ঢাকা শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫

প্রশাসনিক সংকটে পাঠদান ব্যহাত, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে


নিজস্ব সংবাদদাতা photo নিজস্ব সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১-১১-২০২৫ বিকাল ৫:২৩

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাথরঘাটা কেএম মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পুরনো এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। নেতৃত্বের অভাবে বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ঢিলেঢালা হয়ে পড়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় দেখা দিচ্ছে নানা সমস্যা, অভিভাবকদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ ও হতাশা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের কয়েক জন শিক্ষকরা জানান, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ দুটো একসঙ্গে শূন্য থাকায় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজগুলো যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। নথি-পরিচালনা থেকে শুরু করে পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা, পাঠদান তদারকি কিংবা শৃঙ্খলা বজায় রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এলোমেলো হয়ে পড়েছে। আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত না ঘটাতে, কিন্তু নেতৃত্বহীন অবস্থায় পুরো স্কুল সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।

পাথরঘাটা কেএম মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টি ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৭০ সালে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পায়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে সরকারিকরণ করা হয়। বিদ্যালয়টিতে ২০২২ সাল থেকে প্রধান শিক্ষক এবং ২০২৩ সাল থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে ইংরেজি, ব্যবসা শিক্ষা, শারীরিক শিক্ষা ও আইসিটি এ চারটি বিষয়ে শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্বে রয়েছেন মো. শহীদুল ইসলাম, তাকে নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। 

মো. শহীদুল ইসলামের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতি, সনদ পুনর্লিখন (ওভার রাইটিং) ও বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) জাকির হোসেন খানকে অবসরে যাওয়ার পর অবসরপ্রাপ্ত টাকা ও ভাতা না দিয়ে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে জাকির হোসেন খান বরগুনা জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ করেছেন, যা তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বর্তমান প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. শহীদুল ইসলামের দাবি সাবেক প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের বিষয়ে তার সাথে সমঝোতা করা হয়েছে।

নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষকদের উপস্থিতি থাকলেও পড়াশোনার মধ্যে একটি শৃঙ্খলা দরকার, যা এখন নেই। ক্লাসে মনোযোগ দেওয়াও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম শৃঙ্খলাহীন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনার চরম ক্ষতি হচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়বে।; ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে এখন আর আগের মতো শিক্ষার পরিবেশ নেই। শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি বেড়েছে, আর কর্তৃপক্ষের তদারকি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এতে করে একসময়ের খ্যাতিমান এই প্রতিষ্ঠানের মান দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে এমনটাই মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।

শিক্ষানুরাগী চৌধুরী মোহাম্মদ মাসুম বলেন, ‘পাথরঘাটা কেএম মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় একসময় এ অঞ্চলের গর্ব ছিল এই প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সমাজ গঠনে রেখেছে অসামান্য ভূমিকা। কিন্তু বর্তমানে সেই ঐতিহ্য যেন ম্লান হয়ে গেছে। পাঠদান ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায় প্রতিষ্ঠানটি হারাচ্ছে তার পুরনো গৌরব। ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ফিরিয়ে আনতে হলে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে, না হলে একদিন এই প্রতিষ্ঠানটির ঐতিহ্য কেবল ইতিহাসের পাতায় সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে।’

পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘সরকারি এই স্কুলটিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় নেতৃত্বের অভাবে বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম আগের মত নেই। অবিলম্বে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে যোগ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে। তা না হলে শিক্ষার মান ক্রমেই নিচে নেমে যাবে, যা শুধু বিদ্যালয় নয়, গোটা অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই, শূন্য পদের তথ্য মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এখনো পদায়ন সম্ভব হয়নি। আশা করি শিঘ্রই নিয়োগ সম্পন্ন হবে এবং শিক্ষক পদায়ন হলে বিদ্যালয়টি ভাল পাঠদানের পরিবেশ ফিরে পাবে।’

এমএসএম / এমএসএম

মাত্র ৯ মাসেই হাফেজ হলেন ১১ বছর বয়সী ইয়াছিন

বিপ্লবের সার্টিফিকেট যদি চুপ্পুর কাছ থেকেই নিতে হয় তবে হাসিনার কাছে কেন নয়? -হাসনাত আব্দুল্লাহ,

ভূরুঙ্গামারীতে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস পালিত

চাঁদপুরে দুই শতাধিক কৃতি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সংবর্ধনা

বাংলাদেশে এখনো গণভোট ও পিআর ব্যবস্থার সময় আসেনি - ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী

জামালপুরে পৃথক অভিযানে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দুই আসামি গ্রেফতার

পটুয়াখালী পায়রার গ্রাসে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে চান্দখালী ও মির্জাগঞ্জ

হাতিয়ায় পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু

বরগুনায় জমি বিরোধের জের ধরে হত্যার হুমকি

প্রশাসনিক সংকটে পাঠদান ব্যহাত, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে

রাজশাহীতে সাংবাদিক অধিকার আদায়ে আরইউজে'র বিক্ষোভ সমাবেশ

ঝড় বৃষ্টিতে গোদাগাড়ীতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি, হতাশ কৃষকরা

গাজীপুরে ৩৯ দফা দাবিতে সাংবাদিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ