মহাদেবপুরে নামেই ডিজিটাল : তথ্য নেই তথ্য বাতায়নে
নওগাঁর মহাদেবপুরে তথ্য বাতায়নে নেই প্রয়োজনীয় কোন তথ্য। নেই কোন আপডেট। এমনকি কোন কোন দপ্তরের কর্মকর্তার নাম, মোবাইল নাম্বারও নেই। ফলে এই বাতায়নটি প্রকাশের মূল লক্ষ্যই ব্যহত হচ্ছে। বিস্তর টাকা খরচ করে এটি চালু করা হলেও জনসাধারণের কোন কাজেই আসছেনা। এটি আপডেট করার নির্দেশ দেয়া হলেও সরকারী আদেশ পালন করছে না কোন দপ্তর।
মঙ্গলবারে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়নের রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় ক্লিক করলে ওয়েবপোর্টালের উপর একটি নোটিশ আসে ‘তথ্য পাওয়া যায়নি’। সেটি মেনিমাইজ করে পোর্টালে গেলে তথ্য পাওয়া যায় খুবই সামান্য। বেশিরভাগই অসম্পন্ন, কোনটি আবার এক্কেবারেই ভূল। পোর্টালে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনওর নাম, ছবি মোবাইল নাম্বার থাকলেও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের ছবি নেই। এছাড়া দরপত্র, বিজ্ঞাপন, সভার নোটিশ প্রভৃতি ক্যাটাগরি ফাঁকা রয়েছে। পোর্টালে বিভিন্ন কার্যালয়ের লিংকে দেখা যায় দু’একজন কর্মচারির নাম দেয়া থাকলেও হয় তাদের মোবাইল নম্বর নেই, নয়তো তারা এখন আর কর্মরত নেই। এছাড়া বেশিরভাগ কর্মকর্তারই নাম, ফোন নাম্বার দেয়া নেই। কিছু দপ্তরের লিংকে কোন তথ্যই নেই। জনপ্রতিনিধিদের লিংকে এখনো রয়েছে সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মর্জিনা আক্তারের নাম ও ছবি। সবচেয়ে আশ্চয্যের বিষয় এই পোর্টালে উপজেলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের লিংক থাকলেও তাতে শুধু কর্মকর্তার নাম ছাড়া নেই তেমন কিছুই।
পোর্টালে প্রকল্পসমূহের লিংকে কাবিখা, কাবিটা, টিআর, জিআর, এলজিএসপি ও এলজিডির উপলিংকগুলো ফাঁকা রয়েছে। ‘তথ্যকেন্দ্র’ মহাদেবপুর, নওগাঁ নামে পেজে নেই তেমন কোন তথ্য। ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের ঘরে সর্বশেষ ২০১৮ সালের মাত্র কয়েকটি প্রকল্পের তালিকা দেয়া আছে। হাতুড় ইউনিয়নের সর্বশেষ ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেট দেয়া আছে। অন্যান্য ইউনিয়নেরও অবস্থা একই। এক্ষেত্রে দারুণ বেকায়দায় পড়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। অভিযোগ রয়েছে যে, তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তারা তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রাপ্তির আবেদন গ্রহণ করতে চান না। কেউ কেউ আবেদন গ্রহণ করলেও তথ্য প্রদান করেন না। এনিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কয়েকজন কর্মকর্তার বচসা হয়। স্থানীয় সাংবাদিক সোহেল রানা জানান, ‘ওয়েব পোর্টালে তথ্য না পেয়ে তিনি কয়েকটি দপ্তরের নিকট আবেদন করেও তথ্য পাননি। উল্টো কেউ কেউ হুমকি দিয়েছেন। এনিয়ে তিনি থানায় জিডিও করেছেন।’
সদর ইউপি চেয়ারম্যান মুহা: মাহবুবুর রহমান ধলু বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় মাঠে। তথ্য আপডেটের সাথে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের কোন যোগসূত্র নেই।’ উপজেলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সহকারী প্রোগ্রামার শাহীন আরা রুমি জানালেন, ‘প্রত্যেকটি দপ্তরের একজন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তথ্য বাতায়ন নিয়মিত আপডেট করতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা তা মানছেন না।’ তবে নিজের অফিসের পোর্টাল আপডেট নেই কেন তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলনও জানান, ‘উপজেলা পর্যায়ে সহকারী প্রোগ্রামারের মাধ্যমে এবিষয়ে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলা সদরে ও প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে দু’জন করে ডিজিটাল উদ্যোক্তা রয়েছেন। তারা সরকারী অফিস, ডিভাইস, যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বিস্তর টাকা রোজগার করছেন। তাদেরকে নিজ নিজ বিভাগের ও ইউনিয়নের কর্মকান্ড তথ্য বাতায়নে আপডেট করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
এমএসএম / এমএসএম