পাবনায় শুটকি উৎপাদন শুরু, বিদেশেও হচ্ছে রপ্তানি : লক্ষমাত্রা দেড়'শ মেট্রিক টন
পাবনার শুঁটকির ব্যাপক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে চলনবিল ও গাজনার বিলের পানি শুকানোর পূর্বেই শুঁটকির উৎপাদন শুরু করেছে সুজানগরের মসজিদপাড়া
বালুর চর শুটকি পল্লী"র খামারিরা।
প্রতিদিন এখানে কয়েক টন মাছ রোদে শুকিয়ে তৈরি হয় শুটকি। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত বেড়া-সাঁথিয়া-সুজানগর ও চাটমোহর উপজেলার চলনবিল এলাকার প্রায় তিন হাজার শ্রমিক। কেউ মাছ পরিস্কার করেন, কেউ শুকানোর জায়গা সাজান, আবার কেউ প্যাকেট জাত করেন। এই শুটকি শুধু স্থানীয়দের জীবিকার ভরসা নয়, বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও সম্ভাবনাময় খাত। সুস্বাদু হওয়ায় পাবনার শুটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, বাহরাইন, কুয়েত, ভারত, কাতার, মালয়েশিয়া, ওমান, দুবাই, ইরাক, ইন্দোনেশিয়া সহ অন্তত ২০ দেশে রপ্তানি হচ্ছে এখানকার শুটকি। বিভিন্ন নদী নালা খাল বিল থেকে খলশে,পুঁটি, টেংরা, কই, মাগুর, শিং, নলা, টাকি, শোল , চাঁন্দা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ কিনে এনে ওই সকল চাতালে শুকানো হয়। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, শুটকি খামারিদের প্রণোদনার মাধ্যমে রপ্তানীমুখী এই শিল্পখাতকে আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন অনেকেই । অন্যদিকে জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যানুযায়ী এ বছর জেলায় শুটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ১৫০ টন। তবে চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জালের মাধ্যমে খাল-বিল থেকে দেশীয় মাছ শিকারের কারণে মাছের অভাবে শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা পূরণই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
চাটমোহর উপজেলার চলনবিল এলাকার বোয়াইলমারী ব্রিজ সংলগ্ন চাতাল, সুজানগরের মসজিদপাড়া বালুরচর শুটকি খামার, গাজনাবিল পাড়ে চরদুলাই, সাঁথিয়ার সাতানীর চর, আরাজী গোপিনাথপুর, হুইখালী, কলাগাছী ও রঘুনাথপুর, বেড়া উপজেলার কৈটলার শুটকি ব্যবসায়ীরা অস্থায়ী চাতাল নির্মাণ করে শুটকি উৎপাদন করে থাকে। জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলনবিল ও গাজনাবিল পাড়ে গড়ে উঠেছে দুই শতাধিক অস্থায়ী শুঁটকির চাতাল।
জানা যায়, সুস্বাদু হওয়ায় পাবনার শুঁটকির বেশ চাহিদা রয়েছে দেশ-বিদেশে।স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাবনার শুটকি দেশের সবচেয়ে বড় শুটকি বাজার নীলফামারি জেলার সৈয়দপুরে ও ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা সহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম দুইটি বিল এই অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এখানে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়। তারা সারাবছর এলাকার খাল,বিল ও পুকুর থেকে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। যেকারণে এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে শুঁটকি তৈরির চাতাল।
স্থানীয় শুঁটকি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিলের পানি কমতে থাকলে চলনবিল ও গাজনাবিলের বিভিন্ন স্থানে জেলেদের জালে ধরা পড়ে পুঁটি, খলসে, চেলা, ট্যাংরা, কৈ, মাগুর, শিং, বাতাসি, চিংড়ি, নলা, টাকি, গুচিবাইম, বোয়াল, ফলি, কাতলা, নওলা, শোল, গজারসহ নানা জাতের মাছ। এসব মাছ কিনে চাতালে শুকিয়ে উৎপাদন করা হয় শুঁটকি। পরে এ শুঁটকি পাঠানো হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ও দেশের অভ্যান্তরে বিভিন্ন স্থানে। দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা সরাসরি চাতাল থেকে পছন্দের শুঁটকি কিনে নেন। এসব শুঁটকি মানভেদে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ গ্রেডে বাছাই করা হয়। ‘এ’ গ্রেডের (ভালোমানের) শুঁটকি যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, ওমান, বাহরাইন, দুবাই, ইরাক, কুয়েত, লিবিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি হয়।
এসব দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিদের কাছে চলনবিল ও গাজনার বিলের শুঁটকির কদর রয়েছে। এছাড়া ‘বি’ ও ‘সি’ গ্রেডের শুঁটকি দেশের ভেতরে দিনাজপুর, সৈয়দপুর, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও এসব শুটকির চাতালে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে জেলার প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক।একেকটি চাতালে গড়ে ১০ জন নারী-পুরুষ কাজ করেন। পুরুষ শ্রমিকরা শুটকির চাতালে ও নারী শ্রমিকরা মাছ বাছাইয়ের করেন দিন হাজিরায়।
গাজনার বিল অধ্যুষিত সুজানগর মসজিদপাড়া'র শুঁটকি ব্যবসায়ী আজাদ কমিশনার বলেন,গাজনার বিলের প্রচুর প্রকৃতিক মাছ পাওয়া, স্বল্প মুল্যে সেই মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে শুঁটকি তৈরি করে সৈয়দপুর, ভাঙা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনরকম প্রণোদনা না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন এ শুটকি উদ্দোক্তা।
সুজানগর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো সাইফুল ইসলাম (অতিরিক্ত দায়িত্ব) , জানান সুজানগরের পাশ দিয়েই বৃহত্তর পদ্মা নদী বয়ে চলছে, সুজানগরে'ই গাজনার বিল নামক একটি অনেক বড় বিল রয়েছে, ছোট বড় ষোলটি বিলের সমম্বয়ে এই গাজনার বিলে প্রচুর প্রকৃতিক মাছ পাওয়া যায়, এখন থেকে উৎপাদিত মাছ পাবনা"র চাহিদা মিটিয়েও দেশের বাইরে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা দীপক কুমার পাল বলেন, ইতিমধ্যেই ৩০ জন শুটকি ব্যবসায়ীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, এবছর জেলায় শুটকি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৫০ টন।
এমএসএম / এমএসএম
ছয় লেন প্রকল্পে জীবিকা হারানোর শঙ্কা: দোকানদারদের মানববন্ধন
‘‘সহিংসতা এড়িয়ে সংবাদ সংগ্রহের কৌশল” কর্মশালায় নিরপেক্ষ থাকা ও প্রকৃত সাংবাদিকদের ঐক্যের তাগিদ
কাপ্তাই ১০ আর ই ব্যাটালিয়ন কর্তৃক দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিবগর্কে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান
রৌমারীতে খেলার মাঠ দখল করে আশ্রয়ন প্রকল্পের ভবন নির্মাণের চেষ্টা
মাগুরা ২ আসনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ
প্রবাসির কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদাদাবি, হত্যাচেস্টা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে
দু'পা হারিয়ে কর্মহীন রায়গঞ্জের রফিকুল, সংকটে শিশুপুত্রের পড়াশোনা
পঞ্চগড়ে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
লাকসামে তারেক রহমানের নির্দেশে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি আসনটি পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
মোরেলগঞ্জে বিশ্ব ডায়াবেটিসে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প
অবশেষ একাধিক ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত “সোর্স রেজাউল” গ্রেফতার
শ্রীপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় দুটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা