ঢাকা শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫

ঢাকায় নিঃশেষ রাঙ্গাবালীর রিপনসহ পাঁচ সদস্যের পুরো পরিবার, শোকে পাথর বৃদ্ধা মা


সাঈদ ইব্রাহিম (পটুয়াখালী) photo সাঈদ ইব্রাহিম (পটুয়াখালী)
প্রকাশিত: ১৯-৭-২০২৫ দুপুর ২:২০

জীবিকার খোঁজে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর যুগিরহাওলা গ্রামের রিপন প্যাদা। পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো থাকাটাই ছিল তার চোখে বড় স্বপ্ন। বছরতিনেক আগে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন তিনি। ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন, তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন ছোট্ট এক সুখের সংসার। কিন্তু এক ভয়াবহ আগুন সেই সুখের সংসারকে ছাই করে দিয়েছে। এক সপ্তাহে একে একে নিঃশেষ হয়ে গেছে তার পুরো পরিবার।

রিপনের বাড়ি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের যুগিরহাওলা গ্রামে। জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় আসা-যাওয়া করে অনিয়মিতভাবে শ্রমজীবী হিসেবে কাজ করতেন রিপন। ৭ বছর আগে জীবিকার তাগিদে স্থায়ীভাবে ঢাকায় পাড়ি জমান তিনি। ভ্যান চালিয়ে আয়-রোজগার শুরু করেন। তিন বছর আগে স্ত্রী চাঁদনী বেগম এবং দুই ছেলে তামিম (১৬) ও রোকন (১৩)-কে ঢাকায় নিয়ে যান। দেড় বছর আগে তাদের সংসারে আসে ফুটফুটে কন্যা সন্তান আয়েশা।

জানা গেছে, ঢাকার সূত্রাপুরের কাগজি টোলায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। গত ১১ জুলাই রাত আনুমানিক ১টার দিকে সেই বাসায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তখন সবাই ছিলেন গভীর ঘুমে। দগ্ধ হন পরিবারের সবাই— রিপন (৩৫), স্ত্রী চাঁদনী (৩০), দুই ছেলে তামিম ও রোকন এবং দেড় বছরের কন্যা সন্তান আয়েশা। দগ্ধ অবস্থায় সবাইকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় একে একে মৃত্যু হয় পরিবারের পাঁচ সদস্যের।

রিপন-চাঁদনী দম্পতির স্বজনেরা জানায়, গত ১৪ জুলাই প্রথম মারা যায় দেড় বছরের আয়েশা। জুরাইন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। দুইদিন পর ১৬ জুলাই মারা যায় দুই ছেলে তামিম ও রোকন। ছেলেদের মরদেহ নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বাড়ি ফেরার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যান মা চাঁদনী বেগম। ওইদিন দুপুরে তামিম ও রোকনকে বাবার বাড়ি যুগির হাওলা গ্রামে এবং চাঁদনীকে তার বাবার বাড়ি সামুদাবাদ গ্রামে দাফন করা হয়। একইদিন রাতেই খবর আসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পরিবারের শেষ সদস্য রিপন প্যাদা। শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেল তিনটায় জানাজা শেষে তাকে তার দুই ছেলের পাশেই দাফন করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, রিপনের বৃদ্ধা মা জরিনা বেগম ছিলেন গ্রামের বাড়িতে। ছেলের পাঠানো টাকা দিয়েই চলতো সংসার। শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রিপনের গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃত্যুতে গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোকে পাথর হয়ে গেছেন রিপনের মা। চার সন্তানের মধ্যে তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, একমাত্র রিপনই ছিলেন তার শেষ আশ্রয়। এখন সেই ছেলেও নেই। শোকে পাথর এই মায়ের আর কথা বলার শক্তিও নেই। চোখের পানি শুকিয়ে গেলেও, বুকের হাহাকার থেমে নেই। বিলাপ করে তিনি বলছিলেন, "আল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নেই। আমার আর কেউ নাই।"

স্থানীয়রা বলছেন, রিপন খুব পরিশ্রমী ছেলে ছিল। সংসার আর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঢাকায় গিয়েছিল। কিন্তু তার স্বপ্নটা পুড়ে ছাই হয়ে গেল আগুনে। নিহত রিপনের ফুফাতো ভাই সিরাজ হোসেন বলেন, "সূত্রাপুরের কাগজি টোলায় পাঁচতলা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন তারা। রাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডে তারা দগ্ধ হন। পরে একে একে সবাই মারা যান।" আত্মীয়-স্বজনরা বলছেন, কীভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তা এখনও কেউ জানতে পারেননি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম বলেন, "হৃদয়বিদারক একটি মর্মান্তিক ঘটনা। এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। এখন অসহায় রিপনের মায়ের পাশে যেন সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়—এই প্রত্যাশা করছি।"

এমএসএম / এমএসএম

নড়াইল-২ আসনে গণঅধিকার পরিষদের মতবিনিময় ও নির্বাচনী প্রচারণা অনুষ্ঠিত

সিরাজগঞ্জ-৪ আজাদকে প্রার্থী দিলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতবে ধানের শীষ

নোয়াখালীতে সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত উদয় বৃত্তি পরীক্ষা–২০২৫

‎গাইবান্ধা সাঘাটায় ৭ নভেম্বর: বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন

সাটুরিয়ায় ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত

বালিয়াকান্দিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লাক্ষপতি বেকার যুবক রিপন

ভূরুঙ্গামারীতে মায়ের অভিযোগে মাদকাসক্ত ছেলে গ্রেফতার

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জয়পুরহাটে র‍্যালী ও আলোচনা সভা

অভয়নগরে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসা পেলেন এক হাজার মানুষ

মনপুরায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি'র ঐক্যের প্রত্যয়।বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত

মোরেলগঞ্জে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে র‌্যালী ও আলোচনা

রায়পুরে জামায়াত প্রার্থীর মটরসাইকেল শোভাযাত্রা

চন্দনাইশে এলডিপিতে যোগ দিলেন চেম্বার অব কর্মাসের ভাইচ প্রেসিডেন্ট এম মাহাবুব চৌধুরী