ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

পাবনায় তাপপ্রবাহ ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তীব্র তাপপ্রবাহে প্রাণীকূলের নাকাল অবস্থা


এম মাহফুজ আলম, পাবনা photo এম মাহফুজ আলম, পাবনা
প্রকাশিত: ৩০-৪-২০২৪ দুপুর ৪:৫৯

দিন যতই যাচ্ছে, তীব্রতাপপ্রবাহ যেন ততই বাড়ছে।  সোমবার পাবনা’র ঈশ্বরদীতে তাপ মাত্রা ৪২.৫ ডিগ্রি রেকর্ড করা হলেও তা বেডে মঙ্গলবার রেকর্ড করা হয় ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 
একদিকে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব েেথকে অতি তীব্র মাত্রার তাপদাহ অপরদিকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার  রেকর্ড। সবমিলিয়ে পাবনার জনজীবন বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার ( ৩০ এপ্রিল) পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা পাবনা জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আর বাতাসের আদ্রর্তা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ শতাংশ।
এর আগে সোমবার (২৯ এপ্রিল) পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। আর বাতাসের‌ আদ্রর্তা ছিল ১২ শতাংশ।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, ঈশ্বরদীতে ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটিই চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ। এ তাপমাত্রা আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে জেলায় অতি তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। প্রচন্ড গরমে মানুষের পাশাপাশি প্রাণিকুলেরও হজম ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। রোড়বেয়াদি বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।  
এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে মানুষের পাশাপাশি প্রাণীকূলেও নাকাল অবস্থা বিরাজ করছে। এই তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়েছে দুগ্ধ খামারিদের উপরেও। চলমান তাপপ্রবাহে গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পাবনা খামারিরা। দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি চাহিদাও কমে গেছে। বেড়েছে গো-খাদ্যের দাম। ফলে লোকসান গুণতে হচ্ছে খামারীদের।
পাবনার সদর, ফরিদপুর, সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের খামার মালিকদের সাথে কথা বলে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলমান তাপপ্রবাহের ফলে দুধ উৎপাদন কমে গেছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে গবাদি পশু। গরুর শরীরে জ্বর উঠে যাচ্ছে ১০৮ থেকে ১০৯ ডিগ্রি এবং পেটে গ্যাস হয়ে যাচ্ছে।
পাবনা জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পাবনায় জেলায় মোট ৬ হাজার ৬৪৩টি খামার রয়েছে। এসব খামারে মোট গরু রয়েছে ৭ লাখ ৫৪ হাজার। জেলায় মোট দুধ উৎপাদন হয় ৪ দশমিক ৭৫ লাখ মেট্রিক টন। যা জেলার চাহিদা মিটিয়েও উদ্বৃত্ত ২ দশমিক ২৫ লক্ষ মেট্রিক টন দুধ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
জানা গেছে, পাবনা জেলার ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার বিভিন্ন দুগ্ধ খামারি থেকে উৎপাদিক দুধ বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
খামারীরা জানান, প্রচন্ড গরম থেকে গবাদি পশু রক্ষা করতে দিন-রাত ফ্যান চালাতে হচ্ছে। এছাড়া পাম্প দিয়ে ঠান্ডা পানি তুলে দিনে ৩ থেকে ৪ বার গরু গোসল করাতে হচ্ছে। ফলে বিদ্যুৎ খরচ বড়ে গেছে প্রায় দ্বিগুণ।
পাবনার বেড়া উপজেলার নতুনভারেঙ্গা গ্রামের খামারী শফিউর রিমন জানান, ‘গরমে গবাদি পশুর খাওয়া কমে গেছে। গরুর হজম কম হচ্ছে। গরমের কারণে বেশিমাত্রায় হাফাচ্ছে। গরমে দুধ উৎপাদন কমে গেছে প্রায় ২০ শতাংশ। এছাড়াও গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচ বেড়ে গেছে। গরমে দুধের চাহিদা কমে যাওয়ায় দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা লিটার দরে। স্বাভাবিক সময়ে যখন ৪ থেকে ৫ ঘন্টা দুধ রেখে দেওয়া যেত। এখন সেখানে ৩ ঘন্টা পড়েই দুধ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’
সাঁথিয়া উপজেলার বৃহস্পতিপুর গ্রামের খামারী আব্দুস সামাদ মৃধা জানান, ‘দুই বেলা দিয়ে আমার গরুর দুধ উৎপাদন হতো সাড়ে ১০ মন। তীব্র তাপের কারণে দুধ উৎপাদর হচ্ছে ৯ মন। গরমের কারনে গরুর খাওয়া কমে গেছে, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। সারা দিন-রাত ফ্যান চালাতে হচ্ছে। বিভিন্ন ভাবে খরচ বেড়ে গেছে। গরমের হাত থেকে গরু সুস্থ রাখতে আমরা সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছি।’
সাঁথিয়া উপজেলার নাড়িয়া গদাই গ্রামের দুধ ব্যবসায়ী আফসার আলী জানান, ‘প্রতিদিন আমি ৭ মন দুধ ক্রয়-বিক্রয় করতান। এখন সেখানে সাড়ে ৫ মন দুধ পাচ্ছি।’  
পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বাসিন্দা বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গরমের সঙ্গে সঙ্গে গরুর পালনের খরচও বেড়েছে। অতিরিক্ত পানি খেতে দিতে হচ্ছে, গোসল করাতে হচ্ছে দিনে ৩ থেকে ৪ টার। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি শ্রমিক লাগছে।’ 
সাইফুলের খামারে ৬০টি গরু রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করে বলেন, গরু পরিচর্যার জন্য প্রতিদিন ছয় থেকে সাতজন রাখাল কাজ করছেন। এছাড়া গো-খাদ্যের দামও বেড়েছে অনেক।’
তিনি বলেন, ‘প্রতি বস্তা গমের ভুষি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সব মিলিয়ে সপ্তাহে প্রতিটি গরুর পেছনে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত খরচ বেড়েছে।’
পাবনা জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাংগ কুমার তালুকদার জানান, ‘গরমে স্বাভাবিক ভাবেই গবাদি পশুর খাওয়া কমে যায়। ফলে দুধ উৎপাদন কিছুটা কমে যায়।’
তাপপ্রবাহের মধ্যে গবাদি পশুর বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, ‘খামারের ঘরগুলো ঠান্ডা রাখাতে হবে। কাঁচ ঘাস খাওয়াতে হবে এবং দিনে ২-৩ বার গোসল করাতে হবে। এছাড়া গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত পশু চিৎিসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।’

এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়া বাজারে সরকারি সড়ক গিলে খাচ্ছে তিনতলা ভবন

জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন শেখ সাদী ?

যমুনা ব্যাংকের ঢাকা উত্তর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ম্যানেজারস’ মিটিং অনুষ্ঠিত

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মির্জাগঞ্জে মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত