কুবিতে ৮ দপ্তর ঘুরে তুলতে হয় স্নাতকের সাময়িক সনদ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) স্নাতকের সাময়িক সনদ তুলতে ঘুরতে হয় আট দপ্তর। ক্ষেত্রবিশেষে সময় লাগে দুই থেকে তিনদিন। এমন অভিজ্ঞতাই হচ্ছে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে স্নাতকের সনদ তুলতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের। তাদের দাবি, সনদ তোলার প্রক্রিয়া যেন আধুনিক ও বিভাগমুখী হয়।
সনদ উত্তোলনে দপ্তরে দপ্তরে ঘোরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জমা দেয়া এসএসসি ও এইচএসসি'র মার্কশিট উত্তোলন করতে হয় তাদের। এক্ষেত্রে বিশ্ববদ্যালয়ের ওয়েবসাইট বা সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে নির্ধারির ফরম নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। এরপর জনতা ব্যাংকের বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় ২০০ টাকা জমা দিয়ে, টাকা জমার রশিদ ও পূরণকৃত ফরমে বিভাগীয় প্রধানের সুপারিশ ও স্বাক্ষর নিয়ে মার্কশিটের শাখা থেকে সেগুলো উত্তোলন করতে হয়। এরপর শুরু হয় স্নাতকের সনদ সংগ্রহের মূল কাজ। প্রথমে জনতা ব্যাংকের সনদ উত্তোলনের জন্য পাঁচ কপি বিশিষ্ট এক রশিদে বৃত্তান্ত লিখে ৮০০ টাকা জমা দিতে হয়। পরবর্তীতে ওয়েবসাইট থেকে স্নাতকের সনদ উত্তোলন ফরম নিয়ে তা পূরণ করে যেতে হয় বিভাগে। সেখানে ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার সেই রশিদ দেখিয়ে বিভাগীয় প্রধানের সিলমোহরসহ স্বাক্ষর নিতে হয়। ছবিও সত্যায়িত করে নিতে হয়। বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর নেয়া হয়ে গেলে একে একে ওই একই ফরম নিয়ে যেতে হয় অর্থ ও হিসাব দপ্তরে। তাদের স্বাক্ষর শেষে, আইসিটি দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি কার্যালয়ের স্বাক্ষর নিতে হয়।
এরপর শুরু হয় হলসংক্রান্ত কাজ। প্রথমে প্রশাসনিক ভবনের হলের সেকশন অফিস থেকে আবাসিক না অনাবাসিক ছাড়পত্র নিতে হয়। সেটি পেলে শিক্ষার্থীকে তার কাগজপত্র নিয়ে যেতে হয় তার নামে সংযুক্ত আবাসিক হলে। এখানে মূল বিড়ম্বনায় পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। সাধারণত আগের স্বাক্ষর ও অন্যান্য কাজ সারতে পুরো দিন লেগে যায়। বিকেলের দিকে কাগজ নিয়ে হলে গেলে প্রাধ্যক্ষদের সেখানে পাওয়া যায় না। ফলে পরেরদিনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। প্রাধ্যক্ষ কোনো কারণে ছুটিতে, প্রশিক্ষণে বা একাডেমিক কাজে থাকলে সেই অপেক্ষা আরও বাড়ে।
সবশেষে প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর পেলে কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জমা দিতে হয়। সেখানে সাময়িক সনদ ছাপা থাকলে দ্রুত পাওয়া যায়। আর তা না হলে অপেক্ষা করতে হয় আরও দুই থেকে তিনদিন।
এসব ভোগান্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল হাবিব বলেন, 'প্রশাসনিক ভবন থেকে স্নাতকের সনদ সংগ্রহের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিভাগভিত্তিক করে দেওয়া উচিত। রেজাল্ট প্রকাশিত হলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে সনদগুলো বিভাগে পাঠিয়ে দিবে। এবং কোনো শিক্ষার্থীর কোনো দপ্তরে বকেয়া থাকলে সেই তালিকাও বিভাগে পাঠিয়ে দিবে। তাহলে শিক্ষার্থীরা শুধু নির্ধারিত টাকা ব্যাংক ড্রাফট করে বিভাগ থেকে ফরম পূরণ করে বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর নিয়ে স্ব স্ব হলে জমা দিয়ে দিবে। হল থেকে ফরম নিয়ে বিভাগে জমা দিয়ে সনদ সংগ্রহ করবে। তাহলে হয়রানি এবং সময় অনেকটাই কমে যাবে।
তিনি যোগ করেন, দেখা যায় সনদের ফরমে ৮ টার মতো দপ্তরের স্বাক্ষর নিতে নিতে ২-৩ দিন ঘুরাঘুরি করা লাগে এবং সেটা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকে জমা দিলে আরও ২-৩ দিন সময় লাগে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সারোয়ার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকের সনদ উঠানোর জন্য ৮ টা দপ্তর ঘুরতে হয়। যা খুবই ভোগান্তিকর। নির্দিষ্ট দপ্তরে যদি লোক উপস্থিত না থাকে কিংবা ব্যস্ত থাকে তাহলে সনদ উঠানোর প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ হয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে তো একই নিয়ম। এখন পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া পরিবর্তনের জন্য কোনো নির্দেশনা আসেনি আমার কাছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের বলেন, পরীক্ষা বা রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে সনদ লাগে। তখন নির্দিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা একসাথে সনদের জন্য আবেদন করে। এছাড়া বাকি সময় একটা-দুইটা আবেদন আসে। আর এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই আমরা করে আসছি। এ নিয়ম সব জায়গায়ই।
তিনি আরও বলেন, তবে এসব বিষয় আরও দ্রুত করার জন্য আমরা এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরপি) সফটওয়্যার কিনবো। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে আমরা বাজেট পেয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরে ইআরপি (ERP) সফটওয়্যার কেনার বিষয়ে খোঁজ নেয়া হলে উপ-পরিচালক মো. নাছির উদ্দিন বলেন, এটার জন্য কমিটি করা হয়েছে। কমিটির প্রস্তাবনা অনুযায়ী কাজ হবে। আমরা প্রাথমিকভাবে ২০ লক্ষ টাকার বাজেট পেয়েছি এ বিষয়ে। আর প্রতি বছর এরকম বাজেট থাকবে। প্রতি বছরই কিছু কিছু যন্ত্রাংশ কেনা হবে। এটা অনেক ব্যয়বহুল একটি কাজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের সহকারী ডাটাবেজ প্রোগ্রামার মো: মাসুদুল হাসান ইআরপি সফটওয়্যারের ব্যাপারে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক মোঃ তোফায়েল আহমেদকে আহ্বায়ক করে এবং আমাকে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে রেজিস্ট্রার দপ্তর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, অর্থ ও হিসাব দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। প্রথমে এই তিনটা দপ্তরকে এই সফটওয়্যার আওতায় আনা হবে। তারপর প্রতি অর্থ বছরে নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে অন্যান্য দপ্তরগুলোকেও এ সফটওয়্যার আওতায় আনা হবে।
এমএসএম / এমএসএম

পাস্ট ডিবেটিং সোসাইটির নতুন সভাপতি রউফ, সম্পাদক তন্নি

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় পবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থী

রাবিতে শাটডাউন প্রত্যাহার, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের

পিছানো হল চাকসু নির্বাচন

রাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

১৬ অক্টোবর রাকসু নির্বাচন

বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় বাকৃবির ১২ গবেষক

বিশ্বের শীর্ষ দুই শতাংশ গবেষকদের তালিকায় ইবির দুই অধ্যাপক

আমরা ক্রমশ সাম্য থেকে বৈষম্যের দিকে আগুয়ান হচ্ছি: ড. সলিমুল্লাহ খান

চবির নতুন প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী

পবিপ্রবিতে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হল ও সুলতানা রাজিয়া হলের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত

পবিপ্রবিতে আলোচনা সভা ও পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পালন
