ফরিদগঞ্জে এক পরিবারে ছয় প্রতিবন্ধীর মানবেতর জীবন

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম বড়ালী গ্রামে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। আজিম বাড়ির বাসিন্দা মনুহর ও ফুল বানু দম্পতির আট সদস্যের পরিবারটির ছয়জনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের এই মানবেতর জীবনযাপন স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মনুহর ও ফুল বানু দম্পতির পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে শুধুমাত্র বড় মেয়ে সুস্থ আছেন। বাকি ছয়জন, নুরুল ইসলাম (৪১), তাজুল ইসলাম (৩৯), জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৫), বিল্লাল হোসেন (৩৪), মো. আবদুর রব (৩২) এবং রেহানা বেগম (২৩)— সবাই শারীরিক প্রতিবন্ধী। সুস্থ স্বাভাবিকভাবে জন্ম নিলেও ৬ থেকে ৭ বছর বয়সে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তারা প্রতিবন্ধী জীবনে প্রবেশ করেন। সুস্থ থাকা একমাত্র মেয়ে মিসু আক্তার প্রিয়া (৩৩) সাংসারিক কাজকর্মে সহযোগিতা করেন। এই প্রতিবন্ধকতা তাদের দাম্পত্য জীবনেও পা রাখতে দেয়নি। অর্থাভাবে নানান রোগের চিকিৎসা হচ্ছে না, অর্ধাহারে-অনাহারে কাটছে তাদের জীবন। ভালো বাসস্থানের অভাবে পুরো পরিবারের জীবনযাপন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।
জানা যায়, পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মনুহর দিনমজুরের কাজ করে এই প্রতিবন্ধী সন্তানদের জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু গত দেড় বছর আগে স্ট্রোক করে তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে পরিবারটিতে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। বর্তমানে তারা নিজেদের ঘরে শিশুদের খাদ্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করছেন।
প্রতিবন্ধীদের মধ্যে আবদুর রব জানান, "শরীরে শক্তির অভাবে আমরা হাঁটতেও পারি না, তাই ভিক্ষাও করতে পারি না। ঘরে শিশুদের খাদ্য বিক্রি করে দৈনিক ৭০ থেকে ১০০ টাকা আয় হয়। আট সদস্যের পরিবারে খরচ অনেক বেশি, তাই বিভিন্ন সময়ে না খেয়ে থাকতে হয় আমাদের।"
পরিবারের বড় দুই সন্তান নুরুল ইসলাম ও তাজুল ইসলাম বলেন, "আমরা শুধু প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রকারের সাহায্য-সহযোগিতা পাই না। লোকমুখে শুনি বিভিন্ন শিল্পপতি ও ধনী ব্যক্তিরা মানুষকে সাহায্য সহায়তা করে। কিন্তু আমাদের পরিবারের পাশে কেউই দাঁড়ায়নি। আমরা বেঁচে থাকার স্বার্থে সহযোগিতা কামনা করছি।"
প্রতিবন্ধী সন্তানদের মা ফুল বানু জানান, "একটি স্বাভাবিক সন্তান মানুষ করতে এ যুগে খুব কষ্ট করতে হয়। কিন্তু পরপর ছয়টি প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে যে মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণায় ভুগছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। দেড় বছর আগে স্বামী আবু মনুহর মারা যাওয়ার পর থেকে পরিবারের ছয় প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। আমি বিধবা ভাতার কার্ডও পাইনি।"
স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আহমদ, বিল্লাল হোসেন মানিক ও রাজনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরিবারে উপার্জনের কোনো ব্যক্তি না থাকায় অনাহারে-অর্ধাহারে কাটছে তাদের জীবন। প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া অন্য কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না তারা। তাই প্রতিবন্ধী সন্তানদের নিয়ে পরিবারটি চরম দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। অসহায় এই পরিবারটির সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয় স্কুল পড়ুয়া শিশু আয়েশা আক্তার, ছামিরা আক্তার মায়া, ছিদ্রাতুল মুনতাহা জানান, তারা এই প্রতিবন্ধীদের কাছ থেকে কেনাকাটা করেন। দিনে তারা দোকানদারি করেন, একই সাথে রাতে ঘুমান। এখানে পর্যাপ্ত মালামাল থাকলে পরিবারটি আরও বেশি লাভবান হতো।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, "এই পরিবারটির সদস্যরা ইতোমধ্যে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় এসেছে। কেউ বাদ থাকলে তাদেরকেও সুবিধার আওতায় আনা হবে।"
ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া জানান, "আপনার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।"
এমএসএম / এমএসএম

তারাগঞ্জে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়দের মাঝে ঢেউটিন ও চেক বিতরণ

লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বাল্যবিবাহ রোধে মতবিনিময় সভা

চট্টগ্রাম ডিসি পার্কে মৎস্য অবমুক্তকরণ, বৃক্ষরোপণ ও ফ্লাওয়ার জোনের উদ্বোধন

মুচির ধারালো অস্ত্রের কোপে কিডনি হারালেন কৃষকদল নেতা

মিরসরাইয়ে অভিনব কায়দায় প্রতারণার শিকার এক ব্যবসায়ি , থানায় অভিযোগ

ধামইরহাটে ১৭০ তম সান্তাল হুল দিবস পালিত

মেহেরপুরে ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন জেল ও জরিমান আদেশ দিয়েছে আদালত

বড়লেখায় ভিজিএফের ২৩৪ বস্তা চাল মাটিচাপা দিলো পৌর কর্তৃপক্ষ

আদমদীঘি উপজেলা শ্রমিক দলের আংশিক কমিটি ঘোষনা

নবীনগরে পুকুরে ভেসে উঠল অজ্ঞাত শিশুর লাশ

পটুয়াখালীতে দীর্ঘ ২৩ বছর পর জেলা বিএনপির সম্মেলন

অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজা, পালিয়ে থেকেও রক্ষা হয়নি ফকরুলের
