ঘুষের টাকায় ফ্ল্যাট, গাড়ি কিংবা জমি কি নেই ভূমি কর্মকর্তা মনছুরের
ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আবুল মনছুরের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ আছে, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে খতিয়ান জালিয়াতি, দলিল জালিয়াতি, তদন্ত রিপোর্ট নয়ছয় ও খাস জমি খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত করে বিক্রিসহ নানান অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, মোঃ আবুল মনছুর চাকরীতে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েক বছরে বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। আবার এই অবৈধ টাকায় কিনেছেন ফ্ল্যাট, নামে-বেনামে কিনেছেন একাধিক জমি, রয়েছে বিলাসবহুল গাড়ি, দখলে রেখেছেন কয়েক একর সরকারী খাস জমি।
ক্ষমতার অপব্যাবহার, ঘুষ বাণিজ্য, জালিয়াতি, হয়রানি ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এই ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রণালয়, দূর্নীতি দমন কমিশন, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন কয়েকজন ভূক্তভোগী।
এছাড়াও দলিল জালিয়াতি, খতিয়ান জালিয়াতি, পরিচয় পত্র জালিয়াতি, সরকারী খাস জমি বিক্রি, টাকার বিনিময়ে মামলার তদন্ত রিপোর্ট নয়ছয় ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানা, রাঙ্গুনিয়া থানা, চট্টগ্রাম চীফ মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট আদালত ও কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে কয়েকটি মামলা দায়ের করেছেন দুদক, ছাত্র জনতা ও ভূক্তভোগীরা।
শুধু তাই নয়, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের জমির দলিল জালিয়াতি, খতিয়ান জালিয়াতি ও পরিচয় পত্র জালিয়াতির অভিযোগে ২০১৪ সালে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগী মকবুল আজিজ ইবনে নূর। ওই মামলাটি দূর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। দীর্ঘ ৫ বছর তদন্তের পর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আবুল মনছুরকে ৮ নং আসামী করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সকিউল্লাহ।
ভূক্তভোগীদের দাবী, এত মামলা ও অভিযোগ থাকার পরেও আবুল মনছুরের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন না করে উল্টো প্রমোশন দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
সূত্র জানায়, ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আবুল মনছুরের হাত অনেক লম্বা। ভূমি মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তার নিজস্ব লোক রয়েছে। তাই কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করলেও উর্ধতন কর্মকর্তা বরাবর পৌছায় না। তার বিরুদ্ধে যাওয়া সব ধরনের অভিযোগ ও তার বিরুদ্ধে যাওয়া নথিগুলো গায়েব করে ফেলেন তারা। অনুসন্ধানে নথি গায়েব করার প্রমাণও মিলেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর মোঃ আবুল মনছুরের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কামাল উদ্দিন নামের এক ভূক্তভোগী। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৩ নভেম্বর স্মারক মূলে বিধি মোতাবেক ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন বিভাগীয় সিনিয়র সহকারী কমিশনার তাহমিনা আক্তার। যদিও মনছুরের নির্দেশে ওই চিঠিটি গায়েব করে ফেলেন এডিসি রেভিনিউ এর গোপনীয় সহকারী মোঃ ইসহাক।
এছাড়াও চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলায় ভারপ্রাপ্ত তহসিলদার থাকাকালিন মোঃ আবুল মনছুর ২০১৯-২০ সালের ১৩৩ নং রিভিউ (বিবিধ) মিচ মামলায় খাস জমি খতিয়ানে এনে বাদীর কাছ থেকে পাওয়ার অব এটর্নি নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত দায়ের করেন এক ভূক্তভোগী। ওই অভিযোগ তদন্তের পর প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের ২৩ মে আবুল মনছুরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য স্মারক মূলে চিঠি ইস্যু করেন তৎকালীন এডিসি রেভিনিউ বিভীষণ কান্তি দাশ। ওই চিঠিও গায়েব করে ফেলেন গোপন সহকারী মোঃ ইসহাক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার ভেওলা মানিকচর মৌজার ৭০৫ নং বিএস খতিয়ানের নালিশী জমি এল আর মিচ মামলা ৫১/১৯৭২-৭৩ মূলে স্থানীয় জমিদার মকসুদ আহমদ সরকার বরাবর সমর্পন করেন। তফসিলের ৭০৫ নং খতিয়ানটি বিবিধ (গোপনীয় জমি উদ্ধার) মিচ মামলা ৪৭/৯৪-৯৫ মূলে ১ নং খাস খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত হয়। কিন্তু ২০২০ সালে মোঃ আবুল মনছুর পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব নেওয়ার পর গোপনে উক্ত খাস জমি অবমুক্ত করে পূর্বের ৭০৫ নং খতিয়ানে পুনর্বহাল করেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, খাস জমি অবমুক্ত করার এখতিয়ার শুধু বিচারিক আদালতে থাকলেও মোঃ মনছুর আলম একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে খতিয়ানের মালিকের কাছ থেকে পাওয়ার অব এটর্নি নিয়ে উক্ত জমি বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি হাতিয়ে নেন কয়েক কোটি টাকা।
অভিযোগের বিষয়গুলো অস্বীকার করে চিরিঙ্গা সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আবুল মনছুর বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনেকেই সংবাদ প্রকাশ করার জন্য এসেছিলো। কিন্তু তারা কেউ করেনি। অনেক মামলা বা অভিযোগ আমি শেষ করেছি। আপনাকেও আমি সরাসরি এসে বুঝিয়ে দিব বলে অভিযোগের বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আপনার কাছ থেকে জানলাম। শীঘ্রই অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন হবে। ব্যাবস্থা গ্রহনের চিঠির বিষয়ে কিছুই জানেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন বলেন, আমরা অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। ছিল না।
এমএসএম / এমএসএম
সিরাজগঞ্জ-৪ আজাদকে প্রার্থী দিলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতবে ধানের শীষ
নোয়াখালীতে সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত উদয় বৃত্তি পরীক্ষা–২০২৫
গাইবান্ধা সাঘাটায় ৭ নভেম্বর: বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন
সাটুরিয়ায় ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত
বালিয়াকান্দিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লাক্ষপতি বেকার যুবক রিপন
ভূরুঙ্গামারীতে মায়ের অভিযোগে মাদকাসক্ত ছেলে গ্রেফতার
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জয়পুরহাটে র্যালী ও আলোচনা সভা
অভয়নগরে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসা পেলেন এক হাজার মানুষ
মনপুরায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি'র ঐক্যের প্রত্যয়।বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত
মোরেলগঞ্জে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে র্যালী ও আলোচনা
রায়পুরে জামায়াত প্রার্থীর মটরসাইকেল শোভাযাত্রা
চন্দনাইশে এলডিপিতে যোগ দিলেন চেম্বার অব কর্মাসের ভাইচ প্রেসিডেন্ট এম মাহাবুব চৌধুরী