেন। প্রায় ৪০ মিনিট পর ডাক্তার অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে বলেন, আল্লাহ্‌র অশেষ কৃপায় আপনাদের বাচ্চার কোনো রক্তক্ষরণ হয়নি। ভালোভাবে সেলাই করে দিয়েছি। কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে। পরবর্তীতে ২২ মার্চ হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়। এ সময় ডা. এহসানুল বারী রাহাত বলেন, আগামী ২৪ মার্চ মৌলভীবাজার রয়েল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এলে সেলাই ড্রেসিং করবো এবং ৩১ মার্চ সেলাই কেটে দেব। তার কথানুযায়ী আমরা চেম্বারে গেলে সেলাই ড্রেসিং করেননি। আগামী তারিখে একসাথে সেলাই কেটে দেবেন বলে আমাদের বিদায় করে দেন। ৩১ মার্চ মৌলভীবাজার শহরের জান্নাত প্রাইভেট হাসপাতালে সেলাই কাটতে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতস্থানে পুজ জমে ইনফেকশন হয়ে মাংস পচে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। তখন ডাক্তার ড্রেসিং করেন এবং আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে আরও দুইবার ড্রেসিং করার কথা বলেন। এ রকম বিভিন্ন টালবাহানা দেখালে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র ডাক্তার আবু বক্কর মোস্তফাকে দেখালে তিনি বলেন, এখানে আবার সেলাই করা যাবে না। প্রতিদিন ড্রেসিং করে শুকাতে হবে। ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগবে।

নাফিসার বাবার অভিযোগ, রোগ সম্পর্কে না জেনে প্রযুক্তির যুগে কোনো পরীক্ষা নিরিক্ষা না করে ডা. এহসানুল বারী রাহাত ভুল অপারেশন করেন। নির্ধারিত সময়ে তিনি ড্রেসিংও করেননি। নাফিসার বাবা বলেন, ভুল চিকিৎসার কারণে মেয়ের যেভাবে ক্ষতি হয়েছে তেমনি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। বর্তমানে ভারতের খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজ ভেলোরে তিন মাস যাবৎ নাফিসা চিকিৎসাধীন রয়েছে। এখানে প্রায় ১ বছর চিকিৎসা করাতে হবে যার ব্যয় হবে ২০ লাখ টাকারও বেশি। নাফিসার বাবা ডা. এহসানুল বারি রাহাতের ভুল চিকিৎসার প্রতিকার চেয়ে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

মৌলভীবাজার রয়েল প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাহাদ আলমের দাবি, কোনো ধরনের পরীক্ষানিরিক্ষা ছাড়া নাফিসার চিকিৎসা করা ঠিক হয়নি।এ বিষয়ে জানতে ডা. এহসানুল বারী রাহাত এর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন-ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি।মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, ডা. এহসানুল বারী রাহাত নিউরো সার্জন নয়। অপারেশন করা তার ঠিক হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।

এমএসএম / এমএসএম

মুরাদনগরে সাইম-পারভেজের অবৈধ ড্রেজার বানিজ্য ডিসিখাল ভরাট

জুড়ীতে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

নন্দীগ্রামে স্কুল ভবন উদ্বোধন এবং ফুটবল টূর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

ধামইরহাটে ফতেপুর বাজারে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

চৌদ্দগ্রামে মহাসড়কে ডিবি পরিচয়ে গরু বোঝাই ট্রাক ছিনতাই, থানায় মামলা

বেনাপোলে সেই শিশুকে দত্তক নিলেন ব্যবসায়ী দম্পতি

রাতের আঁধারে মাদ্রাসার গাছ কাটা নিয়ে ইউএনওর কাছে সাবেক সভাপতির অভিযোগ

কোটালীপাড়ায় পারিবারিক পুষ্টিবাগানে কৃষকের হাসি

পাবনা'য় আমনের বাম্পার ফলন: কৃষকের মুখে হাঁসি

সন্দ্বীপে ধানের শীষের প্রচারনায় বিশাল গণসংযোগ ও পথসভা অনুষ্ঠিত

বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন

পাঁচবিবিতে মাঠ থেকে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

কুড়িগ্রামে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকের কাছে শীতার্ত মানুষের জন্য আশার কম্বল হস্তান্তর