ঢাকা শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৫

শ্রীপুরে ফ্রান্স চিলি আর্জেন্টিনার স্ট্রবেরি ফলের চাষ


নাঈম মেহেদী, শ্রীপুর photo নাঈম মেহেদী, শ্রীপুর
প্রকাশিত: ৮-২-২০২২ দুপুর ২:৪৩

ফ্রান্স, চিলি ও আর্জেন্টিনার ফল স্ট্রবেরি এখন বাণিজ্যিকভিত্তিতে গাজীপুরে চাষ হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে স্ট্রবেরি জমিগুলো নানান রং ধারণ করে। সাদা ফুল, হলুদ ফল ও পরিপক্ক পাকা স্ট্রবেরি লাল রং ধারণ করে। বেশি ফলনে অধিক লাভ ও উচ্চ বাজারমূল্যের কারণে এ ফল চাষে মনোযোগী হচ্ছেন চাষিরা। প্রতিদিন জমি থেকে পরিপক্ক ফল সংগ্রহ ও তা বাজারজাতকরণের সুবিধা থাকায় কাঁচা টাকাও গুনছেন তারা।

গাজীপুরের শ্রীপুর ও কাপাসিয়া উপজেলার দুটি গ্রামে স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। শ্রীপুরের বরামা এবং কাপাসিয়ার সিংহশ্রী এলাকায় এই ফলের চাষের বিস্তৃতি ঘটছে। কেউ কেউ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে স্ট্রবেরি চাষ করছেন।

শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের বরামা গ্রামের রুবেল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়ছেন। তিনি জানান, ৬ বছর যাবত স্ট্রবেরি চাষ করেন। অন্যান্যবার ৫ কাঠা জমিতে চাষ করতেন। প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে প্রায় তিনগুণ লাভ হওয়ায় এবার ৭ কাঠা জামিতে চাষ করেন। কিন্তু তার জমিতে রোপণ করা ‘সেঞ্চুয়েশন’ জাতের স্ট্রবেরি চারা গাছে ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। গাছে শেকড় পচা রোগ দেখা দিয়েছে। আক্রান্তের দু-তিন দিনের মধ্যে গাছের পাতা কালো হয়ে যাচ্ছে। ওই সব গাছের অর্ধেক শেকড় পচে গেছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহারের পরও নিরাময় পাচ্ছেন না। ‘সেঞ্চুয়েশন’ জাতের স্ট্রবেরি চারা গাছে পাতা কালো হয়ে যাওয়া ও শেকড় পচা রোগ দেখা দেয়। এ জাতের চারা গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।

বরামা গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের ছেলে সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনি ১১ বছর যাবৎ স্ট্রবেরি চাষ করছেন। প্রতিবেশী মোশারফ হোসেনের স্ট্রবেরি চাষাবাদ দেখে পরের বছর থেকে তিনি নিজেই চাষাবাদ শুরু করেন। প্রথমে রাবি-৩ জাতের স্ট্রবেরি আধা কাঠা জমিতে চাষ করেন। এতে তার ৩৫ হাজার টাকা লাভ হয়। পরের বছর ‘ফেস্টিভাল’ নামের আরও একটি জাতের চাষ করেন। লাভজনক হওায় দ্বিতীয় বছর চার কাঠা জমিতে চাষ করেন। চার কাঠা থেকে উৎপাদিত স্ট্রবেরি সাড়ে তিন লাখ টাকায় বিক্রি করেন। দ্বিতীয় বছরে নিজেই চারা সংরক্ষণ করেন। এভাবে বছরের পর বছর ধরে স্ট্রবেরি চাষ করে যাচ্ছেন। এ বছর সাত কাঠা জমিতে এ চাষ করেছেন।

তিনি জানান, ‘উইন্টারডন’ জাতের স্ট্রবেরি চারা গাছ গাজীপুরের পরিবেশের সাথে বেশ ভালো মেশে। এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি, ফলের রং উজ্জ্বল এবং আগাম উৎপাদন হয়। ‘ফেস্টিভাল’ জাত দেরিতে উৎপাদন হয়। ফলে বৃষ্টি ও বিরূপ আবহাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ‘উইন্টারডন’ জাতের একটি চারা গাছ থেকে মৌসুমে কমপক্ষে দুই কেজি ফল পাওয়া যায়। চার কাঠা জমিতে ৫ হাজার স্ট্রবেরি চারা রোপণ করা যায়।

এক কাঠা জমিতে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি বলেন, কার্ত্তিক মাসে জমিতে রোপন করতে হয়। পৌষের মাঝামাঝি সময় থেকে ফলন আসে। চৈত্র মাস পর্যন্ত ফল বিক্রি করা যায়। গত বছর ২লাখ টাকা খরচ করে ৫কাঠা জমি থেকে ৬ লাখ টাকা বিক্রি উঠেছে। এবার ৭ কাঠা জমি থেকে আরও বেশি বিক্র এবং লাভের প্রত্যাশা রয়েছে।

প্রতিদিন সকালে ১৮ থেকে ২০ কেজি স্ট্রবেরি সংগ্রহ করতে পারেন। পাখি ছাড়া ক্ষতি করার মতো প্রাণি নেই। নিজের সংগৃহীত অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে সার, কীটনাশক প্রয়োগ করেন। কৃষি বিভাগের লোকজন তার চাষ দেখতে আসেন। কিন্তু তাদের পরামর্শ স্ট্রবেরি চাষের জন্য যথাযথ নয়। 

চাষীদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সেঞ্চুয়েশন’ জাতের স্ট্রবেরি চারা গাছের জাত চাষ করে এলাকার অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব নয়। তাই এ জাত বাদ দিয়ে ভিন্ন জাতের স্ট্রবেরি চারা গাছের জাত নিয়ে চাষাবাদের পরামর্শ দিয়েছেন।

এলাকার চাষিরা একসাথে গাড়ীতে করে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর, কারওয়ান বাজারের আড়ত, গাজীপুরের বাইপাস, প্রভৃতি এলাকায় স্ট্রবেরি রপ্তানি ও বিক্রি করেন। তারা জমি থেকে প্রতি কেজি ৭০০ টাকা দরে বিক্রি করেন। 

অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক ইসরাফিল হোসেন বলেন, ১৬ বছর আগে ছেলে মোশারফ হোসেন ময়মনসিংহ থেকে স্ট্রবেরি চাষের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। কিন্তু তখন দেশে স্ট্রবেরির জাত আসেনি। দুই বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক হাজার স্ট্রবেরির চারা সংগ্রহ করেন। ওই বছর রোপণ করে এলাকা ও সারাদেশে স্ট্রবেরি চাষের খবর ছড়িয়ে পড়ে। তার এ চাষ দেখে আশপাশের অনেকেই এ চাষে উৎসাহিত হন। এখন বরামা দক্ষিণপাড়া গ্রামটি স্ট্রবেরি চাষের গ্রাম হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।

চাষি ইমাম উদ্দিন জানান, এবার সেঞ্চুয়েশন জাতের স্ট্রবেরি চারা লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিন লাখ টাকা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার কোনো উপায় নেই।

একই এলাকার প্রতিবেশী চাষি দুদু মিয়াসহ অন্যরা বলেন, স্ট্রবেরি চাষ অনেক লাভজনক। যারা স্ট্রবেরি চাষ করছেন প্রত্যেকেই বছরে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা লাভ করছেন।

কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী এলাকার চাষি মিফাত হোসেন জানান, গত বছর পাঁচেক যাবৎ তিনি স্ট্রবেরি চাষ করছেন। এ চাষ প্রায় চার মাস মেয়াদী কিন্তু লাভজনক। চার মাস পরিশ্রম করলে তিনগুণ লাভ করা সম্ভব। এখন রাজশাহী থেকে স্ট্রবেরির চারা সংগ্রহ করতে হয় না। এলাকায়ও চারা পাওয়া যায়। এক কাঠা জমিতে এক হাজার চারা রোপণ করা যায়। জমিতে রোপণের খরচসহ একেকটি চারার মূল্য দাঁড়ায় ৪০ টাকা।

এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ও শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের দক্ষিণ বরামা গ্রামের বেশকিছু চাষি স্ট্রবেরি চাষ করছেন। দ্রুত পচনশীল হলেও এটি অধিক লাভজনক চাষ। সাধারণত ছত্রাকের আক্রমণ ছাড়া অন্য কোনো ধরণের সমস্যা হয় না। ছত্রাক থেকে বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনমতো ছত্রাকনাশক ব্যবহার করলে রোগবালাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

শাফিন / জামান

কোটালীপাড়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে মাদ্রাসা ছাত্রের আত্মহত্যা

টেকনাফের বাহারছড়ার গহীন পাহাড়ে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযান

লাকসামে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ কাউন্সিল’২৫ অনুষ্ঠিত

শেরপুরে বন্যহাতির তান্ডবে আমন খেত নষ্ট: দিশেহারা কৃষকেরা

মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি" শীর্ষক প্রতিবাদকে সামনে রেখে স্থানীয় গ্রামবাসী ও যুবসমাজের উদ্যোগে আলোচনা

বাউফলে স্প্রেইড হিউম্যানিটির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন,স্বৈরাচারের বিচার দৃশ্যমানকরে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবেঃ এটি এম মাসুম

তানোরে মা ও ছেলেকে কুপিয়ে জখম

সীতাকুণ্ডে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল সাইকেল আরোহীর

ঝামায় ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

মুকসুদপুর প্রেসক্লাব ৩ সদস্যকে ত্রুেস্ট ও পরিচয়পত্র প্রদান

নাগরপুরে পাকুটিয়া ইউনিয়নে বিএনপি নেতাকর্মীদের লিফলেট বিতরণ

পাটগ্রামে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু