ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫

আকৃতিও দমাতে পারেনি ৩ ফুট ১০ ইঞ্চির সোনিয়াকে


সেলিম, নোয়াখালী photo সেলিম, নোয়াখালী
প্রকাশিত: ১৭-৩-২০২৪ দুপুর ৩:২৭

কিছু দুঃখ মানুষকে হতাশায় তলিয়ে দেয়। শারীরিক বাধা এমনি এক কষ্ট। আবার এমন প্রতিবন্ধকতাই কারও জীবনে অনুপ্রেরণা দেয় শক্তি হয়ে। এমনি এক শিক্ষার্থী নোয়াখালীর কবিরহাট সরকারি কলেজের জান্নাতুল ফেরদাউস সোনিয়া। পড়ছেন দ্বাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে। সোনিয়া দেখতে শিশুর মত হলেও তার বয়স ২১ বছর। লম্বায় তিন ফুট ১০ ইঞ্চি। বয়স বাড়লেও বাড়েনি তার শারীরিক গঠন। শরীরের গঠন দেখায় শিশুদের মতো।

তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় সোনিয়া। পড়াশোনায় বেশ আগ্রহী ছিল ছোটবেলা থেকেই। ২০১৬ সালের ঘটনা। ছোট বোন জান্নাতুল নাঈমের সাথে স্থানীয় রাজুরগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তখন পঞ্চম শ্রেণি ছাত্রী সোনিয়া। যখন ছোট বোনের শারীরিক গঠন বাড়তে থাকে, তখনই তার শারীরিক অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। এরপর শিক্ষাঙ্গন থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে পড়তে হতো তাকে কটু কথার বেড়াজালে। তার ব্যতিক্রমী লড়াই ছিল রাস্তাঘাটে হয়রানির বিরুদ্ধে। কখনোই কানে লাগাননি সে মানুষের কোনো উপহাস বা টিপ্পনি। তাকে দমাতে পারেনি কোনো কটু কথা। সোনিয়া নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের ছবির পাইক গ্রামের জমিদার বাড়ির নুরুল হকের মেয়ে।    

এভাবেই বাড়ির পাশের প্রাথমিকের গন্ডি শেষ করে ২০২২ সালে স্থানীয় মিয়ার হাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩.৫৬ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর কলেজে ভর্তি হোতে বাধা হয়ে দাঁড়ান মা রহিমা খাতুন। একাধারে তিনদিন কান্নার পর মেয়ের প্রবল ইচ্ছার কাছে হার মানেন মা রহিমা খাতুন। দিনমজুর বাবার একান্ত সহযোগিতায় কলেজে ভর্তি হন সোনিয়া। এখন বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার দূরের পথ পাড়ি দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন কলেজের পড়ালেখা। স্বপ্ন দেখেন প্রতিবন্ধকতাকে ছিন্ন করে একজন ব্যাংকার হয়ে দাঁড়াবেন পরিবারের পাশে। কিন্ত দিনমজুর বাবা পরপর দু'বার হার্ট অ্যাটাক করে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ভেস্তে যেতে বসেছে সোনিয়ার উচ্চ শিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন।  

জান্নাতুল ফেরদাউস সোনিয়া বলেন, আমার বাবা একজন দিনমজুর, পরিবারে ছিল আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য।  বাবা পররপর দু'বার স্ট্রোক করার কারণে পরিবারে দেখা দেয় অভাব অনটন। এতে আমার পড়ালেখার খচর বহনকরা পরিবারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার স্বপ্ন পড়ালেখা শেষ করে একজন ব্যাংকার হওয়া। আমি চাই সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষ আমার পাশে দাঁড়াক।  

মা রহিমা খাতুন বলেন, আমার বড় কোনো ছেলে নেই। আমার মেয়ে যেন তার পড়া লেখা আরেকটু চালিয়ে যেতে পারে। সরকার ও বিত্তবান মানুষের সহযোগিতায় আমার মেয়ে যেন তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।    

মামা জাকির হোসাইন বলেন, সোনিয়া আমার বড় বোনের মেয়ে। সে ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট করে এ পর্যন্ত এসেছে। আর্থিক সঙ্কটে পড়ে তার লেখা পড়া এ পর্যন্ত এসে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।  

কবিরহাট সরকারি কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ নূরুল হক মিলন বলেন, কবিরহাট সরকারি কলেজ, নোয়াখালী। সোনিয়া আমাদের একজন নিয়মিত ছাত্রী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সে এতটুকু পড়াশোনা করে আসছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। সকল ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটা অনুকরণীয় বিষয়।  
       
কবিরহাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, এ অবস্থায় সোনিয়ার যে উদ্যম, তা কলেজের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। তার উচ্চ শিক্ষার সুবিধার জন্য যদি সম্ভব হয় আমি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকেও সর্বাত্মক সাহায্য করার চেষ্টা করব। একই সাথে আমি আহŸান জানাই সমাজের হৃদয়বান, বিত্তবান মানুষ যেন তার পাশে দাঁড়ায়।

এমএসএম / এমএসএম

সিংড়া ভরা মৌসুমেও সবজির দাম আকাশছোঁয়া

নাচলে মানবাধিকার সংস্থার রাজশাহী বিভাগীয় সম্মেলন প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

মাদারীপুরে স্কুল শিক্ষার্থী নিখোজ আবদুল্লাহকে ফিরে পেতে মানববন্ধন

নওয়াপাড়া সরকারি কলেজ অধ্যক্ষকে গুলি করে হত্যার হুমকি

নেত্রকোণার আটপাড়ায় সেচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

মনোহরদীতে ভোক্তা অধিকারের অভিযান: দুই ব্যবসায়ীর জরিমানা

রূপগঞ্জে শ্রাবণ বাহিনীর হামলায় একই পরিবারের চারজন আহত

ঠাকুরগাঁওয়ে ‘ইকো স্পোর্টস একাডেমী”র বিশেষ পরিকল্পনা সভা

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতেই নর্থ ওয়েষ্টার্ন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মান কাজ শুরু

মেহেরপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিকী নির্বাচন-২০২৫ অনুষ্ঠিত

বিশ্বম্ভরপুর পুলিশের অভিযানে ভারতীয় পণ্য ৪০ হাজার শলাকা নাসির বিড়িসহ ৫৮ বস্তা পেয়াঁজ আটক

রায়গঞ্জে সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত

ভূরুঙ্গামারীতে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগে যানজট নিরসনে অগ্রগতি