সিআরবিতে টেন্ডার ডকুমেন্টস ছিনতাইয়ের অভিযোগ কর্মচারির বিরুদ্ধে
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান কার্যালয় সিআরবিতে আবারো টেন্ডার বক্স দখল, ডকুমেন্টস ছিনিয়ে নেয়া ও ঠিকাদারের লোকজনকে জিম্মি করে টেন্ডার জমা দেয়ায় বাঁধা প্রদানের অভিযোগ ওঠেছে ওই অফিসের কর্মচারির বিরুদ্ধে। পছন্দের লোকদেরকে টেন্ডার পাইয়ে দেয়ার জন্য র্যাব ও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে টেন্ডার কাজে বাঁধা প্রদান করেছে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তার দপ্তরে এমন ঘটনা ঘটেছে। সিআরবিতে এবার কোন বহিরাগত সন্ত্রাসী নয়, খোদ ওই অফিসের কর্মচারি কথিত শ্রমিক নেতা শেখ জামাল আহমেদের নেতৃত্বে এমন অরাজকতা চলছে বলে লিখিত অভিযোগ করেছেন একাধিক ঠিকাদার।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি এসব বিষয় উল্লেখ করে, টেন্ডার বাতিল ও রিটেন্ডার চেয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএ কর্পোরেশন, করবী কর্পোরেশন, মেসার্স মডার্ন ট্রেডার্স ও আরএস কর্পোরেশন।
মেসার্স এস.এ কর্পোরেশনের লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ”আহবানকৃত দরপত্র নং- আরসি/আউটসোর্সিং/২৩-২৪/এসআর(আরই) তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ এর সকল শর্ত অনুসরণ পূর্বক দরপত্র দাখিল করতে আমাদের প্রতিনিধি মুহাম্মদ মামুন সকাল ০৯টা ৪৫ মিনেটে আপনার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। এর পরবর্তীতে কার্যালয়ের সামনে দরপত্র দাখিলের আগ মুহুর্তে আপনার কার্যালয়ের কর্মচারী শেখ জামাল আহম্মদ এর প্রত্যক্ষ মদদে কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তি আমাদের প্রতিনিধিকে সেখান থেকে অন্যত্রে নিয়ে গিয়ে তাহার থেকে দরপত্র ছিনিয়ে নেয়। যার ফলশ্রুতিতে আমরা অন্য স্থানেও দরপত্র দাখিল করতে ব্যর্থ হই। ফলে দরপত্র বাতিল করে পিপি এর নিয়ম অনুযায়ী পূণঃ দরপত্র আহবান করে এবং আপনার অধীনস্থ কর্মচারী শেখ জামাল এর বিরুদ্দে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়ার সাথে সাথে আপনার কার্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি করার অনুরোধ করছি।
মডার্ন ট্রেডার্সের অভিযোগে বলা হয়েছে, টেন্ডার জমা দেয়ার জন্য নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হলে কতিপয় দুস্কুতিকারিরা তার টেন্ডার ডকুমেন্টস ছিনিয়ে নেয় ফলে তিনিও দাখিল করতে ব্যর্থ হন।
একইভাবে মেসার্স করবী কর্পোরেশনের লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, জাফর উল্লাহ নামের প্রতিনিধি দরপত্র দাখিল করতে গেলে কার্যালয়ের কর্মচারী শেখ জামাল আহম্মদের মদদে কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তি দরপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং দরপত্র দাখিলের সময় শেষ না হওয়া পর্যন্ত জিম্মি করে রাখে।
জানা যায়, আউট সোর্সিং এর ৪ টি প্যাকেজে টেন্ডার জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪। ওইদিন বিভন্ন প্রতিষ্ঠানের লোকজন টেন্ডার ডকুমেন্টস দাখিল করতে গেলে শেখ জামাল নামের ওই কর্মচারির লোকজন বাঁধা প্রদান করে। নিজের লোককে কাজ পাইয়ে দিতে সিন্ডিকেটের বাইরে কাউকে ডকুমেন্টস জমা দিতে দেয়নি। এমনকি জমা দেয়ার শেষ সময় পর্যন্ত ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে আটকে রাখে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জানান, জামালের সাথে সেই অফিসের একাধিক উর্ধতন কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে। তার একার পক্ষে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে এমন ভীতিকর পরিবেশ তৈরি ও কাজে বাঁধা দেয়ার ক্ষমতা নেই। যদি সংশ্লিষ্ট অফিসাররা সৎ হন বা কোন পক্ষপাতিত্ব না করেন তবে অবশ্যই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
এই বিষয়ে কথা বলতে, রেলওয়ে পূবাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা মো. রফিকুল বারী খান এবং অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা ও টেন্ডার কমিটির আহবায়ক মো. সাইদুর রহমান সরকারের সাথে কথা বলতে অফিসে গেলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি।
পরে ওই অফিসের আসিফ নামের এক স্টাফ টেন্ডার কমিটির আহবায়ক মো. সাইদুর রহমান সরকারের বরাত দিয়ে অভিযোগ গ্রহণের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগ পেয়েছি কিন্তু পিপি বিধিমালা অনুযায়ী এসব অভিযোগ আমলে নেয়ার সুয়োগ নেই।
এমএসএম / এমএসএম