চট্টগ্রামে পাহাড় ঢেকেছে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসে

চট্টগ্রাম ও আশপাশ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসে পাহাড় ঢেকে গেছে। কোন পদক্ষেপ নেই পরিবেশ অধিদফতরের। এদিকে জেলা প্রশাসনের মাইকিং এ সরব পাহাড়ী এলাকা। পাহাড়ে গ্যাস, ওয়াসা, পিডিবিসহ বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠাগুলোর সংযোগ অব্যাহত আছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ বৃষ্টি হলেই পাহাড় কাটে ভূমিদস্যুরা। এ কারণেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে সরতে চায় না বসবাসকারীরা। আবার পাহাড় কাটলেও পরিবেশ অধিদফতরের মাথাব্যাথা নেই। কিন্তু বর্ষা আসার পূর্বে পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসরতদের সরাতে জেলা প্রশাসনের তৎপরতা শুরু হয়। বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের সরিয়ে নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা হলেও পাহাড় ছেড়ে যেতে চায় না কেউ।
পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস ঠেকাতে পারছে না জেলা প্রশাসন। টানা কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের মাটি ধসে আবারও মৃত্যুর রেকর্ড গড়তে পারে চট্টগ্রাম। তাই মৃত্যুকূপ থেকে বাঁচাতে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন টিম ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে মাইকিং অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু যাদের কারণে পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে সেসব ভূমিদস্যুদের আইনের আওতায় আনছে না পরিবেশ অধিদফতর। এমন অভিযোগ চট্টগ্রামে ২০০৭ সালে রেকর্ডসংখ্যক মৃত্যুর ঘটনার পর থেকেই।
ঝুঁকিপূর্ণ এসব পাহাড়ি এলাকার মধ্যে রয়েছে ফয়’স লেকস্থ রেলওয়ের মালিকানাধীন ও কনকর্ড গ্রুপকে লিজ দেয়া পাহাড়। ফিরোজশাহর সী ওয়ার্ল্ড সংলগ্ন পাহাড় যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি শান্তিনগর, জিয়ানগর, মধ্যমনগর ও মুজিবনগর এলাকায়ও পাহাড় কাটা হয়েছে। মতিঝর্ণা এলাকায় ওয়াসার ট্যাংকির পাহাড়, রেলের পাহাড়, আকশাহ এলাকায় রেলের পাহাড়, জাকির হোসেন রোড সংলগ্ন সিটি কর্পোরেশনের মরা ঝর্ণার পাহাড়েও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে হত দরিদ্র অনেক পরিবার। ফয়’স লেনের মধুশাহ পাহাড়, বায়েজিদের মিয়ার পাহাড়সহ জালালাবাদ মৌজায় জেলা প্রশাসনের খাস জমিগুলোও পাহাড়ের কাটা অংশে রয়েছে। মতিঝর্ণার বাটালি হিল, পোড়া কলোনী, একে খানের পাহাড়, আতুরার ডিপো এলাকায় আমিন জুটমিল সংলগ্ন পাহাড়, ভেড়াফকিরের পাহাড়সহ বেশকিছু ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় রয়েছে। খুলশী এলাকায় মধুশাহ পাহাড় এমনভাবে কাটা হয়েছে যে কোন মুহূর্তে খাড়াভাবে ধসে পড়ে প্রাণহানির আশঙ্কা করছে জেলা প্রশাসন।
অবাধে পাহাড় কাটলেও পরিবেশ অধিদফতরের তৎপরতা না থাকায় এমনকি সহযোগিতা থাকায় চট্টগ্রামের ভারসাম্য যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি ভূমিদস্যুরা ভাড়া ও প্লট বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ছে অবৈধভাবে মাটি কেটে ভূমিদস্যুদের প্লট বাণিজ্য করার কারণে। বিভিন্ন পদ্ধতিতে বিশেষ করে বর্ষায় পাহাড়ের চূড়ায় গর্ত করে পানি জমিয়ে মাটি ধসের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে পাহাড়ের মাটি ধসের ঘটনা চট্টগ্রামের বেশিরভাগ এলাকায় ঘটেছে।
পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস সরিয়ে নেয়া প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সকালের সময়ের প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, পরিবেশ অধিদফতরও পদক্ষেপ না নেয়ায় বৃষ্টি হলে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসবাসকারীদের সরাতে দৌড়াতে হয় জেলা প্রশাসনকে। তবে পাহাড় খেকোদের আইনের আওতায় নিয়ে আসলে ভূমিদস্যুদের রোধ করা সম্ভব হত। প্রভাবশালীরা পাহাড় কেটে অবৈধ দখল নিশ্চিত করছে। চালাচ্ছে প্লট ও ভাড়া বাণিজ্য। ফয়’স লেকের পাহাড় কেটে চৌচির করলেও রেল কিংবা কনকর্ড গ্রুপের কোন নজরদারি নেই। তবে জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সম্মিলিতভাবে চট্টগ্রামের সতেরটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং অব্যাহত রেখেছেন। এসবঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অবস্থানরতদের অতি বৃষ্টিতে সরিয়ে নিতে মাইকিং যেমন করা হয়, তেমনি আশ্রয় কেন্দ্রও গড়ে তোলা হয়েছে।
নগরীতে ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়সহ নতুন করে রেলওয়ের মালিকানাধীন ফয়’স লেকের পাহাড়ও ভূমিদস্যুরা কেটে ফেলছে রাতের আঁধারে। বায়েজিদ ফৌজদারহাট লিংক রোডে এশিয়ান উইমেন ইউনির্ভাসিটি সংলগ্ন এলাকায় কেটে চৌচির করে ফেলা হয়েছে পাহাড়। রাস্তা নির্মাণের নামে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকল্প পরিচালক পাহাড় কাটায় ১০ কোটি টাকা জরিমানা গুণতে হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারীতে পরিবেশ মন্ত্রীর পরিদর্শনের কারণেই এ সড়কে দেদারছে পাহাড় কাটার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে পাহাড় কাটার কারণে এমন বার্তায় হস্তক্ষেপ করেছে পরিবেশ অধিদফতর।
এদিকে, ফয়’স লেকের আবদুল হামিদ সড়কে পিডিবির সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে থাকা টিলাটি কাটতে হাজী সলিম উল্লাহ ও সিদ্দিকগংকে সহায়তা করেছে পরিবেশ অধিদফতরের কয়েক অসাধু কর্মকর্তা। অভিযোগ উঠেছে, বিএস দাগ নং-১১০ এ থাকা টিলাটি ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে পরিবেশ কর্মকর্তারা বিলীন করে দিয়েছে। অথচ, এ টিলার উপর পিডিবির ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইন রয়েছে। ভূমিদস্যু চক্রটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য ১২ ফুট রাস্তা তৈরি করে বাড়ী করেছে।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদফতরের মেট্রো অঞ্চলের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা কেউ পাহাড় কাটার অভিযোগ করলে ঘটনাস্থলে যাই। বিশেষ করে শুক্র ও শনিবার বন্ধের দিনে পাহাড়খেকোরা ওৎ পেতে থাকে। তাছাড়া বৃষ্টি হলে পাহাড়ে থাকারাই পাহাড়ের মাটি কেটে পাহাড়কে দূর্বল করে রাখে। ফলে পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এমএসএম / এমএসএম

কুমিল্লায় সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ কিশোর গ্যাং সদস্য গ্রেফতার

ঝিনাইদহে বিশ্ব ও জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস পালিত

সিংড়ায় অনলাইন জুয়ায় বিরোধে প্রান গেলো ব্যবসায়ীর

মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি স্কুলের কম্পিউটার অপারেটর মাসুমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

সাটুরিয়ায় ডোবা থেকে বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার

'জুলাই বিপ্লব' শতাব্দীর পর শতাব্দী আলোচিত হবে, শহীদরাই আজকের মহানায়ক: মাহমুদুর রহমান

৫ হাজার টাকা চাদাঁ না দেওয়ায় সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা ও লুঠপাট থানায় মামলা দায়ের

বিয়ে বাড়িতে হামলা, আসামীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

সদরপুরে মমিন হোটেলে দুই লাখ টাকা জরিমানা

বেরোবি শিক্ষার্থী পরিষদের নামে শিবিরের ২ দিনব্যাপী মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

আত্রাইয়ে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত

শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, নিরাপদ বিকল্প জীবিকা চাই: ক্ষুদ্র জেলেদের ন্যায্য সহায়তার দাবিতে সেমিনার
