ঘটনাস্থলে না থেকেও মামলার আসামী একই পরিবারের সাতজন

কুতুবদিয়ায় একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মসূচিতে দুপুরের খাবারের প্যাকেট বিতরণকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হয় ফরহাদ নামের এক যুবক। ওই ঘটনায় সাবেক এক ইউপি সদস্যের ষড়যন্ত্রে ঘটনাস্থলে না থেকেও মামলার আসামী হয়েছেন বর্তমান ইউপি সদস্যসহ একই পরিবারের সাতজন।
জানা গেছে, গত ২৩ মে বিকেলে কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের শান্তিবাজার এলাকায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশুশ্রম রোধে আলোচনা সভা শেষে খাবারের প্যাকেট বিতরণকে কেন্দ্র করে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় নিহত হন আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের মো. আরাফাতের ছেলে
ফরহাদ হোসেন (২৪)। ওই ঘটনায় নিহতের মা আমিনা বেগম বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামী করে কুতুবদিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মামলার ঘটনায় জড়িত না থেকেও আসামী হয়েছেন আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের আব্দুল হাদি সিকদার পাড়ার শাহাব উদ্দিনের ছেলে মোশারফ হোছাইন, মোবারক হোসেন, ও মহিউদ্দিন। এছাড়া একই এলাকার মৃত ছৈয়দুল হকের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন ও তার তিন ভাই শাহাব উদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন এবং সাদেক হোসেন।
এদিকে মামলার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন আসামিরা। স্থানীয়রা জানান, হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত থাকার পরেও মামলার ১ নম্বর স্বাক্ষী হয়েছেন আরাকান। তাদের দাবী আরকান ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত। সে হারুন মেম্বারের ডান হাত। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে হারুণ মেম্বারের সহযোগিতায় আরকান এখন দেশ ছেড়ে বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়া হারুণ মেম্বার নিজে মারামামির ঘটনায় জড়িত থাকার পরেও পূর্ব শত্রুতার রেশে নীরিহ অনেককেই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন তারা।
ফরহাদ হত্যার পর মামলার বাদী আমিনা বেগমের দেওয়া একটি ভিডিও আসে প্রতিবেদকের হাতে। ভিডিওতে তিনি বলেন, আমার ছেলে ফরহাদকে শেফায়েত চুরি মেরে হত্যা করেছে। ওই সময় নিহতের স্ত্রীও বাদীর বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেন। তবে পরবর্তীতে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হারুণ অর রশিদের প্ররোচনায় সম্পূর্ণ বিপরীত মামলা করেন বাদী। একটি এনজিও-র বিরিয়ানির প্যাকেট ভাগাভাগি নিয়ে হত্যাকান্ড হলেও মামলার এজাহারে সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয় ও পটভূমি উল্লেখ করা হয়। যাহা এজাহারে উল্লেখ করে জমির বিরুদ বলে, তাহা স্থানীয় ভাবে তদন্ত করিলে বিরুদ সৃষ্ট হওয়ার মত জমি বাদিনীর পরিবারের নাই মর্মে প্রতীয়মাণ হয়। সাবেক হারুণ মেম্বারের কথায় প্ররোচিত হয়ে একটি পরিবারকে টার্গেট করে ওই পরিবারের ৭ জনকে আসামি করা হয়। অথচ ঘটনাকালীন সময়ে বেশির ভাগই এলাকার বাইরে অবস্থান করছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মামলায় অভিযুক্ত সাদেক হোসেন বলেন, মারামারির ঘটনায় নিহত ফরহাদ আমার পরিবারে সদস্যের মতোই ছিলো। তার মাও আমাদের বাড়িতে বাড়ীর সদস্যের মত থাকতেন এবং বাড়ীর কাজকর্মেও সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করতেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় আমরাও ব্যাতিত। এমনকি ফরহাদ হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার মা সংবাদ সম্মেলনে শুধু শেফায়েত নামের একজন ব্যাক্তির নামই বলেছিলো। কিন্তু হত্যাকান্ডের পর মূল ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে ব্যাক্তিগত শত্রুতার রেশ ধরে সাবেক ইউপি সদস্য হারুণ শোকাহত পরিবারকে ইন্ধন দিয়ে আমাদের পরিবারের সবাইকে আসামী করেছে। আমি এই মিথ্যা মামলায় চার মাস জেল কেটেছি। এমনকি জেলে থাকা অবস্থায় আমার দোকানে থাকা প্রায় আট লাখ টাকার মালামাল পর্যন্ত লুট করেছে তারা।
মামলায় অভিযুক্ত মহিউদ্দিন বলেন, গত ২৩ মে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কক্সবাজার ইউনিট কর্তৃক কুতুবদিয়া উপজেলার গ্রিপ প্রকল্প অফিসে কমিউনিটি অর্গানাইজার পদে যোগদান করি। দুপুর ১২:৪০ টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সেখানে ছিলাম। অফিসে শেষ করে শুনতে পায় আলী আকবর ডেইল শান্তির বাজার এলাকায় বিরিয়ানীর প্যাকেটকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় একজন নিহত হয়। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি ওই মামলার আসামী। ঘটনাস্থলে না থেকেও ষড়যন্ত্র মূলক আমাকে মামলার আসামী করা হয়েছে। পরে জামিন চাইতে গিয়ে আড়াই মাস জেলও কেটেছি আমি। এই মামলায় আমি সহ অনেক নীরিহ আসামী রয়েছে।
আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীর বিচার চাই।মামলায় অভিযুক্ত মোবারক হোসেন বলেন, শান্তিবাজারের একটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় আমাকে আসামী করায় আমি খুব বিস্মিত হয়েছি। ওই মামলায় হত্যাকান্ডের যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে সে সময়ে আমি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে ছিলাম। যার সি সি টিভি ফুটেজ, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর ও ওই সময়ে কোথায় ছিলাম তার কল ডিটেইলস রেকর্ডও সংরক্ষিত রয়েছে। ঘটনাস্থলে না থেকে আমাকে হত্যা মামলার আসামী করা হয়েছে। ওই মিথ্যা মামলায় আড়াই মাস জেলও কেটেছি আমি। এ ঘটনায় প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানিয়েছেন মোবারক হোসেন।
মামলায় অভিযুক্ত সাহাবউদ্দীন বলেন, সাবেক ইউপি সদস্য হারুণ তার ব্যাক্তিগত উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বাদীকে প্ররোচিত করে আমাদের একই পরিবারের ৭ জনকে আসামী করেছে। মামলাকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যেতে ঘটনায় জড়িত আসামীদের অপরাধের বর্ণনা এজাহারে সঠিকভাবে না করে আমি সহ আমার পরিবারের সদস্যদের উপর দোষারোপ করে। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হল এই ঘটনায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হারুন মেম্বার নিজে এবং পরিবারে সদস্যদের নিয়ে মারামারিতে লিপ্ত ছিলো। যার প্রমাণ ভিডিও ফুটেজে রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদী আমিনা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আরমান উদ্দিন জানান, ফরহাদ হত্যাকান্ডের ঘটনার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। তবে নীরিহ কেউ যদি আসামী হয়ে থাকে তদন্তের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন বলেন, ফরহাদ হত্যা মামলায় সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। ঘটনায় জড়িত ছিলো না এমন কাউকে আসামী করা হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে বাদ দেওয়া হবে।
এমএসএম / এমএসএম

ভারত থেকে আসা মরিচের ট্রাকে অস্ত্র-গুলি, ২ ভারতীয় আটক

পাবনায় দু'পক্ষের সংঘর্ষে টেটা বিদ্ধ হয়ে যুবকের মৃত্যু

জুড়ীতে টিকটকে প্রেম, দেখা করতে গেলে মেয়ের স্বজনেরা দিলেন বাল্য বিয়ে: থানায় মামলা

বেনাপোলে এয়ার পিস্তল ও গুলি সহ আটক ২

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে চাকরি করে জাহিদুল পেয়েছে আলাদিনের চেরাগ

সুবর্ণচরে স্বেচ্ছাসেবকদল চরক্লার্ক ইউনিয়ন কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত

শ্রীনগরে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রচনা-ক্বেরাত প্রতিযোগিতা

ত্রিশালে উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধের ঘুষ বানিজ্যসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

নাঙ্গলকোটে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

দুমকীতে ধারের টাকা তুলে দিতে না পারায় স্ত্রীর আত্মহত্যা

সাঘাটায় এনসিপি নাম ভাঙিয়ে বাপ–ছেলের চাঁদাবাজির অভিযোগ

বালিয়াকান্দিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১ নিহত ১ আহত
