চাটমোহরের কাবলী মসজিদ ৪৪১ বছরের মুসলিম ঐতিহ্যের নিদর্শন

পাবনার চাটমোহরের কাবলী মসজিদ মুসলিম সভ্যতার অনন্য নিদর্শন। মসজিদটি দেথতে প্রতিদিন মানুষের ভিড় হয়ে থাকে। প্রায় ৪৪২ বছর আগে নির্মিত শিলালিপি অনুসারে, এই মসজিদের স্থাপত্য এখনও মুগ্ধ করে। জানা যায়, ৪৪১ বছর আগে মুঘল শাসকগোষ্ঠী উপমহাদেশের বেশিরভাগ অংশ শাসন করেছিল। এই দীর্ঘ সময়ে মুঘল সম্রাট ও তাদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য মসজিদ ও ভবন স্থাপন করেন; যা আজও স্থাপত্যের বিরল উজ্জ্বল নিদর্শন হিসেবে বর্তমান।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার এই মসজিদ তারই সাক্ষ্য বহন করে। মসজিদের শিলালিপি ও নকশা থেকে মুঘল আমলের স্থাপত্য নিদর্শন ফুটে উঠেছে। মসজিদটির গম্বুজের গোড়ায় একটি সরু ও লম্বা শিলালিপি রয়েছে। সেখানে নির্মাণের বছর ১৫৮১। শিলালিপির নকশায় খোদিত, মাসুম খান মুঘল সম্রাট আকবরের অনুমতি নিয়ে কাবলি মসজিদ নির্মাণ করেন।
কাবলী মসজিদের ভিতওে দৈর্ঘ্য ৩৪ হাত, প্রস্থ ১৫ হাত এবং উচ্চতা প্রায় ৩০ হাত। মসজিদটি ছোট পাতলা নকশার লাল জাফরি ইট দিয়ে নির্মিত। মসজিদের প্রাচীর সাড়ে চার হাত চওড়া। তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদের সামনে এখনো কালো পাথরের টুকরো রয়েছে যার গায়ে কালেমা তাইয়েবা লেখা রয়েছে।
সরেজমিনে মসজিদে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদের তিনটি প্রবেশপথ রয়েছে। মূল প্রবেশপথ ছাড়া বাকি দুটি প্রবেশপথ একই রকম। মসজিদের তিনটি প্রবেশপথের সাথে মিল রেখে পশ্চিম দেয়ালে মোট তিনটি মিহরাব রয়েছে। কেন্দ্রীয় মিহরাব থেকে দুই পাশের মিহরাব পর্যন্ত বড় সুড়ঙ্গের মতো চমৎকার নিদর্শন রয়েছে।
মসজিদটি সুলতানি-মুঘল স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত বলে ধারণা করা হয়। মিম্বরের পাশে রুক্ষ পাথরের মতো কালো রঙের পাথরের আরেকটি সৌন্দর্য। মসজিদের একপাশে ফারসি ভাষায় মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস এবং অন্য পাশে ছিল বিষ্ণু ও শিবের ছবি সম্বলিত পাথরের খন্ড। পাথরের খন্ডটি বর্তমানে রাজশাহী বরেন্দ্র জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
জানা গেছে, মসজিদটি ১৯৮০ সালে প্রত্নতত্ব¦ অধিদপ্তর কর্তৃক অধিগ্রহণ করা হয়। মূল কাঠামো বজায় রেখে অধিদপ্তর কর্তৃক মসজিদটি একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে। এখন মসজিদটি তার অতীতের অনেক সৌন্দর্য ফিওে পেয়েছে।
মাসুম খান ছিলেন সম্রাট আকবরের পাঁচ হাজার সৈন্যবাহিনীর সেনাপতি। তার পূর্বসূরি সুলতান হোসেন শাহের শাসনামলে তিনি কাবুল থেকে এদেশে আসেন এবং চাটমোহর অঞ্চলে বসবাস শুরু করেন। তার পূর্বপুরুষরা ছিলেন কাবুলের খোরাসানের তুরাবতী বংশের কাকশাল বংশের সৈয়দ। তার চাচা মির্জা আজিজ কাকশাল ছিলেন সম্রাটের উজির। মাসুম খান বিশ বছর বয়সে সম্রাট আকবরের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। মাসুম খান কাবলী তাদের বিদ্রোহের সময় বাংলার বার ভূঁইয়াদের সাথে যোগদন এবং আকবরের সেনাপতি ও গভর্নর শাহবাজ খানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মাসুম খান শীতলক্ষা তীরের (গাজীপুর) ঘন জঙ্গলে আত্মগোপন করেন। সেখানে ৪৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
বর্তমানে কাবলী মসজিদ ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহল। আর পেশ ইমাম হিসেবে হাফেজ কাজী আবদুস সালাম মাসুদ এবং মুয়াজ্জিন হিসেবে তরিকুল ইসলাম আছেন। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি এই শাহী মসজিদ দেখভাল করছেন।
তবে স্থানীয়দের কাছে এটি শাহী মসজিদ নামে পরিচিত। চাটমোহরের এই মসজিদে সারা বছরই বহু মানুষ বেড়াতে আসেন।
ইমাম হাফেজ কাজী আবদুস সালাম মাসুদ বলেন, মসজিদটি দূর থেকে বিশাল মনে হলেও ভেতরে মাত্র দুটি সারি রয়েছে। দুই রাকাতে লোক নামাজে দাঁড়াতে পারে। এই মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত ও জুমার নামাজ পড়া হয়। এছাড়া মসজিদের বাইরে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় প্রতিদিনই বহু মানুষ মসজিদটি দেখতে, ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে আসেন। তিনি আরও বলেন, ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ একটি মসজিদের ইমাম হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়া বাজারে সরকারি সড়ক গিলে খাচ্ছে তিনতলা ভবন

জয়ের ঘ্রাণ পাচ্ছেন শেখ সাদী ?

যমুনা ব্যাংকের ঢাকা উত্তর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ম্যানেজারস’ মিটিং অনুষ্ঠিত

মিরসরাইয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন অবৈধ বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দিল উপজেলা প্রশাসন

চিলমারীতে যৌথ অভিযানে, অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম পেলেন বাঘার জাহিদ

মহেশখালীতে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

তাড়াশে আগুনে বসত ঘর পুড়ে ছাই, ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

সুবর্ণচরে বিশিষ্ট সমাজসেবক আকবর হোসেনকে সংবর্ধনা

কোটালীপাড়ায় পুকুরে ডুবে প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু

ধামরাইয়ে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
