রূপগঞ্জে সাধারন বৃত্তি ও উপবৃত্তি‘র টাকা পেতে ভোগান্তি

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা তহবিলের দেয়া মেধাতালিকায় থাকা সাধারন বৃত্তি কিংবা দরিদ্রদের উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর টাকা পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রূপগঞ্জের শতাধিক শিক্ষার্থী। এরআগে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতিপয় কমিশনভোগীদের দূর্ণীতি রূখতে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করেন। ফলে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে মোবাইলে দেয়া হচ্ছে বৃত্তি ও উপবৃত্তির টাকা। কিন্তু নানা জটিলতায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত রয়েছেন এ টাকা থেকে। এদিকে বৃত্তিপ্রাপ্ত আর উপবৃত্তি প্রাপ্তদের মোট সংখ্যা এমনকি হয়রানীর শিকারদের অভিযোগও গ্রহণ করছেন না উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
রূপগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ৩৯টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫টি রয়েছে নন এমপিও। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ৩২ হাজার ৪ শত ৪৪ জন। আবার বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এ উপজেলা মাধ্যমিক শাখার প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১৯টি। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশকয়েকটিতে যুক্ত রয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক এমনকি দ্বাদশ শিক্ষার্থীদের পাঠদান। ফলে এখানে ৫ হাজার ২শত ৬০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। একই উপজেলায় পূর্নাঙ্গ কলেজ রয়েছে ৪টি। যাতে ৭ হাজার ৬শত ৮জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
সরকারী বিধি মোতাবেক, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মনোযোগী করতে ওইসব প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪০ শতাংশ হারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রদেয় শিক্ষা সহায়তা তহবিল থেকে দেয়া হচ্ছে উপবৃত্তি নামে অনুদান। এ ছাড়াও বিশেষ দূর্যোগকালীন প্রদেয় অনুদানও দেয়া হয়েছে ওই তহবিল থেকে। সম্প্রতি শিক্ষকদের মাঝে করোনাকালীন দেয়া ৫ হাজার টাকার অনুদানও দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, বৃত্তি ও উপবৃত্তির টাকা তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে পৌছাঁতোনা সঠিকভাবে। একশ্রেণির শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের একটি সিন্ডিকেট কমিশন কেটে রেখে নামে মাত্র সহায়তা পৌঁছাতো। এমন নানা অভিযোগ পাওয়ার পর সরকার এ সহায়তা পৌঁছাতে নেয় বিশেষ ব্যবস্থা। সে ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী কিংবা তাদের অভিভাবকদের মোবাইল নাম্বারে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে টাকা। এ টাকা গত ২০১৪ সাল থেকে শুরু করে সরকার। তবে শিক্ষার্থীদের সেই টাকা পেতেও নানাভাবে ডিজিটাল অজ্ঞতায় হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। কারন হিসেবে জানা যায়, মোবাইল নাম্বারের রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক একাউন্টে অমিল, ফরম ফিলাপে ত্রুটি, সার্ভার সেবায় ত্রুটি থাকায় এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের পাঁচাইখা মাদরাসার সহকারী শিক্ষক গিয়াসউদ্দিন জানান, তার মাদরাসার ২১জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তির তালিকায় রয়েছে। ওই শিক্ষার্থীদের টাকা পেতে নিয়ম মেনে অনলাইনের নির্ধারিত সার্ভারে আবেদন করি। কিন্তু আবেদনের ৩০দিন পর কেবল ১জনের টাকা পাওয়া যায়। বাকি ২০ জনের কোন হদিস পাইনি। এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা মাদরাসা বোর্ড ও অনলাইন শাখায় যোগাযোগ করতে বলে। এভাবে অনলাইন সেবায় আমরা সরকারী সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছি।
উপজেলার ৭০ নং মাহমুদাবাদ সরকারী স্কুল থেকে নাফিউল আলম নামের এক শিক্ষার্থী ২০১৮ইং সনে বৃত্তি প্রাপ্ত হন। সে বর্তমানে উপজেলার আব্দুল হক ভ্ুঁইয়া স্কুলে অধ্যয়নরত। কিন্তু এতো বছর পার হলেও কেবল ১ বার সে টাকা তুলেছে। বাকি টাকা তুলতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে দৌড়ঝাপ করছেন তার অভিভাবকরা।
একইভাবে তারাবো পৌরসভার হাজী এখলাছউদ্দিন ভুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়, রূপগঞ্জের জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, দাউদপুরের বেলদী মাদরাসা, নুরুন্নেছা স্কুল এন্ড কলেজসহ প্রায় প্রতিটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা শিকার হয়েছেন এমন ভোগান্তির। এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দাবী, অনলাইন পদ্ধতিতে তড়িৎ সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও সাধারন ত্রুটি কিংবা অজ্ঞতার কারনে এমন বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে উপজেলা পর্যায় জরুরী কোন সেবার ব্যবস্থা থাকলে এ হয়রানী দূর হতো মনে করেন তারা।
উপজেলার প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর করিম মাস্টার বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা নিজেরাই এসব পাওয়া নিয়ে অনলাইনে আলাপ আলোচনা করে থাকেন। তাছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন বা আইটি শিক্ষক নিয়োগ থাকলেও সংশ্লিষ্ট সার্ভারে বুঝে ওঠে না। ফলে শিক্ষার্থীদের সহায়তার সুযোগ থাকে না।
কথা হয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. আব্দুল আউয়াল মোল্লার সঙ্গে। তিনি বলেন, উপজেলার প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই এমন হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তারা ফরম ফিলাপের সময় সঠিক তথ্য দিতে ভুল করে। এমন নানা ভুলের কারনে তাদের টাকা আটকে থাকে। তবে ওই টাকা পরবর্তিতে কোথায় যায় তা আমরা জেলা কিংবা উপজেলা পর্যায়ের কেউ জানতে পারি না। এটা উর্ধ্বতন মহলের বিষয়।
একই বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, সরকারী এ শিক্ষা সহায়তা পেতে উপজেলা মাধ্যমিক শাখার তালিকা প্রদান ছাড়া আর কোন কাজ নেই। তবে অনেকেই টাকা না পেয়ে আমাদের ফোনে কিংবা সরাসরি অলিখিতভাবে প্রতিকার চাচ্ছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সার্ভার এইচএসপি বিডি ডট কম বা হারামোনাইজড স্টাইপেন্ড পোগ্রাম নিয়মিত আপডেট থাকায় প্রতিষ্ঠানের আইটি শিক্ষকরাও বুঝে ওঠতে পারে না। ফলে সার্ভার না বুঝে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সহায়তা করতে পারছেন না।
এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে নেই ওই উপজেলা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা সহায়তাভোগীদের মোট সংখ্যা। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে এ তথ্য থাকলেও জানেনা উপজেলা শিক্ষা অফিস। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকউদ্দিন আহমেদ বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে দক্ষতার অভাবে তথ্য পুরনে গড়মিল থাকলে হয়রানী হওয়াই স্বাভাবিক। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ আমাকে মোট উপবৃত্তি ও বৃত্তি প্রাপ্তদের তালিকা না দেয়ার মোট সংখ্যা আমার জানা নেই। পরবর্তিতে এ বিষয়ে সব তথ্য দিতে চিঠি দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরো বলেন, এর আগেও শিক্ষকদের প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছিলো। তারপরও কেন শিক্ষার্থীদের সহযোগীতায় ব্যর্থ হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
এমএসএম / এমএসএম

সাজিদা ট্রেডিংয়ের প্রোপাইটর মোঃ লিয়াকত হোসেন খোকনের বিরুদ্ধে মামলা

শান্তিগঞ্জে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন শীর্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

নাফনদীর মোহনায় ট্রলার ডুবি, ৭জেলে উদ্ধার

বালিয়াকান্দিতে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

বাউফলে চেয়ারম্যান পরিবহন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

আদমদীঘিতে সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

জয়পুরহাটে পৌর হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির কার্যক্রম স্থগিতের দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান

দৌলতপুরে মুখ বাঁধা অবস্থায় নারীর মরদেহ উদ্ধার

কমিউনিটি পুলিশিং সভা ও উদ্ধারকৃত মোবাইল-অর্থ হস্তান্তর: মেহেরপুর জেলা পুলিশের জনবান্ধব উদ্যোগ

ভূরুঙ্গামারীতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবজাতক শিশুদের জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করছে উপজেলা প্রশাসন

পাবনায় ট্রিপল মার্ডারের রায়ে একজনের মৃত্যুদন্ড

গলাচিপা সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে জামায়াতের এমপি পদ প্রার্থীর মত বিনিময় সভা
