থামছেনা রেলের অনিয়ম : দাপুটে আসনেই দুর্নীতিবাজরা

দুর্নীতি দমনে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে নানা পদক্ষেপ নিলেও কিছুতেই যেন থামানো যাচ্ছেনা রেলওয়ের দুর্নীতি। নানা অনিয়মের তদন্তে দোষী প্রমাণিত হয়েও থাকছেন বহালতবিয়তে বা দুর্নীতির মামলায় জেল খেটেও আবার আসীন হয়েছেন স্বপদে, এমন ব্যক্তির সংখ্যাও কম নয়। আবার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন এমন একজন যিনি প্রমাণিত অপরাধী। মাঝেমধ্যে ২-১ জনের হালকা-পাতলা শাস্তি হলেও এটাকে আইওয়াশ হিসেবেই দেখছেন বিশিষ্টজনরা। অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়ায় অনিয়ম বন্ধের সকল প্রচেষ্টাই যেন ভেস্তে যাচ্ছে। তবে দোষীদের ছাড় না দেয়ার বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রীর কঠোর হুঁশিয়ারিকে গতানুগতিকও বলছেন তারা। সঠিক বিচার না হওয়ায় মন্ত্রণালয় থেকে নথি গায়েব করারও দুঃসাহস দেখিয়েছে কেউ কেউ।
জানা যায় বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রথম ঢেউয়ে সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ে দুর্নীতির ঘটনায় রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের ২৯ কর্মকর্তার অনিয়মের সাথে জড়িত থেকে অতিরিক্ত সরকারি অর্থ খরচ করার প্রমান পায় তদন্ত কমিটি। তবে অপরাধের মাত্রা বেশি হওয়ায় ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার আগ্রহ প্রকাশ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু রহস্যজনক কারনে ওই অনিয়মের সাথে জড়িত বেশিরভাগ অফিসারদেরই শাস্তির আওতায় আনা হয়নি।
দুর্নীতির সাথে জড়িত ২১ জনের মধে রয়েছে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মো. মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক বর্তমান অতিঃ মহাপরিচালক (অপাঃ) সরদার সাহাদাত আলী, পুর্বাঞ্চলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (সিসিএস) রুহুল কাদের আজাদ, অতিরিক্ত সিসিএস মো. আনোয়ারুল ইসলাম বর্তমানে ইনভেন্ট্রি কন্ট্রোল সেল এর পরিচালক, মো. মনিরুজ্জামান, এসিওপিএস সাহেব উদ্দিন, মজিবুল হক, এসিসিএম/ আর খায়রুল করিম, বর্তমানে সহকারি ট্রাফিক সুপারিন্টেন্ডেন্ট / টিকেট চেকিং, মো. এমদাদুর রহমান, মো. জাহিদ হাসান, মো. মারুফ, প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ফারজানা উম্মে খানম, গৌতম কুমার কুন্ড, সুকেন্দ্রনাথ হালদার, মহিউদ্দিন আহমেদ, কাজী নাজিম উদ্দিন, ফাতেমা আক্তার, মো. রাহিদ হোসেন ও ফরিদ আহমেদ এর নাম। তবে কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে অভিযুক্ত ২১ কর্মকর্তাকে গোপনে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রেলপথ মন্ত্রীনুরুল ইসলাম সুজন দেশের বাইরে থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি তবে গত ৩০ আগস্ট এক বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি কোনো অনিয়ম সহ্য করি না। করোনা সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রিপোর্টও পেয়েছি। এসব নথিপত্র গায়েব হতে পারে না। আমি বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। নথি গায়েব হলে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’ আর যদি সত্যি সত্যিই কেউ অনিয়মের সাথে জড়িত থাকে তবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসব অনিয়মের বিষয়ে কনজ্যুমার এসোসিয়েশ অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিরি সভাপতি এস এম নাজের হোছাইন বলেন দুর্নীতির লাগাম টানতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী একথা যেমন সত্য, দুর্নীতির মাত্রা দিনকে দিন চরম পর্যায়ে পৌছেছে এটাও তেমন সত্য। আমাদের মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা এবং আমলারা সুন্দর করে বক্তব্য দেন মনে হয় দেশে যেন কোন অনিয়ম নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে যারা দুর্নীতির সাথে জড়িত প্রমোশনের সময় তাদের নামটাই আগে চলে আসে। প্রকৃত অপরাধীর বিচার না হওয়ায তারা দিনের পর দিন আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে প্রত্যেক অপরাধীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে কিন্তু আমাদের এখানে শাস্তির বদলে পুরস্কিৃত করা হয় বলে অপরাধে উৎসাহী হয়ে ওঠে।
এসব বিষয়ে কথা বলতে রেলের মহা পরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারের মোবাইলে কল ও বার্তা দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত বছর করোনা সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয়ে দুর্নীতির জন্য পূর্বাঞ্চল রেলের ২১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে রেলওয়ের তদন্ত কমিটি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করে গত বছরের ৫ নভেম্বর রেলপথ সচিব মো. সেলিম রেজার কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি । প্রকৃত মূল্যর চেয়ে বেশি দরে কেনাকাটার প্রমাণ পেয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিলেন প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয় এপ্রিল-মেজুড়ে কেনাকাটায় ৭৭৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৫শ’ টাকার থার্মোমিটার ১২ হাজার ৩০০ টাকা, ৮ টাকার গ্ল্যাাভস ৩২ টাকায়, ১০ টাকার মিনি সাবান ২৫ টাকায়, ১২০ টাকা কেজির ডিটারজেন্ট ১৮৮ টাকায়, ১২০ টাকা কেজির ব্লিচিং পাউডার ১৯৩ টাকায়, ১৩০ টাকার হেক্সাসল ৩৮৪ টাকায়, ১২০ টাকার প্লাস্টিক চশমা ৩৯৭ টাকায়, ১৫০ থেকে ৪০০ টাকার চীনের তৈরি কেএন-৯৫ মাস্ক ৭২৭ টাকায় এবং ট্রলি ও ফ্লুমিটারসহ প্রতিটি অক্সিজেন সিলিন্ডার কেনা হয় ৪১ হাজার টাকায়।
কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, ওটিএম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হতো এবং প্রতিযোগিতামূলক দর পাওয়া যেত। এক্ষেত্রে তা না করে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে।
এছাড়া সুপারিশে বলা হয়, সিসিএস দফতর ও সিওএস দফতরের ২৯ কর্মকর্তা ক্রয় কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ যেমন সত্য উচ্চমূল্যে কেনাকাটার বিষয়টিও প্রমাণিত। কমিটি ২৯ কর্মকর্তাকে দায়ী করে ভবিষ্যতে তাদের এ ধরনের কেনাকাটার কাজ না দেয়ার সুপারিশ করেছে। কিন্তু অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাতো নেওয়া হয়নি বরং এই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কিছুদিন পরে তদন্ত কমিটির আহবায়ক রেলওয়ের যুগ্ম সচিব ফয়জুর রহমান ফারুকীকে বদলি করা হয়েছে।
এমএসএম / জামান

গাজীপুর-৩ আসনে আলোচনায় বিএনপির ৪ প্রার্থী, একক প্রার্থী নিয়ে নিশ্চিন্ত অন্য দল

আদালতের দোতলা থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা হত্যা মামলার আসামির

রায়পুরে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মানববন্ধন

চট্টগ্রাম-১৩ আসনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পছন্দের শীর্ষে এস এম মামুন মিয়া

চাঁদপুরে কল্যাণ ট্রাস্টের চেক পেয়েছেন ১৯ সাংবাদিক

জুড়ীতে কৃষ্ণনগর বাছিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে উপহার প্রদান

গাছে ঝুলন্ত লাশ, পা মাটিতে-শ্বশুরবাড়ি থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

রূপগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশমুখে গোলচত্বর ও ফ্লাইওভারের দাবিতে মানববন্ধন

ভূরুঙ্গামারীতে নবযোগদানকৃত কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক এর সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে

রাণীশংকৈলে গরু ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৫

হাটহাজারী নাগরিক সেবা নিয়ে বিপাকে পৌরবাসী। তবে কর্তৃপক্ষের দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
