আত্মহত্যাই কি সকল সমস্যার সমাধান??
বর্তমানে আত্মহত্যা যেন একটি সমস্যা সমাধানের উপায় হয়ে দাড়িয়েছে।চলতি মাসে অনেক গুলো আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে।সবচেয়ে অবাক করা বিষয় ক্লাস সিক্স এ পড়ুয়া একটি মেয়ে তার স্কুল এর বেতন না দেওয়ার কারণে অভিমান করে আত্মহত্যা করে ।অপরদিকে এক বাবা তার সন্তানের পড়ালেখার খরচ চালাতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।প্রেম ভালোবাসা ভেঙে যাওয়া এবং দাম্পত্য কলহের জন্য আত্মহত্যার ঘটনা অহরহ ঘটছে। এক দশক আগেও এতো পরিমান আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতো না যেভাবে এখন বৃদ্ধি পাচ্ছে।আসলে কোনো ব্যক্তি কোনো একটি নির্দিষ্ট কারণে আত্মহত্যা করে না। অনেকগুলো কারণ থাকে এর পেছনে।
আমরা জাতিগত ভাবেই আবেগপ্রবণ সবদিক দিয়ে ।আমাদের আবেগ ভালোবাসা দিয়ে সম্পর্কের চাওয়া পাওয়া পূর্ণতার অভাবের কারণেই মানসিকভাবে হতাশার সৃস্টি হয়।এই হতাশার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছালে আমরা ভুলে করে ফেলি ।আর সেই ভুলই জীবনের কাল হয়ে দাড়ায় ।আত্মহত্যা কি সকল সমস্যার সমাধান ? অবশ্যই না ,আমাদের জানতে হবে আত্মহত্যার প্রবণতার মনোভাব সৃষ্টি হওয়ার পেছনের কারণগুলো।গবেষণায় দেখা গেছে আত্মহত্যার কারণ গুলোর মধ্যে হতাশা ,অতিরিক্ত আবেগ,মাদকাসক্তি,সামান্য বিষয়ে সিরিয়াস হয়ে যাওয়া, চাহিদার পূরণের অভাব প্রভৃতি কারণ গুলোর কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে এবং তখনি একজন মানুষ আত্মহত্যার মাদ্ধমে মৃত্যুকেই সহজ সমাধান মনে করে ।
এ থেকে পরিত্রাণের উপায় সম্পর্কে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে ।
যেমন:
১ বাস্তবতা মেনে নিতে হবে তা যাই হোকনা কেন।
২ নিজের ভিতর কখনো দুঃখ গোপন রাখবেন না তাতে কষ্টের পরিমান বাড়বে তাই সব সময় যাদের পছন্দ করেন তাদের সাথে শেয়ার করে হালকা হবেন।
৩ যেকোনো পরিস্থিতে হাসিখুশি থাকুন দেখবেন মন এমনিতে ভালো হয়ে যাবে
৪ নিয়মিত ব্যায়াম আপনার মনকে প্রফুল্ল রাখবে
৫ সবসময় ইতিবাচক ভাবে চিন্তা করার চেষ্টা করবেন
৬ ইবাদাত বন্দেগী করার চেষ্টা করুন তাহলে মনের কলুষিত কালিমা দরীভ্রুত হবে এবং শান্তি কাজ করবে।
৭ পরিবারকে ভালোবাসুন একবার ভাবুন এই পরিবার আপনাকে কতটা ভালোবাসে এবং আপনার কোনো ক্ষতি হলে তারা কতটা দুঃখ পাবে।
৮শিল্প সাহিত্যের চর্চা করুন তাহলে একাকিত্ব দূর হয়ে যাবে ।
৯ মানুষের সাথে মিশতে শিখুন দেখুন আপনার চাইতেও অনেকে শত কষ্টের মাঝে থেকেও হাসিখুশিভাবে জীবনযাপন করছে।
১০প্রতিদিন একবার এই স্লোগানটি মনে মনে বলুন ‘নিজে বাঁচবো এবং অপরকে বাঁচতে সাহায্য করবো’।
এই সব দিক গুলো চর্চার মাদ্ধমে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো সম্ভব ۔প্রতিটি পরিবারকেই সচেতন থাকতে হবে তাদের সন্তান/ভাইবোনের ব্যাপারে۔ এমনকি স্বামী/স্ত্রীর সমস্যা হলে নিয়মিত কাউন্সেলিং নিতে হবে বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে۔ একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন আমরা যেমন স্বাস্থ ঠিক রাখার জন্য ভালো খাদ্যাভাস এ অভ্যস্ত থাকার চেষ্টা করি তেমনি মানসিক সাস্থ ঠিক রাখার জন্য যেন চেষ্টার ত্রুটি না করি ۔তাহলেই হয়তো আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং আত্মহত্যার মতো মহাপাপ থেকে নিজেদের বিরত রাখতে পারবো
এমএসএম / এমএসএম