বরই চাষে বাগানীরা লাভবান হলেও বিপাকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা
নওগাঁর পত্নীতলায় বরই চাষে বাগানিরা লাভবান হলেও মৌসুমের শেষ সময়ে বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে খ্যাত জেলার সীমান্তবর্তী এ জেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ বরই চাষ হয়েছে। ফলে বহুগুণে বেড়েছে উৎপাদনের মাত্রা। জমির মালিক কাউকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জমি আম বাগান তৈরিতে লিজ/ইজারা দিয়েছেন। ওই ইজারাদারতের বেশিরভাগই বরই গাছে মুকুল এলেই মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছে ফল বিক্রি করার চুক্তি করে ফেলেন। এরমধ্যে অনেকেই আবার মৌসুমের প্রথম দিকে চড়া মূল্য হওয়ায় নিজেই শ্রমিক লাগিয়ে ফল পেড়ে বাজারে বিক্রি করেন, যা এবারও হয়েছে।
এবার মৌসুমের প্রথম দিকে ১৫০-১৬০ টাকা কেজি দরে বরই বিক্রি হয়েছে। কিছুদিন পর ওই ইজারাদার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছে পুরো বাগানের ফলের আনুমানিক মূল্য ধরে বিক্রি করেন। আর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা তা ক্রয় করে শ্রমিক লাগিয়ে অথবা নিজে ও পরিবারের লোকজন নিয়ে বরই পেড়ে তা বাজারে তোলেন।
শুক্রবার (১১ মার্চ) পত্নীতলা সদর নজিপুর পৌরসভায় বাজারে সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতি কেজি আপেল কুল, বল সুন্দরী বিক্রি হচ্ছে নামমাত্র মূল্য ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকায়। টক জাতীয় শুটকি বানানোর বরই বিক্রি হচ্ছে ৭-১০ টাকায়।
পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডেও মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী সাইদুর রহমানের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি এবার ৩৩ শতক মাপে ৫ বিঘা বরই বাগান কিনেছেন এক লাখ টাকায়। এরমধ্যে বাগানের তিন ভাগের এক ভাগ বরই তিনি বিক্রি করেছেন, যা থেকে তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকা পেয়েছেন। আরো দুই ভাগ বরই গাছেই রয়েছে। তা থেকে তিনি আশা করছেন আরো এক লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু ১৫০-১৬০ টাকা কেজি দরে প্রথম দিকে হলেও নিত্যপণ্য বাজারের ঊর্ধ্বগতি আর বরই বাজারে ধস নিয়ে তিনি চিন্তিত।
তিনি আরো জানান, অন্যান্যবার নিজ এলাকা ছাড়া পাশের এলাকা ও শহরে বরই বিক্রি করা গেলেও এবার বাজারের এমন ধসে পরিবহন খরচই সামলানো যাচ্ছে না। একরকম বাধ্য হয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বরই নিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। দোকানদার অনেক কিন্তু ক্রেতা নগন্য। নিজে ও পরিবারের লোকজনদের নিয়েই বাগান থেকে ফল তুলে বাজারে আনতে হচ্ছে। অন্যদিকে রাতেও দেখভাল করতে হয় বাগানের। তাই বাগানিরা লাভবান হলেও অধিক মুনাফার আশায় বাগান ক্রয় করে বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
জামান / জামান