কুড়ি বছর ধরে টংঘরে চা-পান বিক্রি করে সংসার চালান রহমত আলী
সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ডুমরাই বাঐখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ছোট একটি টং দোকানে বুধবার (১২ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে কথা হয় রহমত আলী রহমের (৩২) সাথে। সারাদিন দোকানে বসে চা, পান বিক্রি করেন তিনি। তার এই অদম্য বাঁচার লড়াই অন্যদের বিস্মিত ও শ্রদ্ধাবনত করে।
জানা গেছে, রায়গঞ্জ উপজেলার বাঐখোলা গ্রামের রহিম আলী বকশোর ছেলে রহমত আলী (রহম)। প্রায় কুড়ি বছর ধরে অদম্য রহমত আলী (রহম) জীবন-জীবিকার লড়াই করছেন। যেদিন দোকান না খোলেন, সেদিন তার আর কোনো আয় হয় না। তাই রোদ কিংবা বৃষ্টি-শীত উপেক্ষা করে প্রতিদিনই রহমেকে দেখা যায় চা বিক্রি করতে।
প্রতিদিন সকালে দোকানে আসেন। বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত হয়। রহমত আলীর তিন ছেল ও স্ত্রীসহ সংসারে সদস্য সংখ্যা পাঁচজন। এই চা বিক্রি করেই কোনোমতে চলে তার সংসার।
রহমত আলী (রহম) বলেন, আমার কাম কইরা (খেটে) সংসার আর জীবন চালাই। ছোটবেলা থেকেই আমি চায়ের দোকান চালাই। প্রায় কুড়ি বছর ধরে চা বিক্রি করার আয় দিয়ে আল্লাহর রহমতে চলছি। আল্লাহ ভরসা। নিজ হাতে নিজেই কাম করে সংসার চালাই।
তিনি আরো বলেন, কাজ করে সংসার চলাতেই আমার গর্ব। কারো কাছে হাত পাততে লজ্জা লাগে। তাই কোনোদিনই মানুষের কাছে হাত পাতিনি। এভাবেই চলে যাচ্ছে দিন। নিজে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত লেখাপড়ট করেছি, তাই ভালো কোনো বড় ধরনের কাজ করতে পারেননি বলে আক্ষেপ ছিল তার। তাই সন্তানরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হোক, এমনটা ভাবেন না তিনি।
এলাকাবাসীর অনেকেই বলেন, আমরা সুস্থ মানুষরাও অনেক সময় অন্যের দয়া, করুণা ও সুদৃষ্টি পেতে চাই। কিন্তু রহমত আলীর (রহম) জীবন সংগ্রাম আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। সে কারো দয়া-করুণা বা সুদৃষ্টি পেতে চায় না। পরিশ্রম করে জীবন ও সংসার চালাচ্ছে।
শাফিন / জামান