ঢাকা বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫

বিদ্যালয়ের আয়ের টাকা যায় কার পেটে?


নাজমুস সাকিব মুন, দেবীগঞ্জ photo নাজমুস সাকিব মুন, দেবীগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২-২-২০২২ বিকাল ৫:০
শিক্ষার আলো পেতে আর নৈতিকতা শিখতে যখন বিদ্যালয়ে পাঠদান নিতে ছুটছে শিক্ষার্থীরা, তখন কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা অনিয়মে রেকর্ড করে চলেছেন। ফলে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে নীতি-নৈতিকতা শেখানো অনেক শিক্ষক উদরপূর্তি করছেন অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে। এমনই অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিভিন্ন সময় দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিদের বিরুদ্ধে। নিয়ম মেনে কমিটি যেমন পরিবর্তন হয়, নিয়ম করে তেমনি লুটপাট হয়।
 
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের নামে ৪ একর জমিতে পুকুর, কালীগঞ্জ বাজারে দুই শতাধিক দোকান এবং বিদ্যালয় মাঠ ইজারা দিয়ে প্রতি বছর মোটা অংকের টাকা আয় হয়। এরমধ্যে পুকুরটি কাগজে কলমে ১০ লাখ টাকায় তিন বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হলেও এর বাইরে তিন লাখ টাকা নেওয়া হয়, প্রতি মাসে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা দোকান ভাড়া আসে। সেই সাথে বিদ্যালয়ের মাঠ এক বছরের জন্য এক লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। এই হিসেবে বছরে বিদ্যালয়ের গড় আয় দাঁড়ায়  প্রায় ১০ লাখ টাকা। অভিযোগ উঠেছে বাৎসরিক বড় ধরণের আয়ের প্রায় পুরো অংশ যায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের পকেটে।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বাবা জানান, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য এখানে সবাই প্রতিযোগিতা করেন। সভাপতি হওয়া মানেই বিদ্যালয়ের আয়ের টাকায় আয়েশ করা। আর শিক্ষকরা বিদ্যালয় তহবিল থেকে টাকা নেন। নয়তো আয়ের টাকা যায় কোথায়। বিদ্যালয়ের আয়ের পরিমাণ অনেক হলেও যৌক্তিক ব্যয়ের পরিমাণ স্বল্প। এরপরও বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে চলে নয়ছয়।
 
বিদ্যালয়ের দোকানের সংখ্যা ও আয়-ব্যয়ের হিসেব জানতে চেয়ে তথ্য অধিকারে আবেদন জমা দেওয়া হয় প্রধান শিক্ষক ধর্ম নারায়ণ রায়ের নিকট। প্রথম থেকেই আয়-ব্যয়ের হিসেব জানাতে টালবাহানা করেন প্রধান শিক্ষক। পরে শ্রেণী কক্ষের সংখ্যা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বেঞ্চের সংখ্যা এবং পাশের হারসহ অপ্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদান করেন এই শিক্ষক।
 
বিদ্যুৎ বিল, তিনজন স্টাফের ভাতা, আপ্যায়ন বিল বাদ দিয়ে প্রতি বছর প্রায় ছয় থেকে সাত লাখ টাকা বিদ্যালয় তহবিলে উদ্বৃত্ত থাকার কথা। কিন্তু বছর শেষে তহবিলে টাকা থাকে মাত্র দুই থেকে তিন লাখ। বিদ্যালয়ের এত আয় থাকলেও প্রায় আড়াই বছর আগে স্থায়ী কমিটি না থাকার পরও নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিদ্যালয়ের গাছ কাটা হয় বেঞ্চ তৈরির কথা বলেন।
 
এর আগে তথ্য চাইতে গেলে ব্যাবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক সুবাস চন্দ্র রায় বলেন, আমি আসার পর বিদ্যালয়ের উন্নয়ন করে যাচ্ছি। নিজের পকেটের টাকা খরচ করে শ্রেণীকক্ষ রঙ করছি, পরে বিদ্যালয় তহবিল থেকে টাকা নিব। বিদ্যালয়ের এত টাকা আয়ের পরও ব্যক্তিগত টাকা কেন খরচ করতে হবে প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।বাৎসরিক এক লাখ টাকা চুক্তিতে বিদ্যালয়ের মাঠ ইজারা দেওয়া হলেও মাঠ সংস্কারে ব্যয় হয় না সেই টাকা। নিয়মিত সাপ্তাহিক হাট বসার কারণে মাঠে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সাপ্তাহিক হাটের উচ্ছিষ্টে বিদ্যালয় মাঠের পরিবেশও আগের মতো নেই।এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়ের তথ্য দেওয়া যাবে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক ধর্ম নারায়ণ রায় বলেন, আমরা সাংবাদিকদের বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের তথ্য দিতে পারি না। আমি শুধু ব্যবস্থাপনা কমিটিকে তথ্য দিতে পারি। তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রদানে বাধ্যবাধকতার কথা জানালেও তিনি তা ভ্রুক্ষেপ করেন নি। উপজেলা কিংবা জেলা শিক্ষা অফিসারকেও এই হিসেব দিতে বাধ্য নন বলেও জানান প্রধান শিক্ষক।
 
অভিযোগ উঠেছে বর্তমান প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিদ্যালয় উন্নয়নের নামে ইচ্ছে মতো টাকা ব্যয় করে যাচ্ছেন। অথচ অবকাঠামোগত দিক দিয়ে বিদ্যালয়টি ভাল অবস্থানে রয়েছে। যদিও প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব নেওয়ার পর বেশ কয়েকটি শ্রেণী কক্ষ নির্মাণের দাবি করেন।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাবেক শিক্ষক বলেছেন, বিদ্যালয়ের আয়ের টাকা থেকে শিক্ষকরাও টাকা পান। ফলে তহবিলে তেমন টাকা উদ্বৃত থাকে না। আর প্রতি বছর লোক দেখানে সংস্কারের নামে শিক্ষক ও কমিটির মধ্যে টাকা ভাগ বাটোয়ারা হয়।এইদিকে অভিযোগ উঠেছে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সলিমুল্লাহর দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা তহবিল তছরুপের সুযোগ পাচ্ছেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের তথ্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রদানের কথা থাকলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে এই সংক্রান্ত কোন তথ্য নেই। ফলে বিদ্যালয়ে লুটপাট নিয়মে পরিণত হয়েছে।সর্বশেষ প্রধান শিক্ষক তথ্য না দেওয়ায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট আপিল আবেদন করা হলে প্রধান শিক্ষকের নিকট তথ্য চেয়ে নোটিশ প্রদানের মাধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছেন মোঃ সলিমুল্লাহ।উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সলিমুল্লাহ বলেন, আমার এখতিয়ার আছে কিন্তু পাওয়ার নেই। দেবীগঞ্জে দায়িত্ব পালনকালে কখনো কোন বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসেব চেয়েছেন কিনা প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।তথ্য প্রাপ্তির আপিলের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নোটিশ দিয়েছি। কিন্তু তারা তথ্য দিচ্ছেন না। আপনি সংবাদ প্রকাশ করেন। আমি সংবাদের কপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
 
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহীন আক্তার বলেন, তথ্য কেন দিল না সেটা বলতে পারছি না। তথ্য লুকানো কোন ভাবে কাম্য নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব।

শাফিন / জামান

কোন লুটেরা, চাঁদাবাজ ও বল প্রয়োগকারীকে ভোট দেবেন না; গণসংযোগে রাশেদ খান

খানসামা টিটিসিতে ধর্মীয় বৈষম্য–নির্যাতনের অভিযোগ: জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিতে তদন্ত আবেদন

কেরুজ ভোটের দাবীতে আন্দোলনের শুরুর দিনেই দুপক্ষের মারামারি

নওগাঁয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ধলু’র উদ্যোগে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল

কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত রাস্তা ৩৪ ফুট প্রশস্ত করার দাবিতে মানববন্ধন

নৈয়াইর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় নিয়োগ অনিয়মের অভিযোগ প্রত্যাহার

রামগঞ্জে যুবদল কর্মীর ছুরিকাঘাতে বিএনপি কর্মী খুন

ঠাকুরগাঁওয়ের ফকিরপাড়া থেকে মটরসাইকেল চুরি : মামলা

কলাবাড়িয়া ইউনিয়নে দিনব্যাপী গণসংযোগে সরব জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কায়সার

কর্ণফুলী'তে হত্যা'সহ একাধিক মামলার এজাহার ভূক্ত আসামি সাজু হাসান গ্রেপ্তার

শীতের আগমনে লেপ তোষকের ব্যস্ততা; পলাশবাড়ীতে জমে উঠেছে ধুনকরদের শীতের বাজার

কাপ্তাই ১০ আর ই ব্যাটালিয়ন কর্তৃক বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান

আত্রাইয়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে সেনা সদস্য নিহত