ঢাকা বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫

বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্রাম এখনো মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে


মনু মার্মা, রাঙামাটি photo মনু মার্মা, রাঙামাটি
প্রকাশিত: ২০-৮-২০২৫ দুপুর ৩:২৭

ডিজিটাল যুগে এসেও এখনো মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে রাঙামাটি বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নে প্রায় ৫০টি গ্রাম। এই ইউনিয়নে প্রায় ৪০ হাজারও বেশি জনগণ বসবাস করছে। নেই কোন মোবাইল ফোন নেটওর্য়াক। ফলে ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ২১টি। মোবাইল নেটওর্য়াক না থাকায় তারা বর্তমান যুগের সাথে তাল মেলাতে পারছেন না। 
বর্তমানে সব কিছু ডিজিটাল আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে, নাগরিক সেবা অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। যাতে প্রত্যেক নাগরিক খুব সহজে ঘরে বসে সেবা পায়। কিন্তু  এ ইউনিয়নের জনগণ এসব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। 
সরেজমিলে গিয়ে দেখা যায়, দেশের সব চেয়ে বড় ইউনিয়ন এই ফারুয়া ইউনিয়ন, প্রায় ৪০হাজার মানুষ এখানে বসবাস করছে। এখানে জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম কৃষি কাজ। দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষদের দেখলে মনে হওয়ার কোনো অবকাশ নেই যে এরা বাংলাদেশের জনগণ। একেতো দূর্গম আর পশ্চাৎপদ এলাকা, অন্য দিকে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক নেই। ফলে দেখা যায় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে কৃষক তার ফসলি জমির যেকোনো সমস্যায় কৃষি বিশেষজ্ঞ কিংবা কৃষিসম্প্রসারণ কর্মকর্তার পরামর্শ পান না। সেক্ষেত্রে তাকে উপজেলা সদরে আসতে হয়। 
দেশ ডিজিটাল হচ্ছে। মোবাইল ফোন, ইন্টারেনট সেবা এখন পৌছে গেছে ঘরের ঘরে। অথচ কাল্পনিক মনে হলেও বাস্তব যে ফারুয়ার এই ইউনিয়নটিতে মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। বিভিন্ন পরিস্থিতির সময় সারা দেশে প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করেছে। এখানকার শিশুরা ছিল নেটওয়ার্ক থেকে বঞ্চিত।
স্থানীয় অভিভাবকদের দাবী, তাদের সন্তান যেন অত্যন্ত জরুরি নেটওয়ার্কের এই সুবিধাটি পায়। এছাড়া কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও নেই মোবাইল নেটওয়ার্কের সুবিধা। সারা বাংলাদেশের মানুষ যেখানে ঘরে বসে ডিজিটাল সুবিধা পাচ্ছে, সেখানে এসব এলাকার ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনসাধারণ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
স্থানীয়রা জানান, অনেক কষ্টের মধ্যে আছি আমরা। এখানে যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক নাই। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি পাওয়া এগুলো সব মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যেগুলো আমাদের শিক্ষার্থীরা ঠিক মতো পাইও না জানেও না। অসুস্থ রোগীদের জন্য ঠিক মতো চিকিৎসার সু ব্যবস্থা নাই। অভিজ্ঞ ডাক্তারদের যে পরামর্শ নেব নে সুযোগও নাই। বিদ্যুৎ ও মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক না থাকায় আমরা সরকারের নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
তক্তানালা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক শাক্যমুনি তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, নেটওয়ার্কের যতো ডিজিটাল সুযোগ সুবিধা আছে তা আমরা পাচ্ছি না। বিদ্যালয়ের অফিসিয়াল কাজগুলো আমাদের বিলাইছড়ি অথবা পার্শ্ববর্তী উপজেলা রাজস্থলী গিয়ে করতে হয়। যা অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ। আমাদের নেটওয়ার্কের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে একটি মোবাইল টাওয়ারের সুব্যবস্থা করে দিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপকৃত হবে। 
স্থানীয় বাসিন্দা উথোয়াইপ্রু মারমা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে। সেখানে নেটওয়ার্কের মতো একটা প্রযুক্তি নেই! এটা কোন আহামরি কিছু নয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা চাইলে এটা সমাধান করতে পারেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য মনিলতা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, আমার নির্বাচিত এলাকার ১নং, ২নং ও ৩নং ওয়ার্ডে মূল সমস্যা হচ্ছে মোবাইল নেটওয়ার্ক। এখানে জরুরি প্রয়োজনে কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। আমরা এই দূর্ভোগ থেকে মুক্তির জন্য জরুরি প্রয়োজন মোবাইল নেটওয়ার্কের।
স্থানীয় আরেক ইউপি সদস্য আনন্দ তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, মোবাইল নেটওর্য়াক না থাকা আমার এই এলাকায় বড় সমস্যা। অনেক সময় সরকারের মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ওয়ার্ড গুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তাবিহীন মোটর বাইকে যেতে হয়েছে গ্রামে গ্রামে। যেকোন মুহূর্তে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশংকা সবসময় সকলের মধ্যে। তবুও জনগণের জন্য কাজ করে যেতে হচ্ছে। 
বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া থেকে যোগাযোগের পথ বর্তমানে পাশ্বর্বতী উপজেলা রাজস্থলীর সাথে সুব্যবস্থা হওয়ায় এখান যাতায়াতে কিছুটা লাঘব হয়েছে এ এলাকার বাসিন্দাদের। 
ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যাল্লা তঞ্চঙ্গ্যা জানান, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন শতভাগ করার জন্য সরকার থেকে নির্দেশনা আসে কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে আমার এই জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনটি সঠিকভাবে করতে পারছিনা। প্রতিবন্ধীভাতা, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেমেন্ট করা হয়। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে এদের ভাতা ঠিক মতো পায় না। 
তিনি বলেন, এ ইউনিয়নটি অতি দূর্গম হওয়াতে অন্যান্য ইউনিয়ন থেকে উন্নয়নে পিছিয়ে আছে, মোবাইল ফোন নেটওর্য়াক না থাকার কারণে সহজে যোগাযোগ করা যায় না। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে ফারুয়া ইউনিয়নের সেবাদানের লক্ষ্যে সরকার যাতে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক টাওয়ার স্থাপন করে দেয় সেজন্য ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে জোড়দাবী জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, দূর্গম এলাকায় মোবাইল নেটওর্য়াক পৌছে দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি। 
তিনি বলেন, পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ই-লার্নিং ও আধুনিক শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১০০টি বিদ্যালয়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে অর্ন্তবর্তী সরকার। এ উদ্যোগ শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত এক বিব হবে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিক্ষার্থীরা অনলাইনে শহরের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ক্লাসে অংশ নিতে পারবে।
ডিজিটাল যুগের থেকে পিছিয়ে পড়ছে এ এলাকার জনগণ তাই জনজীবনে অতিব গুরুত্বপূর্ণ এই ডিজিটাল সেবা মোবাইল ফোল নেটওর্য়াক চালুর দাবি জানিয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী। 

 

এমএসএম / এমএসএম

রাণীনগরে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ শুরু

আবারো মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রমাণ করলেন মেহেরপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ খায়রুল ইসলাম

আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রাণিসম্পদ খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে

সাটুরিয়ায় প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত

রাঙ্গামাটিতে সিএনজি -কাভারভ‌্যান মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১,আহত ১

৬৪ জেলায় পুলিশ সুপার বদলি - কুমিল্লার নতুন পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান

লাকসামে বিএনপি নেতা হিরু-পারভেজ নিখোঁজের ১২ বছর, স্বজনদের অপেক্ষার প্রহর কাটছে না

কালীগঞ্জে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধন

মাদ্রাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জঙ্গলে নিয়ে মেয়েকে ধর্ষণ: পলাতক বাবা গ্রেপ্তার

বড়লেখায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন

নাচোলে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী- উদ্বোধন

লাগারে লাগা ধান লাগা' স্লোগানে সুনামগঞ্জ-৪ আসন উত্তাল

ভূরুঙ্গামারীতে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ