ইঁদুরের গর্তের ধান সংগ্রহে মেতে উঠেছেন শিশু-কিশোররা
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে আমন ধান কাঁটা ও মাড়াইয়ের কাজ অব্যাহত রয়েছে। এবারে আমন ধানের ফলন ভাল হয়েছে। রাজারহাট উপজেলায় এবছরে আমন ধানের লক্ষমাত্রা ছিল ১১হাজার ৯'শ ৫০ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ১১হাজার ৮'শ ৯ হেক্টর। বন্যার কারণে ৫০ হেক্টর ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস।
গত ২/৩সপ্তাহ ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা ধান কেঁটে জমিতেই শুকিয়ে নেয়ার পর ধানসহ খড় বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে মাড়াই করে গোলায় ধান ভরছেন। এবারে প্রতিকেজি আমন ধানের সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০টাকা। প্রতিমণ ধান ধরা হয়েছে ১২'শ টাকা। কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ধান ১৩শ টাকার উপরে। প্রতি বছরই আমন ধানের ক্ষেতে ইঁদুর বাসা বাধে। ধান পাকার সাথে সাথে ইঁদুর সেই আমন ধান কেটে গর্তে ভরাট করে। ধানের ক্ষেতে ইঁদুরের ধান কাঁটা দেখে অনেকের মাথায় হাত পড়ে। তারপরও কিছু করার থাকে না কৃষকের।
ক্ষেতে যেটুকু ধান থাকে সেইটুকুই কেটে নিয়ে সন্তোষ্ট থাকতে হয় । ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার পর ফাঁকা জমিতে অভাবী কিছু গৃহবধূ ও শিশুদের কোলাহল পড়ে। তারা ইঁদুরের গর্তের ধান সংগ্রহে ডালি-কুলা বস্তা ও পাসুন-কোদাল নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে। সারাদিন তারা বিভিন্ন জমির ইঁদুরের গর্ত খুঁজে বের করে কোদাল পাসুন দিয়ে গর্ত খুঁড়ে সেই গর্তে হাত ঢুকে দিয়ে ধান বের করে নিয়ে আসে। এভাবে শিশু-কিশোররা ও অভাবী গৃহবধুরা ইঁদুরের ধান সংগ্রহে মেতে উঠেন।
চাকিরপশার ইউনিয়নের কৃষক নূরনবী বলেন , প্রতিবছরই আমন ক্ষেতের ধান ইঁদুর কেটে গর্তে নিয়ে যায়। ক্ষেতে গেলে ইঁদুরের অত্যাচার দেখলে অবাক হয়ে যাই। ইঁদুরের গর্তের ধান সংগ্রহ করা শিশু পুলক বলেন এই ধান একসঙ্গে করে বিক্রি করে নতুন জামা কাপড় কিনবো।
চাকিরপশার চক নাককাটি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার জবা রানী রায় বলেন, ইঁদুর মারা জন্য বিষ টোপ ও ফাঁদ ব্যবহার করে ইঁদুর নিধন করার পরামর্শ দেয়া হয় কৃষকদের। তারপরও আমন ক্ষেতের ধান ইঁদুর কেটে ফেলে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সামসুন্নাহার সাথী বলেন, ইঁদুরের গর্তে ধান থাকে ঠিকই। কিন্তু শিশুরা যেন সেই গর্তে হাত প্রবেশ না করে সেদিকটা খেয়াল রাখতে হবে। কারণ ইঁদুরের গর্তে বেশীরভাগ সময়ে ইঁদুর ধরার জন্য বিষধর সাপ থাকতে পারে।
T.A.S / T.A.S