মানিকছড়ি গাড়িটানা রেঞ্জ ও ধুরং বনবিট পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের দখলে
খাগড়াছড়ি জেলার সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির সরকারি সংরক্ষিত বনে আধিপত্য বিস্তার করে মূল্যবান গাছ কেটে ফেলছে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পাহাড়ি সংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ। পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে সরকারি বাগানের এসব গাছ কিনে পাচারকারীরা মানিকছড়ির গাড়িটানা -যোগ্যাছলা ও ভুতাইছড়ি-বড়ডলুর দক্ষিণ পাশে রিজাব বাগান থেকে কাছ কেটে ফটিকছড়ি রিজাব থেকে মূল্যবান গাছ কেটে এপারে নিয়ে এসে সড়ক খাগড়াছড়ি চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে ফটিকছড়ির কাজীরহাট বাজার এবং কালাপানি-নেপচুন চা বাগান হয়ে দাঁতমারা, শান্তিরহাট ও হেঁয়াকোতে নিয়ে যায়। পরে এখান থেকে নারায়ণহাটের স্বেতছড়া (নারায়ণহাট-মিরেরসরাই রাস্তা) সড়ক হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ধুরুং বনবিট নামে সরকারি সংরক্ষিত এ বনে অনেকটা পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাদের অনবরত হুমকি ও উৎপীড়নে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে এক বনবিট কর্মকর্তা হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন। বনকর্মীরা ভয়ে বিট এলাকা ছেড়ে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
ফটিকছড়ির কাঞ্চননগরের ধুরুং বনবিটটি অত্যন্ত দুর্গম এলাকা হওয়ায় সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো সেখানে আস্তানা গড়ে তুলেছে। এদিকে, সরকারি সংরক্ষিত বন থেকে কেটে ফেলা বিশালাকারের ৪টি সেগুন গাছ আনতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মুখে পালিয়ে আসতে হয়েছে বনবিভাগের কর্মীদের। ওই সন্ত্রাসীরা বিক্রির জন্য গাছগুলো কেটে ফেলে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারী চক্র মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ওই পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে সরকারি বনের মূল্যবান গাছ কেটে পাচার করে। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কাছে বন বিভাগের কর্মীরা সম্পূর্ণ নিরুপায়।
খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ির সীমানা লাগোয়া ফটিকছড়ির কাঞ্চননগরের ধুরুং বন বিট অবস্থিত। এটি নারায়ণহাট বন রেঞ্জের আওতাধীন সরকারি সংরক্ষিত বন। পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমানা ঘেঁষে অবস্থানের কারণে সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ প্রায় ৪ হাজার একরের এই সরকারি বন বিটে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করে। অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সাবর্ক্ষণিক বাগানটির সন্ত্রাসীরা তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখছে। বন বিট এলাকার আশেপাশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বসতি লোকজনও ওই সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো আরো জানায়, সংগঠনের অর্থ আয়ের জন্য সন্ত্রাসীরা বাগানের সেগুনসহ বিভিন্ন মূল্যবান গাছ কেটে সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারীদের কাছে সেগুলো বিক্রি করে। দীর্ঘদিন ধরে এ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তারা। পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে সরকারি বাগানের এসব গাছ কিনে পাচারকারীরা মানিকছড়ির গাড়িটানা -যোগ্যাছলা সড়ক হয়ে ফটিকছড়ির কাজীরহাট বাজার এবং কালাপানি-নেপচুন চা বাগান হয়ে দাঁতমারা, শান্তিরহাট ও হেঁয়াকোতে নিয়ে যায়। পরে এখান থেকে নারায়ণহাটের স্বেতছড়া (নারায়ণহাট-মিরেরসরাই রাস্তা) সড়ক হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হয়।
বন বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ওই সন্ত্রাসীরা সর্বশেষ গত ৩০ সেপ্টেম্বর ধুরুং বনবিট অফিস সংলগ্ন সরকারি সংরক্ষিত বাগানের ৪টি বিশালাকারের সেগুনগাছ কেটে ফেলে। যার বাজার মূল্য প্রায় ২৫ লাখ টাকা।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বনবিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, গাছ কাটার ঘটনায় ধুরুং বনবিট কর্মকর্তা টিটু চাকমা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতার চাপে পড়েন। অন্যদিকে, গাছ কাটা নিয়ে কোন প্রকার আইনি ব্যবস্থা না নিতে সন্ত্রাসী গ্রুপ ও কাঠ পাচারকারীচক্রের কঠোর হুমকির সম্মুখিন হন । এ অবস্থায় ভয় ও আতঙ্কে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এক পর্যায়ে ২ অক্টোবর হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
নারায়নহাট রেঞ্জের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী বন সংরক্ষক বলেন, পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের আধিপত্যের কারণে জীবনের নিরাপত্তা না থাকায় ওই বনবিটের চার বনকর্মী বাগান থেকে পালিয়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে নয়া বাজার নামক স্থানে অবস্থান করতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বাগানটিতে যাতায়তের কোন রাস্তা নেই। একটি খাল পার হয়ে সেখানে যেতে হয়। যোগাযোগ বিছিন্ন হওয়ার কারণে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ সেখানে তাদের বড় ঘাঁটি করেছে। এদিকে, ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তাদের নির্দেশে রবিবার (৮ অক্টোবর) নারায়নহাট রেঞ্জের বন কর্মীরা ধুরুং বনবিট থেকে সন্ত্রাসীদের কেটে ফেলা গাছগুলো আনতে গেলে সন্ত্রাসীদের অস্ত্রেরমুখে বনকর্মীরা জীবন নিয়ে পালিয়ে আসে।
নারায়নহাট বন রেঞ্জ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেয়ে কয়েকজন বনকর্মী ধুরুং বিটে সেগুন গাছগুলো আনতে যায়। কিন্তু পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা অস্ত্রেরমুখে তাদের তাড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, এ বিষয়টি ফটিকছড়ি থানার ওসি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর পর তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তা নেয়ার পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, ‘চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ডিএফও র নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে গাছগুলো উদ্ধার করার পরিকল্পনা করছেন।’
মানিকছড়ির গাড়িটানা রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী তামিল রাসুলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, অবৈধ কাঠপাচারকারীরা রেঞ্জের মহাসড়ক ব্যবহার না করে বিকল্প রাস্তা দিয়ে কাঠ পাচার করে বলে অভিযোগ আছে। তবে আমাদের লোকবলের অভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি। মাঝে মাঝে নিরাপত্তাবাহিনীর সহযোগিতায় যৌথ অভিযানে অবৈধ মালামাল আটক করে ৫২টি মামলা নিয়েছি।
এমএসএম / এমএসএম
মনোনয়ন বঞ্চিত আসলাম চৌধুরীর সমর্থকদের মহাসড়ক-রেল অবরোধ
নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন এস এম রেজাউল ইসলাম রেজু
শার্শা আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন-তৃপ্তি
মৌলভীবাজার-৪ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হাজী মুজিব
বিএনপির মাদারীপুর এক ও তিন আসনে প্রার্থিতা ঘোষণা
গাইবান্ধার পাঁচ টি আসনে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত
কুমিল্লায় বিএনপি'র ৯ টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীতা ঘোষণা
চাঁদপুর জেলার বিএনপির সম্ভাব্য পাঁচ প্রার্থী
শরীয়তপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাঈদ আহমেদ আসলাম
প্রথম বারের মতো ভোলা -৪ চরফ্যাশন মনপুরা আসেন মনোনয়ন পেলেন নূরুল ইসলাম নয়ন
মেহেরপুর বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মাসুদ অরুণ-আমজাদ হোসন
মৌলভীবাজার-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মিঠু