সিলেটে নারীদের রাজনীতি
সিলেটে জনবান্ধব নারী নেত্রীর নাম আমাতুজ জহুরা রওশন জেবীন রুবা
নারীরা আজ পিছিয়ে নয়। পুরুষের পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক প্রতিটি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সিলেটের আমাতুজ জহুরা রওশন জেবীন রুবা, যিনি রাজনৈতিক ও সমাজসেবায় অনন্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। বিশেষত সিলেট জেলায় গরিব-অসহায়দের চিকিৎসাসেবায় নতুন করে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে অনেক পরিবার। নীরবে অবমূল্যায়িত গরিব-অসহায়দের খোঁজে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন জেবীন রুবা।
শুধু তাই নয়, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অর্থ এনে শত শত অসহায়ের মাঝে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন। রাজনীতির ইতিহাসে বিরল ঘটনা বলে মনে করছেন চিকিৎসার খরচ গ্রহণকারীরা।
রুবা জেবীন সিলেট জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। এছাড়াও অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তিনি সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। সৃজনশীল রাজনীতে তার অবদান অনস্বীকার্য।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংগঠনেরর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন। বিশেষ করে তিনি সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সরকারি শিশু পরিবার বাগবাড়ি, জালালাবাদ অ্যঅসোসিয়েশন, দেওয়ান ফরিদ গাজী স্মৃতি সংসদের সদস্য, রেড ক্রিসেন্ট সিলেট ও সিলেট ডায়াবেটিক সমিতির আজীবন সদস্য হয়ে সিলেটের মানুষের জন্য কাজ করছেন মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে।
রুবা জেবীনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় রয়েছে। তিনি হলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজীর কন্যা। তার বাবা ছিলেন রাজনীতির বাতিঘর, যার কারণে ১৯৪৭ সালে সিলেটের গণভোটে তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনাপর্বে তিনি সিলেটে আন্দোলন সংগঠনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৫০ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিহত করার লক্ষ্যে সূচিত শান্তি আন্দোলনে তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। ১৯৪৭ সালের গণভোট, ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের আইয়ুব বিরোধী গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭৩ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সিলেট সদর আসন থেকে জাতীয় পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশের সংবিধানে প্রথম স্বাক্ষরকারীদের একজন। বঙ্গবন্ধু সরকারের স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে ৪ ও ৫নং সেক্টরে বেসামরিক উপদেষ্টা ছিলেন। এছাড়া দেওয়ান ফরিদ গাজী ছিলেন বৃহত্তর সিলেট আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাকালীন সদস্যের মধ্যে অন্যতম নেতা।
রুবা জেবীন বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতিকে লালন করে জনগণের সেবাকে আমি নিজের সেবা মনে করি। আমার বাবা দেওয়ান ফরিদ গাজী ছিলেন জাতির জনকের ঘনিষ্ঠ সহচর। সে সুবাদে আমি আমার বাবার কাছ থেকে এসব শিক্ষা গ্রহণ করেছি। আমার বাবা গণমানুষের জন্য রাজনীতি করে গেছেন। আমিও সে পথে হাঁটছি।
তিনি আরো বলেন, আমি রাজলনতিক পরিবারের সন্তান। আমার ভাই গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ গাজী হবিগঞ্জ-১ আসনের় সংসদ সদস্য। তিনিও বাবার মতো মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে নিজের পরিবার, সংসার ও রাজনীতির পাশাপাশি আমি অসহায় এবং যারা অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না তাদের খুঁজে খুঁজে বের করে সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।
এ সময় তিনি আরো বলেন, জন্মের পর কথা শেখার সময় থেকেই জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু শুনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেকে উজ্জীবিত করেছি এবং আজও তা লালন করে আসছি। আমার বাবার রাজনীতি ও নির্বাচন দেখে বড় হয়েছি। রাজনীতি আর নির্বাচন যেন আমার রক্তের সাথে মিশে আছে। তাই এই আদর্শ বুকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, সিলেটে যখন বঙ্গবন্ধু সপরিবারে আসেন তখন আমি ছোট ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর গলায় মালা পরাতাম, তখন তিনি আমাকে কোলে নিতেন। এসব সবার ভাগ্যে হয় না। বলা যায়, আমার জীবনের এক অনন্য স্মৃতি এটি।
রুবা জেবীন বলেন, বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি বিশ্বের মানচিত্রে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কারণ, তিনি পিতার মতোই দেশকে এবং দেশের মানুষকে আগলে রেখেছেন।
দেশে নারীক্ষমতায়নের ব্যাপারে রুবা জেবীন বলেন, দেশে নারীরা তাদের যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দলেরও সর্বস্তরেই নারীদের অংশগ্রহণ আছে। ৩০ শতাংশ নারী নেতৃত্ব আছে। তারা তাদের যোগ্যতায় কাজ করছে, এটি সন্তোষজনক। অন্তত নারীর নেতৃত্ব ও ক্ষমতায়নে পাকিস্তান, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। নারী হিসেবে দলের নেতাকর্মীদের আচরণে আমি সন্তুষ্ট। আমি আমার দলে শতভাগ মর্যাদা ও সহযোগিতা পাই। আমাদের দলে নারীর অবস্থান অনেক ভালো। ইতোমধ্যে প্রায় ৩৩ শতাংশ নারীকে নেতৃত্বে জায়গা দিয়েছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি আরো বলন, দেশের সবক্ষেত্রে নারীরা নিজ নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি সবক্ষেত্রেই নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে।নারী উদ্যোক্তাও বাড়ছে দারুণভাবে। আগামী ১০ বছরের মধ্যে এ সেক্টরে নারীরা আরও এগিয়ে যাবেন। সংগ্রাম মানুষকে সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। আমিও সংগ্রামী মানুষ। সংগ্রাম করেই আজকের এ জায়গায় পৌঁছেছি।
প্রসঙ্গত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের ঘনিষ্ঠ সহচর ও সিলেট অঞ্চলের আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সংগঠকদের মূল, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক দেওয়ান ফরিদ গাজীর একমাত্র কন্যা আমাতুজ জহুরা রওশন জেবীন রুবা। তিনি রাজনীতির বাইরেও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িত রেখেছেন। তিনি সিলেট জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন রাস্তাঘাট, মসজিদ-মন্দির, স্কুল-কলেজ ইত্যাদির উন্নয়নমূলক কাজ করছেন। এছাড়া বন্যার সময় জেলা পরিষদের মাধ্যমে সিলেটের বিভিন্ন প্রত্যন্ত ত্রাণ বিতরণ করেছেন। রাজনীতিতে জাতীয় ও স্থানীয় দলীয় প্রোগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালনের পাশাপাশি তিনি বিগত ইউনিয়ন, উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রচারে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
এমএসএম / জামান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জনগনের মৌলিক অধিকার নিয়ে কাজ করছেঃ ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ
“অদম্য নারী’ পুরস্কারপ্রাপ্ত তিন সদস্যকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফেন্ডস এন্ড ফ্যামেলী সমবায় সমিতির সংবর্ধনা
নড়াইলে পাতিয়ার খালে বিষ দিয়ে মাছ ধ্বংসের প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন-বিক্ষোভ মিছিল
নড়াইল ১ আসনে ইসলামি আন্দোলনের গন সমাবেশে প্রসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী
উল্লাপাড়া রামকৃষ্ণপুরে সচিব-প্রশাসকের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ
চাঁদপুরে কাভার্ড ভ্যান চাপায় যুবক নিহত, আহত ২
গাইড বই না কিনলে ফেল করানোর হুমকি
চট্টগ্রাম প্রতিদিন সম্পাদকের বাবার ইন্তেকাল, সাংবাদিক সংগঠনের শোক
মাদকবিরোধী অভিযানে কাউনিয়া থানার সাফল্য: ৪০ পিস ইয়াবাসহ দুইজন আটক
সাজিদের জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল, দাফন সম্পন্ন
তেঁতুলিয়ায় আজও তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রির ঘরে
৩২ ঘণ্টা পর গর্ত থেকে উদ্ধার হওয়া শিশু সাজিদ মারা গেছে