ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

জগলুল হায়দার : তরুণ ছড়াকারের ভরসাস্থল


সাহিত্য ডেস্ক photo সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮-১০-২০২৪ দুপুর ৪:৫৪

জগলুল হায়দার, সময়ের অন্যতম সেরা ছড়াকার। ছড়ায় অন্ত্যমিলের জাদু দেখেই তাঁর ছড়ার ভক্ত বা পাঠক হয়ে যায় যে কেউ। পরিচিত হওয়ার পর যে কেউ বুঝতে পারবে শুধু ছড়ায় জাদু নয়, জাদু রয়েছে তাঁর বিশাল হৃদয়েও। মুগ্ধ হতে হবে ছড়ার জাদুকর জগলুল হায়দারের ভালোবাসায়।ছড়ার প্রাণপুরুষ প্রিয় এই মানুষটি চিরতরুণ, প্রচণ্ড আধুনিক (তিনি অবশ্য দর্শনের দিক থেকে উত্তরাধুনিকতার অভিযাত্রী)। অনেক ছড়াকারের প্রাণের মানুষ তিনি। ছড়াসাহিত্য যারা পছন্দ করেন বা ছড়ায় যাদের আগ্রহ জগলুল হায়দারের ‘বারোভাজা’র সাথে তারা প্রায় সবাই পরিচিত বলে বিশ্বাস। জগলুল হায়দার ছড়াসাহিত্যে তাঁর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বা স্টাইল তৈরিতে সফল। বিচিত্র বিষয়ে ছড়া লিখেন তিনি।

ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া বলেন, ‘জগলুল হায়দারকে নানা কারণেই বিশিষ্ট মনে হয়েছে। কেবল বিষয়ের প্রাচুর্য, উপস্থাপনার চমকদারি আর ছন্দের কারুকাজেই নয় বরং সামগ্রিকভাবে সমকালকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তার ভাব ও ভাষাগত দক্ষতাও অন্যদের থেকে তাকে আলাদা করেছে। আর তার ফলও মিলেছে হাতেনাতে। শুনেছি আজকাল অনেক তরুণ ছড়াকার তাকে ছড়ার জাদুকর কিংবা ছড়াসম্রাট বলে থাকে। ভালোবাসার এই ডাকই প্রমাণ করে জগলুল ছড়ায় সমসাময়িককালে মানুষের বুকে কতটা আসন নিতে পেরেছেন। বাংলা ছড়ার ভুবনে জগলুল অনেকটাই ঝড়ের বেগে প্রবেশ করে তার দীপ্ত উচ্চারণে ছড়ার জগৎকে কাঁপিয়ে দেয়। জগলুলের এই তেজোদীপ্ত আওয়াজ আমাকে আশাবাদী করে।’

ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন বলেন, ‘বিষয়বৈচিত্রের কারণে জগলুল হায়দারকে আলাদা করে চিহ্নিত করতেই হয়। তার কাছ থেকে আমরা পেয়েছি বিজ্ঞানের ছড়া, প্রযুক্তিবিষয়ক ছড়া, পেয়েছি সমসাময়িক রাজনৈতিক ছড়া এবং প্রেমের ছড়াও। শিশুতোষ ছড়া লেখার পাশাপাশি বয়স্কজন-পাঠ্য ছড়া নির্মাণে সমান উৎসাহী জগলুল। জগলুলের ছড়া পাঠ করে তাকে আমার মনে হয়েছে, প্রতিনিয়ত তিনি নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। জগলুলের হাত ধরে আমাদের ছড়াসাহিত্য পত্রপল্লবে মুখরিত হয়ে উঠবে।’

ছড়ার জাদুকর জগলুল হায়দারের ছড়াসমগ্র ১ প্রকাশের সময় অফার দেয়া হয় প্রথম একশজন ক্রেতা পাবেন লেখকের সঙ্গে ডিনার করার সুযোগ। বেশ চমকপ্রদ আইডিয়া ছিল। বাংলাদেশে অন্য অঙ্গনে এই বিষয়ের রেওয়াজ থাকলেও কোনো লেখকের বই কিনে ডিনারের সুযোগ এবং অটোগ্রাফ ও ফটোগ্রাফ পাওয়া ছিল সত্যিই অভিনব। বইটি প্রকাশ করেছিল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বাবুই।  
খুব সাধারণ থেকেও অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ জগলুল হায়দার। তার ছড়া পাঠের সময় মনে হয় সমাজের কথা শুনছি, দেশের কথা শুনছি, প্রতিবাদের কথা শুনছি, মানুষের কথা শুনছি এবং নিজের মনের কথাই পাঠ করছি। এককথায় বাস্তবতার শক্তিশালী হাতিয়ার জগলুল হায়দারের ছড়া। তার লেখা ছড়া একজন তরুণ ছড়াকারের চিন্তার পরিধি বাড়বে। ছড়া লেখার ধারণা নতুন রূপ নেবে। জগলুল হায়দারের ছড়া পাঠে অবিশ্বাস্য উপকৃত হবে। তার ছড়ায় সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে অন্ত্যমিলের খেলা, ছড়ার ভাঙাগড়ার কারিশমা। এক কথায় অসাধারণ বিচিত্র বৈচিত্রের পাঠশালা জগলুল হায়দারের ছড়া। মাত্রা, অন্ত্যমিল আর ছন্দের ক্লাস রোজ করি জগলুল হায়দারের ছড়া পাঠ করে। ছড়াকারের ছড়া সম্পর্কে ভালো ধারণা নিতে এবং ছড়া শেখার জন্য জগলুল হায়দার একজন শিক্ষক, একটি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা রাখবে।

এমএসএম / এমএসএম