ঢাকা বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫

আসামীরা ধরা ছোয়ার বাইরে

শশুরবাড়ীর কু-প্ররোচনায় গৃহবধুর আত্মহত্যা


আরিফুর রহমান photo আরিফুর রহমান
প্রকাশিত: ২০-৫-২০২৪ দুপুর ১:২৬

সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় শশুরবাড়ীর কু-প্ররোচনায় আত্মহত্যা করেছেন একজন গৃহবধু। আত্মহত্যার পূর্বে তিনি একটি সুইসাইড নোট লিখে যান। যা ময়না তদন্তের সময় ডাক্তার খুজে পান। আত্মহত্যার ঘটনাটি গত ২২শে এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নে গোনালী গ্রামে ঘটেছে। শম্পা দাশের পিতা অজিত দাশ এ ঘটনায় বাদী হয়ে সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত তালা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু ঘটনার প্রায় এক মাস অতিবাহিত হতে চললেও আসামীরা রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে। এদিকে শম্পা দাশের পরিবার শোকাহত অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।
গৃহবধুর নাম শম্পা দাশ, পিতার নাম: অজিত দাশ। অজিত দাশ ডুমুরিয়ার চিংড়াখালী গ্রামের বাসিন্দা। 
ঘটনাসূত্রে, প্রায় ১০ বছর পূর্বে শম্পা দাশ (২৫) ও পবিত্র দাশের বিয়ে হয়।  পবিত্র দাশ পেশায় একজন ভাটাশ্রমিক। তাদের ঘরে দুজন কন্যা সন্তান রয়েছে। প্রায় সময়ই তাদের সংসারে ঝগড়া-ফ্যাসাদ লেগেই থাকতো। এ নিয়ে আশে পাশের প্রতিবেশীরাও বেশ বিরক্ত হয়ে পড়েন। সম্প্রতি গত ২২শে এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যার পর ফের ঝগড়া ফ্যাসাদে লিপ্ত হন শম্পা এবং পবিত্র। ঘটনার দিন পবিত্র দাশের কু-প্ররোচনায় শম্পা দাশ আত্মহত্যা করলে শম্পা দাশকে মুমূর্ষ অবস্থায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন পবিত্র দাশ এবং তার বাড়ির লোকজন। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক শম্পার মৃত্যুর খবর পবিত্র দাশকে জানালে শম্পা দাশের শশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতালে তার মরদেহ রেখে পালিয়ে যান।
মামলার এজাহার সূত্রে, ১০ বছর পূর্বে হিন্দু ধর্মীয় বিধান মতে পবিত্র দাশের সাথে শম্পা দাশের পরিবারিকভাবে বিবাহ হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুইজন কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করে। বিবাহের পর থেকেই পবিত্র দাশ যৌতুকের দাবীতে শম্পা দাশকে শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতো। এক পর্যায়ে শম্পা দাসের পরিবার পবিত্র দাশকে ষাট হাজার টাকা যৌতুক হিসেবে দেয়। কিন্তু এর কিছুদিন পর পবিত্র দাশ পুনরায় পঞ্চাশ হাজার টাকা যৌতুক দাবী করে। শম্পা দাশ ঘটনার দিন (২২-৪-২৪) পবিত্র দাশকে পুনরায় দাবীকৃত টাকা দিতে পারবে না বলে জানায়।  পবিত্র দাশের মা আরতী দাশ এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এ সময় আরতী দাশের কু-পরামর্শে শম্পাকে গালিগালাজ ও মারধর করে পবিত্র। তখন শম্পা দাশকে বলে যে, তুই মরতে পারিস না, তুই মরলে আমি আবার বিয়ে করবো। শম্পা দাশ এ কথা সহ্য করতে না পেরে ঘটনার দিন আনুমানিক সাতটা পনেরো মিনিটে বসত ঘরের শয়ন কক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। শম্পা দাশের মেয়ে তুলি দাশ (০৮) তার মা’কে ঘরের ভিতরে আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে ডাক চিৎকার করলে শম্পা দাশের শশুরবাড়ীর লোকজর ও আশেপাশের লোকজন এসে শম্পা দাশকে উদ্ধার করে। শম্পা দাশকে উদ্ধার করে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শম্পা দাশের অবস্থা আশংকাজনক দেখে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। তাৎক্ষনিক শম্পা দাশকে এ্যাম্বুলেন্স যোগে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
শম্পা দাশের বড় ভাই মিঠুন দাশ বলেন, আমার বোন শম্পার মৃত্যুর খবর পেয়ে  সাতক্ষীরা হাসপাতালে যেয়ে আমরা শম্পার মৃতদেহ পাই। শম্পার শশুরবাড়ির লোকজন ওর মৃতদেহ রেখে পালিয়েছিলো। পরবর্তীতে ময়না তদন্ত শেষে আমরা তার মৃতদেহের সৎকার করি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর থেকেই পবিত্র দাশ বিভিন্ন সময়ে আমার বোনের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। আমার বোনকে কখনোই শান্তিতে থাকতে দেয়নি পবিত্র দাশ। বিভিন্ন সময়ে যৌতুক দাবী করেছে। তার দাবীকৃত অর্থও দেয়া হয়েছে। আমার বোনের মৃত্যুর জন্য পবিত্র দাশ এবং ওর পরিবার দায়ী।
শম্পা দাশের পিতা অজিত দাশ বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে আমার মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেয়ে জরুরী বিভাগে আমার মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই। সাতক্ষীরা থানার পুলিশ এসে আমার মেয়ের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে। আমার মেয়ের ময়না তদন্তকালে ডাক্তার তার জামার ভিতর একটা সুইসাইড নোট পায়। তিনি বিচারের দাবী করে বলেন, আমার মেয়ের এ আত্মহত্যার পিছনে পবিত্র দাশ জড়িত। 
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক শেখ বুলবুল কবির বলেন, আসামীরা পলাতক রয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সুইসাইড নোটটি সাতক্ষীরা থানা পুলিশ জব্দ করেছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে সুইসাইড নোটটি প্রেরণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। অতি শিঘ্রই সুইসাইড নোটটি পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, আইন অনুসারে বাংলদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ৩০৬ ধারা অনুযায়ী-ব্যক্তির আত্মহত্যায় প্ররোচনার শাস্তি ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং জরিমানা। তবে আত্মহত্যা করতে গিয়ে না মরলে আপনাকে আত্মহত্যা বা নিজেকে ধ্বংস করার অপচেষ্টার অপরাধে এক বছরের জেলে যেতে হতে পারে। দণ্ডবিধির ৩০৯ ধারামতে, যদি আপনি আত্মহত্যা করার উদ্যোগ নেন এবং অনুরূপ অপরাধ অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে কোনো কাজ করেন তা হলে আপনার এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা হতে পারে বা উভয় শাস্তিই হতে পারে।

 

এমএসএম / এমএসএম

কুমিল্লা সীমান্তে সোয়া ১ কোটি টাকার ভারতীয় অবৈধ বাজি জব্দ

শান্তিগঞ্জে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে সভা

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে ওএমএসের চালে অনিয়ম, যৌথ বাহিনীর অভিযানে যুবদল নেতা আটক

নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে কুড়িগ্রামে মহিলা পরিষদের মানববন্ধন

মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত

মানিকগঞ্জে তিন বছরের শিশুকে ধর্ষনের অভিযোগ: গ্রেফতার ১

দাগনভূঞায় সৌদি আরবস্থ ফেনী প্রবাসী ফোরামের ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

গাজীপুরে হোটেল হ্যাঁভেনে পুলিশের অভিযানে ৮ জন আটক, গণবিক্ষোভে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

শ্রীপুরে টুরিস্ট পুলিশ কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যদের মতবিনিময় সভা

আক্কেলপুরে বাজার মনিটরিংয়ে ইউএনও

নবীনগর তিতাস নদীতে অজ্ঞাত ব্যাক্তির ভাসমান মরদেহ উদ্ধার

৭ দফা দাবিতে সারাদেশে ইট বিক্রি বন্ধ ঘোষনা বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান

খালিয়াজুরীতে স্কুল ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে আটক ২