চৌদ্দগ্রামে ৪০ দিন ধরে মরণ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ ইয়াকুব
পঞ্চম শ্রেণি পাস মো. ইয়াকুব হোসেন। বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাতিসা ইউনিয়নের বরৈয়া গ্রামে। কৃষক বাবার সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে খুব অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হন। স্থানীয় এক রাজমিস্ত্রির সাথে হেলপার হিসেবে সামান্য বেতনে কাজ করতেন ইয়াকুব।
গত ৫ আগস্ট বিকেলে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এলাকার অন্যদের সাথে আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণ করতে গিয়েছিলেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা শহরে। ওই দিন বিকেলে আনন্দ মিছিলকারী ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষের সাথে থানা পুলিশের হামলা-পাল্টা হামলা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ইয়াকুব হোসেন থানার দক্ষিণ পাশে নিরাপদ দূরত্বেই ছিলেন। কিন্তু বিধির লিখন, যায়না খণ্ডন। এ সময় পুলিশের ছোড়া দুটি গুলি এসে লাগে ইয়াকুবের দুই পায়ে। বাম পাশের হাঁটুর নিচে লাগা গুলিটি একপাশ দিয়ে প্রবেশ করে অপর পাশ ভেদ করে বেরিয়ে যায়। আর ডান পায়ের একপাশ ঘেঁষে লাগা গুলিটি হাঁটুর নিচের চামড়া ছিঁড়ে চলে যায়।
পরে অচেতন অবস্থায় উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম সরকারি হাসপাতালে নেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। দুই সপ্তাহের অধিক সময় চিকিৎসা গ্রহণ শেষে বাসায় ফিরলেও শারীরিক অবস্থার তেমন একটা উন্নতি হয়নি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নীবিড় পর্যবেক্ষণে সব সময় থাকতে হচ্ছে তাকে। প্রায় তিন সপ্তাহ পর সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টিম এসে তাকে বাড়ি থেকে চিকিৎসা প্রদানের জন্য নিয়ে যায়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কুমিল্লা সিএমএইচ হাসপাতালে এক সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিৎসা দেয়া হয় তাকে। এরপর বাসায় ফিরলেও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা সেবা এখনো চলমান। এক্ষেত্রে স্থানীয়রা বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ করে সহযোগিতা করলেও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার জন্য তা পর্যাপ্ত নয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে।
এদিকে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বিছানায় পড়ে থাকায় মা-বাবার পক্ষে সংসার চালানো বেশ মুশকিল হয়ে পড়েছে। অভাবের সংসারে যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায়, সেখানে প্রতিদিন ইয়াকুবের চিকিৎসা খাতে খরচ হচ্ছে অনেক টাকা। এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। তারপরও পরিবারের লোকজন ধৈর্যহারা হননি। এক দিন সুস্থ হয়ে ইয়াকুব স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে বলে মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের বিশ্বাস।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে রবিবার দুপুরে গুলিবিদ্ধ ইয়াকুব হোসেন বলেন, উৎসুক জনতার সাথে আনন্দ মিছিল দেখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আজ মরণ যন্ত্রণায় বিছানায় কাতরাচ্ছি। প্রচণ্ড ব্যথায় রাতে ঘুমাতে পারি না। আমার কারণে পরিবারের সকলের রাতের ঘুমও হারাম হয়ে গেছে। দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ফলে আর্থিক সমস্যাসহ পরিবারকে পড়তে হয়েছে নানা সমস্যায়। চিকিৎসার ব্যয় বহনে আমার গ্রামের বিত্তবানসহ যুবসমাজ এগিয়ে এসেছে। তারপরও বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি আজ। আমি সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর সাহায্য, সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।
ইয়াকুব হোসেনের পিতা জাফর আহমেদ জানান, ছেলের এই অবস্থায় কোনো কূল পাচ্ছি না। সমাজের লোকেরা এগিয়ে আসায় কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়েছে। এ সময় তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে মহান রবের সাহায্য প্রার্থনা করেন।
বড় বোন সাবরিনা ও হোসনা বলেন, একমাত্র ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে আজ এক মাসের অধিক সময় বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছে। চোখের সামনে কলিজার টুকরা ভাইয়ের এমন অসহায়ত্বে বোন হিসেবে সেবা ছাড়া কিছুই করতে পারছি না। আমরা দোয়া করি, আল্লাহ যেন প্রিয় ভাইকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন।
এমএসএম / জামান
কোন লুটেরা, চাঁদাবাজ ও বল প্রয়োগকারীকে ভোট দেবেন না; গণসংযোগে রাশেদ খান
খানসামা টিটিসিতে ধর্মীয় বৈষম্য–নির্যাতনের অভিযোগ: জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিতে তদন্ত আবেদন
কেরুজ ভোটের দাবীতে আন্দোলনের শুরুর দিনেই দুপক্ষের মারামারি
নওগাঁয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ধলু’র উদ্যোগে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল
কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত রাস্তা ৩৪ ফুট প্রশস্ত করার দাবিতে মানববন্ধন
নৈয়াইর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় নিয়োগ অনিয়মের অভিযোগ প্রত্যাহার
রামগঞ্জে যুবদল কর্মীর ছুরিকাঘাতে বিএনপি কর্মী খুন
ঠাকুরগাঁওয়ের ফকিরপাড়া থেকে মটরসাইকেল চুরি : মামলা
কলাবাড়িয়া ইউনিয়নে দিনব্যাপী গণসংযোগে সরব জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কায়সার
কর্ণফুলী'তে হত্যা'সহ একাধিক মামলার এজাহার ভূক্ত আসামি সাজু হাসান গ্রেপ্তার
শীতের আগমনে লেপ তোষকের ব্যস্ততা; পলাশবাড়ীতে জমে উঠেছে ধুনকরদের শীতের বাজার
কাপ্তাই ১০ আর ই ব্যাটালিয়ন কর্তৃক বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান