ঢাকা শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

ভূমি অফিসে আবারো ঘুষ-বাণিজ্যে বেপরোয়া সেই ‘ইসমাত আরা'


সোহানুল হক পারভেজ, তানোর photo সোহানুল হক পারভেজ, তানোর
প্রকাশিত: ২৭-২-২০২২ দুপুর ৩:৪
রাজশাহীর তানোর সদর উপজেলা ভূমি অফিসে ঘুষ-বাণিজ্যে আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন জমা সহকারী পদধারী সেই ‘ইসমাত আরা’। এতে ক্ষুব্ধ শুধু ক্ষতিগ্রস্ত সেবাপ্রার্থীরা নয়, তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে অসন্তোষ ও বিরক্ত খোদ সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। এমন একজন অদক্ষ নারী কর্মচারী দ্বারা হয়রানি ও বিড়ম্বনার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা অবিলম্বে তাকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
 
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সম্প্রতি বছরখানেক আগে জমা সহকারী পদে তানোর উপজেলা সদর ভূমি অফিসে যোগদান করেন ‘ইসমাত আরা’। এর আগেও একই পদে প্রায় ৪ বছর এই অফিসে ছিলেন তিনি। ওই সময়ে অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্নীতি আর মোটা অঙ্কের ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। তবে কিছুদিন না যেতেই ভূমি অফিসে তার নিযুক্ত দালাল ইয়াকুব হাজীর (৩০) মাধ্যমে উপর মহলে তদবির করে আবারো একই পদে যোগদান করেন তিনি।
 
এর আগে ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট তানোর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দালালির দায়ে ওই ‍ইয়াকুব হাজীকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন তদকালিন ইউএনও সুশান্ত কুমার মাহাতো। এছাড়াও ইয়াকুব হাজীর জিওল-চাঁদপুর মোড়স্থ চেম্বার পরিদর্শন করে ভূমি অফিসের বিপুল পরিমাণ খারিজ ফাইলপত্র ও ডিসিআর বই জব্দ করে চেম্বার সিলগালা করে দেয়া হয়। তার বাড়ি তানোর পৌর এলাকার জিওল গ্রামে। পিতার নাম মো. ইছাহাক হাজী।
 
এবার তিনি এই অফিসে যোগদান করে সেবাপ্রার্থীর কাছ থেকে দাপটের সঙ্গে আদায় করছেন উৎকোচের টাকা। কেউ তার দাবিকৃত উৎকোচের টাকা দিতে না চাইলে কাজ তো দূরের কথা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য আর অপমান-অপদস্থ করে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। তবে তার এমন আচরণের প্রতিবাদ করলে দম্ভোক্তি করে বলছেন, আমার ভাই মন্ত্রণালয়ের সচিব, এসিল্যান্ড তো দূরের কথা; ডিসি পর্যন্ত আমাকে কিছু বলতে সাহস পায় না।
 
এমনই অভিযোগ করেন তানোর পৌর এলাকার সিন্দুকাই মহল্লার বাসিন্দা সেলিম রেজা। তিনি সকালের সময়কে জানান, তার এক নিকটাত্মীয় নূরজাহান বিবি তানোর মৌজায় আরএস ৫৩৭ নম্বর খতিয়ানের ২৭৯ নম্বর দাগে ১০ কাঠা জমি ক্রয় করেন। ওই জমি খাজনা-খারিজের জন্য ভূমি অফিসে গিয়ে দেখেন হাফ শতক বা .০০৫০ একর জমি হোল্ডিংয়ে নেই। তৎক্ষণাৎ তিনি তহসিলদারের পরামর্শে প্রতিনিধি হিসেবে গত ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর মিস কেসের মাধ্যমে তা বাতিলের জন্য আবেদন করেন। যার মিস কেস নম্বর ১০৬/২০-২১। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তানোর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা লুৎফর রহমান গত বছরের ২৭ জানুয়ারি সরেজমিন তদন্তপূর্বক আংশিক বাতিলের প্রস্তাব এসিল্যান্ড বরাবর দাখিল করেন।
 
কিন্তু ওই প্রস্তাব দাখিলের পর এক বছরেও এসিল্যান্ডের নিকট ওই ফাইল উপস্থাপন করা হয়নি। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্দি ফাইলের খোঁজ নেন সেলিম রেজা। এ সময় জমা সহকারী ‘ইসমাত আরা’ ফাইল বের করার জন্য ৫০০ টাকা দাবি করেন। টাকা দেয়া হলে তিনি জানান, এইমাত্র ফাইল ওকে করা হলো। এখন স্যার ডেট দেবেন। আগামী সপ্তাহে আসেন বলে তাকে জানানো হয়।
 
আরেক ভুক্তভোগী তানোর পৌর এলাকার বড়শো মহল্লার বাসিন্দা আলিমুদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, রায়তান বড়শো মৌজায় ১২০৬ নম্বর দাগে তাঁর মাতার দেয়া .০৫০০ একর বা ৫ শতক বাড়ী আদালতের রায় পাবার পর খারিজ-খাজনার জন্য তহসিল অফিসে গিয়ে দেখি হোল্ডিংয়ে জমি নেই। তখন তিনি ওই খারিজ বাতিলের জন্য গত বছরের ১৮ অক্টোবর মিস কেস করেন। যার নম্বর ২৫/২০২১।
 
এহেন পরিপ্রেক্ষিতে তানোর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা গত বছরের ২৫ নভেম্বর সরজমিন তদন্তপূর্বক ৩৩৭/৯৮-৯৯ নম্বর খারিজ কেস বাতিলের প্রস্তাব এসিল্যান্ড বরাবর দাখিল করেন। কিন্তু জমাসহকারী ‘ইসমাত আরা’ শুনানির ডেট দেবার নামে ১ হাজার টাকা আলিমুদ্দিনের নিকট আদায় করেন। এমন প্রতিবেদন দেবার ৩ মাসেও এসিল্যান্ডের নিকট আজও ওই ফাইল উপস্থাপন করা হয়নি।
 
অপরদিকে, সম্প্রতি তানোর পৌর এলাকার জিওল মহল্লার বাসিন্দা সানোয়ার হোসেনকে ১৯ জানুয়ারী ডিসিআর ও প্রস্তাবিত খতিয়ানের খসড়া দেয়া হয়। কিন্তু অনলাইনে ডিসিআর ফি প্রদান করা হয়নি। এমন অজুহাতে প্রস্তাবিত খতিয়ান প্রদানের নামে ৫০০ টাকা নেন জমাসহকারী ‘ইসমাত আরা’। তবে, ওই অফিসে নাজির পদে দায়িত্বরত সার্টিফিকেট সহকারী শাহিন আকতার ডিসিআর প্রদানের ৩৭ দিনেও তাকে প্রস্তাবিত খতিয়ান প্রদান করা হয়নি। একারণে তিনি ভূমি অফিসে দিনের পর দিন ঘুরে হয়রানি হচ্ছেন। অবিলম্বে এমন বেপরোয়া ঘুষখোর জমাসহকারী পদধারী ‘ইসমাত আরা’ নামের কর্মচারীকে শাস্তিমূলক অপসারণের জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রতি জুরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনিসহ এঅঞ্চলের হাজারও মানুষ।
 
এব্যাপারে তানোর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্বীকৃতি প্রামানিকের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি। অভিযুক্ত তানোর সদর উপজেলা ভূমি অফিসের জমাসহকারী পদধারী কর্মচারী ইসমাত আরা বলেন, আপনারা সাংবাদিক কি আর লিখবেন। ছোট খাটো নয়, বড় পত্রিকায় লিখেন তো আমাকে বদলি করতে করেন কি না? তিনি আরও বলেন, এসিল্যান্ড তো দূরের কথা ডিসি স্যার পর্যন্ত আমাকে কিছু বলতে সাহস পাই না। তিনি জানেন আমার ভাই মন্ত্রণালয়ের সচিব বলে দম্ভোক্তি করেন তিনি।
 
এবিষয়ে রাজশাহী অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ শরিফুল হক সকালের সময়কে বলেন, খারিজ বা নামজারি ও মিস কেসের নামে সরকারি ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা সম্পূর্ণ বে-আইনি। এটা ঘুষ-বাণিজ্যের অপরাধ। কোন সেবাপ্রার্থী তানোর ভূমি অফিসে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হয়ে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানান এই কর্মকর্তা।

এমএসএম / জামান

জাঁকজমক ও আনন্দঘন পরিবেশে পাবনা জেলার ১৯৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

নওগাঁয় হারিয়েছে প্যাডেল চালিত রিকশাঃ ভরসা এখন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা

বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ন মিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

রাজস্থলীতে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে বাস খাদে, আহত ১

আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী জিহাদ হোসেন এইচএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন

আদমদীঘিতে বিএনপির কর্মিসভা অনুষ্ঠিত

বাউফলের জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়ম: ইউপি সচিবকে শোকজ

লাকসাম ও মনোহরগঞ্জে কোন বৈষম্য রাখবো নাঃ আবুল কালাম

হাটহাজারীতে সরকারি পথে সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা, চরম দুর্ভোগে কয়েক হাজার মানুষ

বালিয়াকান্দিতে ৩১ দফা বাস্তবায়নে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ছুটির দিনেও চড়া মোহনগঞ্জে সবজির বাজার

রায়গঞ্জে ব্যারিস্টার বাতেন : ‘৩১ দফাই শান্তি ও সমৃদ্ধির রূপরেখা’

নরসিংদীতে সবজির বাজারে অস্থিরতা