ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে তৃণমূলে জনপ্রিয়তা বাড়ছে বিএনপির


চট্টগ্রাম অফিস photo চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশিত: ১৬-৯-২০২৫ দুপুর ৩:২৯

চট্টগ্রাম জেলায় বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের নিজ নির্বাচনী এলাকার তৃণমূল মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা বাড়ছে, তারা আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতি ছাড়াও  সামাজিক সাংস্কৃতিক ক্রীড়া আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপস্থিত হচ্ছেন  বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়।
বিগত ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম জেলার ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে, ফটিকছড়তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় জামায়াতের  আ.ন.ম শামশুল ইসলাম, বাঁশাখালীতে জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, চন্দনাইশে এলডিপির কর্ণেল (অবঃ) অলি আহম্মেদ, সন্দ্বীপে বিএনপি কামাল উদ্দীন পাশা ছাড়া  বিএনপির বাকী সব প্রার্থী পরাজিত হওয়ার পর অনেকে তৃণমূল নেতা কর্মী ও নির্বাচনী এলাকার মানুষের সাথে মান অভিমানে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এরমধ্যে সাবেক এমপি মন্ত্রীরা অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দলীয় নেতা কর্মীদের ছাতার মত হয়ে ছাঁয়া দিয়েছিলেন। দলীয় নেতা কর্মীরা জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হলে আইনী সহায়তা এবং পরিবারকে সহতায় দিয়ে পাশে দাড়িয়েছিলেন এরকমও অনেকে আছে। বিগত ১৬ বছরে বিএনপির দুসর্ময়ে জেলা উপজেলা এবং বিএনপির কেন্দ্রীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। চট্টগ্রাম-১৬টি সংসদীয় আসনে বিএনপির অনেক প্রভাবশালী এমপি মন্ত্রী মৃত্যু বরণ করার পর উক্ত আসনে যোগ্য প্রার্থী তৈরী হয়নি বলেও অনেকের মন্তব্য। আসন্ন সংসদ নিবাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির জনপ্রিয়তা এবং মাঠ জরিপে নতুন প্রার্থীদের চেয়ে বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি মন্ত্রীদের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি এবং সর্বসাধারণ মানুষের কাছে তারা গ্রহণ যোগ্য বেলে সরকারি বিভিন্ন জরিপে উঠে আসছে। এরমধ্যে ২০০১ সালে বিএনপি সরকারের সাবেক  বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে বিজয়ী হয়ে আসনটি ছেড়ে দেওয়ার পর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাাম-৮ আসন  থেকে উপনির্বাচনে প্রথমবারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত। একই আসন থেকে ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬, জুন ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয়  সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালিন চট্টগ্রাম-১০, বর্তমান চট্টগ্রাম-১১ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম. আবদুল লতিফের কাছে ২০১৮ সালে পরাজিত হন তিনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্বে ছিলেন, উনার আসনে বিএনপির আর কোন প্রার্থী নেই। চট্টগ্রাম-৬ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যন(স্থগিত) ও সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরী গিয়াস উদ্দিন কাদের  চৌধুরী ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৭ আসন  থেকে জাতীয় পার্টির হয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপিতে  যোগ দিয়ে  ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৬ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই আসনে গোলাম আকবর খোন্দকাওে মাঠে থাকলেও তৃণমূণ নেতা কর্মীরা উনার সাথে নেই।
চট্টগ্রাম-৩ সন্দ্বীপে বিএনপির দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফা কামাল পাশা ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত টানা চারবার ইউপি চেয়ারম্যান। ১৯৯০ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় সংসদ নিবাচিত হন। বর্তমানে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব রয়েছেন।
বর্তমানে চট্টগ্রাম-১৩ আনোয়ারা-কর্ণফুলী সংসদীয় আসনে সরওয়ার জামাল নিজাম বিএনপির প্রার্থী হিসেবে তৎকালিন চট্টগ্রাম-১২  আসন থেকে ফেব্রয়ারি ১৯৯৬, জুন ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াদ আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াত আতাউর রহমান চৌধুরী কায়ছারকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন। সওয়ার জামাল নিজাম চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ও বর্তমান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১২ পটিয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল, চট্টগ্রাম-১১ পটিয়া আসন থেকে ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মত সংসদ সদস্য ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ২য় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।  গাজী  মোহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল ১৯৭৯ সালে ছাত্রদলের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ন-আহবায়ক হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। চট্টগ্রাম দেক্ষিণ জেলা ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের আহবায়ক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ  জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিএনপির দলীয় জরিপ ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার জরিপে সাবেক এমপি মন্ত্রীদের নির্বাচনী এলাকায় বর্তমান যারা সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে যারা আলোচনায় রয়েছে তাদের তুলনায় সাধারণ মানুষের কাছে তাদের গ্রহণ যোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। শিক্ষাগত যোগ্যতা মাঠ পর্যায়ের দক্ষতা রাজনৈতিক কৌশল না বুঝার কারণে ১৬ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিকুল পরিবেশেও যারা বিএনপির রাজনীতি করেছেন তাদের মধ্যেও অনেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর লোভে পড়ে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে খারাপ ব্যবহারের কারণে ১৬ বছরের নির্যাতিত ও পরীক্ষিত এমন কি ২০২৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়নপ্রাপ্তদের পর্যন্ত জনিপ্রয়তা কমে গেছে। চট্টগ্রাম-১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সংসদ সদস্য হওয়ার মত যোগ্য এবং অভিজ্ঞ বিএনপি নেতা সংখ্যা খুব নগন্য। বিএনপি ক্ষমতায় আসনে এমপি মন্ত্রী হওয়ার মত যোগ্য মানুষের সংকট। শুধুমাত্র হাতেগনা কয়েকজন রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানায়। তৃণমূল নেতা কর্মীরা চাই যাকে দিয়ে এলাকার উপকার হবে সৎ দক্ষ ন¤্র ভদ্র শিক্ষিক একজন প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার জন্য গণদাবি তৃণমূলের।
বিএনপিপন্থী সংগঠন ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান বলেন, বিএনপি হচ্ছে মাঠে ময়দানে কর্মী নির্ভর একটি দল, মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের নিয়ন্ত্রন করতে না পারাটা মাঠ পর্যায়ের সমস্যা। ৫ আগস্টের কিছু কিছু মনোনয়ন প্রত্যাশী চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বালির ব্যবসা, হাট বাজার নিয়ন্ত্রসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তূলনামূলকভাবে বিগত বিএনপির সরকারের সাবেক এমপি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এ ধরণের কোন অভিযোগ নেই মানুষ তুলনামুলকভাবে তাদের ভালো মনে করছে,পুরানোদের কোন কারণে বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। হয়তো যেখানো পুরানো প্রার্থী নেই সেখানে নতুন মুখ আসতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লষক অধ্যাপক ওচমান জাহাঙ্গীর বলেন, চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সাবেক এমপি মন্ত্রী যারা ছিল তাদের জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণ যোগ্যতা উক্ত আসনে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের চেয়ে বহুগুন বেশি। সংসদ সদস্য হওয়ার যেসবগুনাবলি থাকা দরকার সেবগুনাবলি নেই। সাবেক এমপিরা আসন্ন সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হলে তারা মন্ত্রী পরিষদের সদস্য হওয়ার মত যোগ্য, অনেক অভিজ্ঞ এমপি মন্ত্রী মৃত্যু বরণ করায় চট্টগ্রামে আসলে বিএনপির রাজনীতিতে যোগ্য প্রার্থীর সংকট রয়েছে। সেখানে পুরাতন কাউকে বাদ দিয়ে নতুনকে মনোনয়ন দিয়ে এমপি বানিয়ে সংসদ নিয়ে সরকার গঠন করবে এরকম ঝুঁকি বিএনপি দলীয়ভাবে নিবে না বলে তিনি জানান।  বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেতে হলে দলীয় ও সামাজিকভাবে গ্রহণ যোগ্য ব্যক্তি হতে হবে, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে, বিগত ১৬ বছরে আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ময়দানে ভূমিকা থাকতে হবে, এসব বিষয় বিবেচনা করে মনোনয়ন দেয়া হবে বলে তিনি জানান।

এমএসএম / এমএসএম

রহমাতুননেছা শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন'র উদ্যেগে চারা বিতরন

সভাপতির পদত্যাগ ও অধ্যক্ষের দূর্নীতির বিচার দাবিতে মানববন্ধন

বাদীর হাতে খুন বিবাদী

বিজয়ী হলে সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হবেঃ শাহজাহান ইসলামাবাদী

চাঁদপুর মেডিকেলে এই প্রথম বৈজ্ঞানিক সম্মেলন ও বিজ্ঞান মেলা

দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে বাঁশখালীতে পুলিশের মতবিনিময়

মান্দায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

অযৌক্তিক ৩ দফা দাবির প্রতিবাদে পটুয়াখালীতে কারিগরি ছাত্র অধিকার পরিষদের 'লাল অঙ্গীকার' কর্মসূচি পালিত

কুড়িগ্রামেনদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

আদমদীঘি আইপিজে পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের খন্ডকালিন শিক্ষক-কর্মচারিদের মানবেতর জীবনযাপন

বেনাপোলে ঘোষণাবর্হিভূত মটরপার্টসের চালান জব্দ

শিবচরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দোষীদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন

হাতিয়ায় জলদস্যুদের আক্রমণে ডুবে যাওয়া ট্রলারের ১৮ জেলে জীবিত উদ্ধার